ওয়েব ডেস্ক: জুরাসিক পার্ক। স্টিভেন স্পিলবার্গের এই ছবি থেকেই মানুষের মনে তৈরি হয় সেই বিশালাকৃতি জন্তুটির ছবি। ছোট থেক বড়, সকলেরই ডায়নোসরের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ ওই ছবিতেই। ডায়নোসর সম্পর্কে মানুষের সাধারণ যা ধারণা আছে তাও ওই ছবি থেকেই। কিন্তু জুরাসিক পার্কের ডায়নোসর আর পৃথিবীর বুকে একসময় দাপিয়ে বেড়ানো আসল ডায়নোসর কী একই? ছবিতে দেখে এই ভয়ঙ্কর প্রাণীটা সম্পর্কে আমরা যা ভাবি তা কি সব ঠিক?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গবেষণা বলছে, না। ডায়নোসর সম্পর্কে এতদিন আমরা যা জেনে এসেছি তার সবটা ঠিক নয়। ডায়নোসর সম্পর্কে এমন কিছু ধারণা আমরা মেনে চলি যার বাস্তব হওয়া সম্ভবই নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ডায়নোসর সম্পর্কে এমন ৮ তথ্য যা সত্যি নয়।


১. ডায়নোসরের যুগেও নাকি মানুষ ছিল, এমন একটা ধারণা আমরা বিশ্বাস করে থাকি। কিন্তু এই ধারণা ঠিক হওয়া সম্ভব নয়। কারণ তথ্য বলে ডায়নোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে। কিন্তু মানুষের প্রথম অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে আজ থেকে ৬০ লক্ষ বছর আগে।



২. ব্রনটোসরাস নামে এক ধরনের ডায়নোসরের কথা আমরা পড়ে থাকি। এরা নাকি শাকাহারি হয়। কিন্তু ব্রনটোসরাস বলে আদৌ কোনো ডায়নোসর ছিল না। এরা অ্যাপাটোসরাসেরই এক ধরণের প্রকার।



৩. আজ থেকে ১৫ কোটি বছর আগে ডায়নোসর আর স্তন্যপায়ী প্রাণীরা একসঙ্গেই বাস করত। এমনটা আমরা মনে করি। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ডায়নোসরের সময় পৃথিবীতে থাকত কিছু ছোট ছোট প্রাণী। এরা ছোট ছোট পোকা-মাকড় আর কিছু সরীসৃপ পাণীদের খেয়ে বেঁচে থাকত। বড় বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আত্মপ্রকাশ ঘটে ডায়নোসরের অস্তিত্ব চলে যাওয়ার পর।



৪. পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ডায়নোসর। এটাকে ডায়নোসর প্রজাতির ব্যর্থতা বলে মনে করা হয়। কিন্তু আদতে কি এটা সত্যি? পৃথিবীর বুকে এই বিশাল প্রাণিগুলোর একাধিপত্ব চলেছে ১৫ কোটি বছর ধরে। যা আধুনিক মানুষের অস্তিত্বের তুলনায় ৭৫০ গুণ বেশি।



৫. প্রাগৈতিহাসিক যুগের সরীসৃপরা আজকের সরীসৃপদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা ছিল। আর সেই কারণেই সেই সময়ের বেশিরভাগ সরীসৃপকেই আমরা ডায়নোসরের প্রাকারভেদ বলে মনে করি। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। ওই সময় পৃথিবীতে বাস করত ৪০ রকমের সরীসৃপ যার মাত্র ১০ শতাংশ ছিল ডায়নোসর। বিভিন্ন সিনেমায় বা বইতে আমরা সূচাল ঠোঁটযুক্ত এক ধরণের উড়ন্ত ডায়নোসরের মতো দেখতে প্রাণী দেখে থাকি। কিন্তু ডায়নোসর কখনই উড়তে পারত না।



৬. ডায়নোসররা সরীসৃপ হওয়ায় বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা এদের রক্ত ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু নতুন কিছু গবেষণা বলছে সব রকমের ডায়নোসররা ঠাণ্ডা রক্তের ছিল না। কিছু ডায়নোসরের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের গরম রক্ত ছিল।



৭. সিনেমায় আমরা স্টেগোসরাস ডায়নোসরকে টি-রেক্স-এর সঙ্গে মারামারি করতে দেখি। কিন্তু বাস্তবে এটা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না। কারণ স্টেগোসরাসের অনেক পরে আবির্ভাব হয় টি-রেক্সের।



৮. সূর্য থেকে এক আগুনের গোলা এসে পরে পৃথিবীতে। আর তার প্রভাবেই গলে যায় বরফ, বাড়তে থাকে পৃথিবীর তাপমাত্রা। সেই উত্তাপ সহ্য করতে না পেরে ডায়নোসরের বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু শুধু এটাই ডায়নোসরদের বিলুপ্তির কারণ নয়। এর পরও পৃথিবীতে সুনামি, অ্যাসিড বৃষ্টির মতো বেশ কিছু বিপর্যয় হতে থাকে। এসবই ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলে ডায়নোসরদের।