সম্পর্কে টানাপোড়েন, কোন্নগরে ভরসন্ধ্যায় বাড়িতে ঢুকে স্ত্রীকে গুলি করে খুন স্বামীর
২০১৪ সালে রেজিস্ট্রি করেন দুজনে। সম্প্রতি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী-কে গুলি করে খুন করল স্বামী। একইসঙ্গে শ্বশুর ও শাশুড়িকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলীর কোন্নগরে। মৃতার নাম শুভলগ্না চক্রবর্তী। অভিযুক্ত স্বামী মহম্মদ সুলতানকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে অনুমান, সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরেই স্ত্রী শুভলগ্নাকে খুন করেছে সুলতান।
কোন্নগরের অলিম্পিক মাঠ সংলগ্ন এলাকায় বাবা তুষার চক্রবর্তী ও মা শুভ্রাদেবীর সঙ্গে থাকতেন শুভলগ্না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাবা-মায়ের সঙ্গে কাছেই কাকার বাড়িতে গিয়েছিলেন শুভলগ্না। অভিযোগ, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁরা যখন বাড়ি ফেরেন, তখন তাঁদের পিছন পিছনই ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে সুলতান। ঘরে ঢুকেই দরজা আটকে দেয়। তারপরই পিস্তল নিয়ে স্ত্রী শুভলগ্নার উপর চড়াও হয় সুলতান। পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে শুভলগ্নাকে গুলি করে সে। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন শুভলগ্নার বাবা-মাও। পিস্তলের বাঁট দিয়ে তাঁদের মাথায় মারে অভিযুক্ত। তারপরই সেখান থেকে চম্পট দেয় সুলতান।
তুষারবাবুদের চিত্কারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই তুষারবাবুদের ৩ জনকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসাপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই গুলিবিদ্ধ শুভলগ্নাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। অন্যদিকে, গুরুতর জখম হয়েছেন তুষারবাবু ও শুভ্রাদেবীও। তাঁদের মাথায় আঘাত লেগেছে।
জানা গেছে, শুভলগ্নার সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল পড়শি যুবক সুলতানের। ২০১৪ সালে দুজনে রেজিস্ট্রিও করেন। কিন্তু, মেয়ের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি শুভলগ্নার বাবা, মা। তবুও বাবা, মায়ের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করেই প্রথমদিকে সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছিলেন শুভলগ্না। কিন্তু, কিছুদিন পর থেকে সুলতানের সঙ্গে শুভলগ্নার সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। বাবা, মায়ের কথায় তখন সুলতানের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে শুরু করেন শুভলগ্না। সুলতানকে এড়িয়ে চলতে থাকেন তিনি। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন শুভলগ্না।
আরও পড়ুন, কোন্নগর পুরসভার গেস্টহাউজে দেহ ব্যবসা, সিআইডি তল্লাশিতে ধৃত ৮ মহিলা-৪ পুরুষ
অভিযোগ, সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হতেই বেশ কয়েকবার প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করে সুলতান। এই ঘটনায় সুলতানকে গ্রেফতারও করা হয় তখন। পরে স্থানীয় বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের হস্তক্ষেপে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নাছোড় সুলতান কিছুতেই শুভলগ্নার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাজি হয় না। এরপরই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেমিকার বাড়িতে ঢুকে তাঁর উপর চড়াও হয় সুলতান। শুভলগ্নার বাবা তুষার চক্রবর্তী কোন্নগর পুরসভার একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।