চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল ইসরোর কন্ট্রোলরুম
চন্দ্রযান-২-এর উত্ক্ষেপণের পর থেকে এটি ছিল অন্যতম জটিল প্রক্রিয়া।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার সকালে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে চন্দ্রযান-২। কক্ষপথে প্রবেশের সেই রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ কে শিভান। চাঁদের কক্ষপথে স্থাপনের জটিল প্রক্রিয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে কিছুটা হালকা মেজাজে ডঃ শিভান।
চন্দ্রযান-২-এর উত্ক্ষেপণের পর থেকে এটি ছিল অন্যতম জটিল প্রক্রিয়া। পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে ইন্টার লুনার ইন্সার্সানের মাধ্যমে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করল চন্দ্রযান-২। চলতি মাসের ১৪ তারিখ পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদের কক্ষপথের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। প্রায় ৬ দিন ব্যাপি ট্রান্স লুনার ইন্সার্সানের শেষ ৩০ মিনিট ছিল সবথেকে কঠিন।
জটিল ম্যানুভারের শেষ ৩০ মিনিটে কেমন ছিল ইসরোর কন্ট্রোলরুমের পরিবেশ? এক কথায় সেই মুহূর্তকে 'রুদ্ধশ্বাস' বলে ব্যাখ্যা করলেন ডঃ শিভান। তিনি বললেন, "ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে সমান তালে বাড়ছিল উত্কন্ঠা। তবে শেষমেষ চন্দ্রযান-২-কে চাঁদের কক্ষপথে সফলভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয়।" চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে যাওয়ার পর হাঁফ ছাড়েন ইসরোর কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছতেই আনন্দে হাততালি দিয়ে ওঠেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। গুরুগম্ভীর কন্ট্রোল রুমে বয়ে যায় খুশির বন্যা। প্রায় ২০০ জন বিজ্ঞানীর করতালির শব্দে ভরে ওঠে ইসরোর কন্ট্রোল রুম।
চন্দ্রযান-২ অভিযানের অন্যতম জটিল প্রক্রিয়া ছিল কক্ষপথের পরিবর্তন। ১৪ তারিখ থেকে ইন্সার্সানের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট দিকে নির্দিষ্ট গতিবেগে এগিয়েছে চন্দ্রযান-২। চাঁদের মহাকর্ষ শক্তির দ্বারা আকর্ষিত হলে নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে পারবে চন্দ্রযান-২। তাই, চাঁদের কক্ষপথের নির্দিষ্ট দূরত্বে পৌঁছনোর পর ধীরে ধীরে কমানো হয়েছে যানের গতিবেগ। সেই উদ্দেশ্যে বিপরীতমুখী বেগ সৃষ্টি করে গতি কমানো হয়েছে চন্দ্রযান-২-এর। সেটি করতে চন্দ্রযান-২-এর মুখ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে নিতে হয়েছে। এর পর ইঞ্জিনের থ্রাস্টার জ্বালিয়ে বিপরীতমুখী শক্তি তৈরী করে কমানো হয়েছে গতি। ফলে, শেষ ৩০ মিনিটে মুখ ঘুরিয়ে গতি কমানো এবং চাঁদের দ্বারা আকর্ষিত হওয়ার আদর্শ কক্ষপথে পৌঁছনোর প্রক্রিয়াটি ছিল অধিক জটিল।
আরও পড়ুন: চন্দ্রাভিযানে আরও একধাপ এগোল ইসরো; চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছল চন্দ্রযান ২
সেই জটিল প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় খুশি ইসরোর বিজ্ঞানীরা। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক হলে ৭ই সেপ্টেম্বর চাঁদে ল্যান্ড করবে ল্যান্ডার বিক্রম।
এদিন ডঃ শিভান বলেন, "এই নিয়ে দ্বিতীয় বার চাঁদের কাছে পৌঁছে গেলাম আমরা।" গগনযান মিশনের বিষয়েও আলোচনা করেন তিনি। গগনযান মিশনের মাধ্যমে প্রথমবার মহাকাশে মহাকাশচারী পাঠাবে ইসরো। সে বিষয়ে কাজ এগোচ্ছে বলে জানান তিনি। গগনযান অভিযানের জন্য মহাকাশচারী নির্বাচনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে জানালেন ডঃ শিভান।