নিজস্ব প্রতিবেদন : শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়েছে ইসরোর কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ। কিন্তু তাহলেও ইসরোর সাফল্যের পরিমাণ কিছু কম নয়। নির্দিষ্ট কক্ষপথে এখনও চাঁদকে এখনও প্রদক্ষিণ করেছে চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটার। সেই অর্বিটারের মাধ্যমেই চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন তথ্য পৌঁছবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের কাছে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



আগামী ১ বছর চাঁদকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করবে চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটার। আর তার মাধ্যমেই চন্দ্রপৃষ্ঠের তথ্য প্রেরণ করবে চন্দ্রযান-২। এ বিষয়ে ইসরোর এক আধিকারিক জানালেন, চন্দ্রযান-২ অভিযানের খুব সামান্য অংশেই গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, "আমাদের মনে রাখতে হবে, অভিযানের একটি বড় অংশ চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটার। সেটি কিন্তু সাফল্যের সঙ্গে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে।"


আরও পড়ুন : চিকচিক করে উঠল চোখ, আবেগপ্রবণ ইসরো প্রধানকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা মোদীর


ইসরো সূত্রে খবর, আগামী এক বছরে চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটারের মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তোলা হবে। তার মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠের উন্নত মানের ছবি পৌঁছবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের হাতে। শুধু তাই নয়, ল্যান্ডার বিক্রমের বিষয়ে খোঁজও করা যাবে চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটারে সাহায্যে। 


বিভিন্ন দিক থেকে সারা বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে চন্দ্রযান-২-এর অভিযান। অন্যান্য দেশের মহাকাশ সংস্থাগুলির তুলনায় অনেকটাই কম বাজেট ইসরোর। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার তুলনায় প্রায় ২০ গুণ কম বাজেট ইসরোর। তবে টাকাপয়সাকে কখনও বাঁধা হয়ে উঠতে দেননি ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা। লড়াই চালিয়ে গেছেন মহাকাশবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে।


চন্দ্রযান-২-এর জন্য খরচ প্রায় ৯৮৩ কোটি টাকা। আপাতদৃষ্টিতে টাকার অঙ্ক অনেকটাই বেশি মনে হতে পারে। তবে, অন্যান্য দেশের তুলনায় এই অঙ্ক নেহাতই কম। একই ধরনের অভিযানে প্রায় দশ গুণ বেশি খরচ করে থাকে বিভিন্ন দেশের মহাকাশ সংস্থা। মজার বিষয়, জনপ্রিয় হলিউড সিনেমা ইন্টারস্টেলারের থেকেও কম খরচ হচ্ছে এই অভিযানে। 
সীমিত বাজেটেই ইসরোর বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী কৌশল ও নিষ্ঠায় এসেছে সাফল্য। সম্পূর্ণ ভারতে তৈরী হয়েছে শক্তিশালী 'জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভিহেকল'। সেই রকেটের সাহায্যেই চাঁদের দিকে পাড়ি দিয়েছিল চন্দ্রযান-২। 


সফল উত্ক্ষেপণের পর একের পর এক সফল কক্ষ পরিবর্তন। অভিযানের জটিল ধাপগুলিও সহজেই পার করেছে চন্দ্রযান-২। প্রায় ৬ দিন ব্যাপি ট্রান্স লুনার বার্নের মাধ্যমে পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে যায়। সেই ধাপটিও সহজ ছিল না। প্রতিটি কঠিন ধাপই পার হয়েছে চন্দ্রযান-২। শেষ পর্যায়ে সফলভাবে চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় বিক্রম। পরিকল্পনামাফিক চাঁদের দিকে এগোতে দুই বার কক্ষপথও পরিবর্তিত হয়। কিন্তু ফাইন ব্রেকিংয়ের সময়েই দেখা দেয় বিপত্তি।


পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার রাত ১.৩৮ মিনিটে শুরু হয় বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া। সেকেন্ডে ১.৮ কিলোমিটার থেকে যানের গতিবেগ কমিয়ে আনা শুরু হয় শূন্যে। সেই লক্ষ্যে শুরু হয় হার্ড ব্রেকিং। নিখুঁত হার্ড ব্রেকিং পর্বের পর ফাইন ব্রেকিং পর্ব শুরু হতেই দেখা দেয় বিপর্যয়। সেই পর্যায়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ইসরোর কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে যাবতীয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যানটির।