প্রয়োজন ও ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী আপনার জন্য সঠিক কোন বাইক? দেখে নিন
বাইক কেনার আগে পরিকল্পনা না করলে কিন্তু পরে পস্তাতে হতে পারে। কারণ প্রতিটি মানুষের রুচি আলাদা, দু`চাকার প্রয়োজনও আলাদা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নতুন বাইক কেনার অভিজ্ঞতা সব সময়ই স্মরণীয়। সেটা কলেজে উঠে কেনা প্রথম স্টাইলিশ বাইকই হোক, অখবা রোজ যাতায়াত-এর জন্য ভালো মাইলেজ-এর বাইক। বাইকপ্রেমীদের কাছে বাইক কেবলমাত্র বাহন না। সেটি তাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তবে, বাইক কেনার আগে পরিকল্পনা না করলে কিন্তু পরে পস্তাতে হতে পারে। কারণ প্রতিটি মানুষের রুচি আলাদা, দু'চাকার প্রয়োজনও আলাদা। কারও বাইক প্রয়োজন রোজ অফিস যাতায়াতের জন্য। কারও প্রয়োজন অনেক দূর দূর লং রাইড-এ যাওয়ার জন্য। আর এখানেই বাঁধে কনফিউসান। ফুল ফেয়ারড্ স্পোর্টসবাইক নেবেন, নাকি ক্লাসিক স্টাইল-এর ক্রুজার? আপনার চাহিদা ও ব্যক্তিত্ব অনুসারে কোন বাইক নেবেন আপনি?
কোন ধরনের বাইক নেবেন সেটা ঠিক করতে হলে জানতে হবে কি কি ধরনের বাইক ভারতে জনপ্রিয়। দেখে নিন ভারতে কোন কোন ধরনের বাইক জনপ্রিয় এবং কোন ধরন আপনার জন্য পারফেক্ট...
১) মাইলেজ-ফোকাসড্ কনজিউমার বাইক: এই ধরনের বাইক-এর লুকস্ বা স্টাইলিং-এর দিকে সেই অর্থে গুরুত্ব কম দেওয়া হয়। বদলে গুরুত্ব দেওয়া হয় মাইলেজ এবং কম মেন্টেনেন্স-এর উপর। দামও হয় কমের দিকে। তবে, এখনকার বাইক-এ সংস্থাগুলি নজর দিচ্ছে স্টাইলিং-এর উপরেও। ভারতে এই ধরনের বাইকের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।
কেবলমাত্র অফিস যাতায়াত এবং টুকটাক বাজার দোকানের জন্য যদি বাইক কেনার ভাবনা-চিন্তা করেন, তা হলে এই ধরনের বাইক আপনার পক্ষে আদর্শ হতে পারে।
ভারতের বাজারে এই ধরনের বাইক-এর মধ্যে TVS Star City, Bajaj Platina, Hero Splendor, Pulsar 135 ls জনপ্রিয়।
২) স্পোর্টি ফুল ফেয়ার্ড বাইক: Moto GP-তে সোঁ সোঁ করে চলা দ্রুত গতির বাইক-গুলি থেকেই এই ধরনের বাইক-এর স্টাইল অনুপ্রাণিত। এই ধরনের বাইকের ইঞ্জিন এবং হেডলাইট-এর উপরের অংশটি ঢেউ খেলানো ফেয়ারিং-এ ঢাকা। এর ফলে দ্রুতগতিতে চলার সময়ে হাওয়ার বাঁধা সহজেই এড়াতে পারে এই ধরনের বাইক। এই ধরনের বাইক-এর লুকস্ ও বেশ স্পোর্টি। তাছাড়া, বাইক-এর সামনের অংশে ফেয়ারিং থাকায় আরোহীর শরীরে হাওয়াও কম লাগে।
তবে, এই ধরনের বাইক-এর ক্ষেত্রে সমস্যা হল, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেশ ঝুঁকে চালাতে হয় এই বাইক। ফলে দীর্ঘক্ষণ চালালে হতে পারে কোমর ও শিঁরদাড়ায় ব্যাথা। তা ছাড়া ব্যাক সিট উঁচু ও ছোট হওয়ায় ব্যাক সিট-এ বসা আরোহীরও সমস্যা হতে পারে।
অল্প দূরত্বে যাতায়াত এবং উইক এন্ড-এ হাইওয়ে-তে রাইড-এর জন্য আদর্শ এই ধরনের বাইক।
ভারতের বাজারে এই ধরনের বাইক-এর মধ্যে Yamaha r15, Suzuki Gixxer sf, Pulsar RS 200, KTM RC 125, KTM RC 200 জনপ্রিয়।
৩) ক্রুজার ও চপার থিম-এর ক্লাসিক বাইক: ভারতে অন্যতম জনপ্রিয় স্টাইল এটি। পুরানো দিনের ক্লাসিক লুকস্ এবং তারই সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ইঞ্জিন-এর কথা ভেবেই এই ধরনের বাইক কেনেন বেশিরভাগ মানুষ। রেট্রো স্টাইলিং, তার সঙ্গে সাইলেন্সার-এর গুরু গম্ভীর শব্দের নস্টালজিয়া এই ধরনের বাইকের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাইক-এর সিটিং-ও আরামদায়ক। তবে, স্পোর্টি ইঞ্জিন-এর দুরন্ত পিকআপ এবং মসৃণ ইঞ্জিন এই বাইক-এ আশা না করাই ভালো।
আপনার যদি ক্লাসিক স্টাইলিং পছন্দ হয় তবে এই ধরনের বাইক নিতে পারেন। তবে মাথায় রাখবেন, এই ধরনের বাইক-এর মাইলেজ বেশ কম। বাইক-এর ওজনও বেশি।
ভারতের বাজারে এই ধরনের বাইক-এর মধ্যে Royal Enfield Classic 350, Jawa 42 জনপ্রিয়।
৪) নেকড্ স্পোর্টস্ বাইক: এই ধরনের বাইক বর্তমানে সারা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের বাইকের ইঞ্জিন-এর সঙ্গে স্পোর্টি ইঞ্জিন-এর মিল থাকে। বাইক-এর স্টাইলিং মূলত মাড বাইক-এর থেকে অনুপ্রাণিত। তাই ইঞ্জিন ঘেরা ফেয়ারিং বা হেডলাইট-এর উপর কোনও ভাইজর রাখা হয় না। হালকা ও মিনিমালিস্ট রাখতে চেষ্টা করা ডিজাইন। সিটিং পশ্চার-ও রাখা হয় সোজা। তাই কোমর-পিঠ-এর ব্যাথার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। ভিড় রাস্তাঘাটেও চালানোর পক্ষেও বেশ সুবিধাজনক।
তবে, এই ধরনের বাইক-এর সমস্যা হল, অনেকক্ষণ দ্রুতগতিতে চালানো হলে প্রচুর হাওয়ার বাঁধার সম্মুখীন হবেন আরোহী।
ভারতের বাজারে এই ধরনের বাইক-এর মধ্যে KTM Duke 125, KTM Duke 200, Suzuki Gixxer, Bajaj Pulsar NS 200, Honda CB Hornet, Yamaha FZ 16, TVS Apache RTR 4V জনপ্রিয়।