নিজস্ব প্রতিবেদন: জাহাজের ক্যাপ্টেন আশা করেছিলেন, এই বার্তা ঠিক পৌঁছে যাবে হামবার্গের জার্মান নাভাল অবজার্ভেটরিতে অথবা কাছাকাছি কোনও জার্মান দূতাবাসে। কিন্তু তাঁর সে বোতলবন্দি বার্তা আকাঙ্খিত জায়গায় পৌঁছয়নি। তবে ভাসতে ভাসতে প্রায় ১৩২ বছর পর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে এসে ঠেকেছে। এই দীর্ঘ সময়ে ভারত মহাসাগরে যেমন জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে অনেকটাই, তেমনই বয়ে গিয়েছে বহু জল। দু'-দু'টো বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়েছে ক্যাপ্টেনের জার্মানি...হিটলারি জমানাও শেষ হয়েছে...চুরমার হয়ে গেছে বার্লিনের দেওয়াল। কিন্তু ওই ক্যাপ্টেনের বোতল বন্দি বার্তা আজও অটুট এবং প্রাসঙ্গিক!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- বাহ্ মুরগি! এমন ডিম পেড়ে তাক্ লাগিয়ে দিল বিশ্বকে


গত জানুয়ারি মাসে উত্তর পারথের সৈকতে ছেলের প্রেমিকার সঙ্গে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন টোনা ইলম্যান নামে এক মহিলা। হাঁটতে হাঁটতে হঠাত্ তাঁর চোখে পড়ে বালিতে ঢেকে থাকা কালো সবুজ রঙের একটি বোতলে। প্রায় ৯ ইঞ্চি লম্বা এবং ৩ ইঞ্চি চওড়া ওই বোতলটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় ইলম্যানের। তখনই বাড়ির বুকসেল্ফে ওই বোতলটি সাজিয়ে রাখার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর বাড়িতে সেই বোতল নিয়ে এসে  ছিপি খুলতেই দেখেন ভিতরে রয়েছে একটা ভাঁজ করা হলুদ রঙের চিরকুট। দেখা যায় সেই চিরকুটে জার্মান ভাষায় হাতে লেখার কায়দায় ছাপানো হরফে কিছু লেখা রয়েছে। তবে, ওই কাগজে পাওয়া তথ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তারিখ এবং জাহাজের নাম। তারিখ- ১৮৮৬, ১২ জুন। জাহাজের নাম- 'পাওলা'।


আরও পড়ুন- অবতরণের সময় ভেঙে পড়ল রুশ বিমান, নিহত ৩২


বোতলটির গুরত্ব বুঝেই পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া জাদুঘরে বিষয়টি জানান ইলম্যান। ইলম্যানের সৌজন্যে বোতলটির এখন ঠিকানা সেখানেই। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সমুদ্রের ঢেউ নিয়ে গবেষণার জন্য জার্মান নাভাল অবজার্ভেটরির একদল বিশেষজ্ঞ ভারত মহাসাগরে পাড়ি দেন। চিঠিতে লেখা রয়েছে, সমুদ্রের ঢেউ এবং ধরন এখনও পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে বোঝা যায় সুদূরপ্রসারী গবেষণা প্রয়োজন। কিন্তু এই লেখা বোতলবন্দি করে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেন?


আরও পড়ুন- চিলেকোঠায় ঝুলছে মৃত বাঘ, নীচে কৌতূহলী জনতা


বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বোতলবন্দি বার্তা এ ভাবে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা প্রথম বলেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী জর্জ ভন নুমায়ের। ১৮৬৪ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত সময়কালে এমন অনেক বোতলে ভাসিয়ে দিয়ে বার্তা আদানপ্রদান করা হত। পাওলা জাহাজের ক্যাপ্টেনও আশা করেছিলেন তাঁর এই বার্তা ঠিক পৌঁছে যাবে জার্মান দূতাবাসে। কিন্তু এক শতক পর তা শেষমেশ পৌঁছেছে অস্ট্রেলিয়ার পারথেতে। নাবিকের সেই বার্তা কাঙ্খিত লক্ষ্যে না পৌঁছলেও, তা যে আরও বড় ঐতিহাসিক নথি হয়ে দাঁড়াবে তা বোধ হয় তিনি ভেবেও দেখেননি। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৩৪ সালে শেষ এমন বোতল উদ্ধার হয়েছিল।


আরও পড়ুন- পাইথন কত ওজনের খাদ্য এক নিমিষে গিলতে পারে দেখুন