ওয়েব ডেস্ক: ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী সুদর্শন কিশোরদের বেছে বেছে কিনে নিয়ে আসা এবং তারপর যৌন পরিতৃপ্তির জন্য মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত তাদের শরীরকে পৈশাচিকভাবে ব্যবহার করা, এটাই নাকি আফগানিস্তানের ১০০ বছরের সুপ্রাচীন রীতি। কবুলিওয়ালার দেশের এই 'বর্বর ঐতিহ্য' সক্কলের কাছে পরিচিত 'বাচ্চা বাজি' নামেই। বিশেষ করে তালিবানরাই এই নারকীয় রীতির ধারক এবং বাহক। তবে তালিবানের মত উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো ছাড়াও আর্থিক সচ্ছল আফগান পরিবারের পুরুষরাও এই 'রিচুয়্যাল' প্র্যাকটিস করে থাকে। এমনকি এই ধরণের কুরুচিকর 'প্রথা'র ব্যবহারিক প্রয়োগে সামিল হয়েছে আফগান দেশের তাবড় থেকে তাবড়ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। কাম পরিতৃপ্তি তো বটেই 'বাচ্চা বাজি'র মত 'প্রথা'তে ১০ থেকে ১৮ বছরের কিশোরদের মূলত 'নর্তক' করে রাখা হয়। যৌন দাসত্বের মতই মনীবের কথায় যেমন অনিচ্ছাকৃত কামে লিপ্ত হতে হয় তেমনই মনীবের কথাতেই এই কিশোরদের বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে 'মেয়ে সেজে' নাচতেও হয়। পবিত্র রমজান মাসে গোটা আফগান দেশ এই প্রথার 'প্র্যাকটিসে বুদ হয়ে থাকে', আর এটাই আরও বেশি করে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিশ্ব মানবতার। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

শুধু যে পুরুষ বাচ্চা তা নয়, মেয়ে বাচ্চাদের ওপরও যে ধরণের অত্যাচার 'বাচ্চা বাজি'র নামে হয়ে থাকে এবং এখনও হচ্ছে, তা আদতে এক প্রকাণ্ড মানবতা বিরোধী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। "কেবলমাত্র সন্তানের গর্ভ ধারণের জন্য কিশোরীদের ব্যবহার, আর কিশোরদের উপভোগ করা আনন্দের জন্য", 'বাচ্চা বাজির' এই ট্র্যাডিশন ইদের মত পবিত্র দিনেও পিছু ছাড়ছে না নিরপরাধ কিশোর-কিশোরীদের। 


'ইসলাম বিরোধী' এই প্রথা, প্রথম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তালিবান শাসনকালেই (১৯৯৬-২০০১)। এরপর কিছু জায়গায় 'বাচ্চা-বাজি'কে সাময়িকভাবে বন্ধ করা গেলেও দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে এই প্রথার রমরমা থেকেই গিয়েছে। এমনকি তাজিকের মত জায়গাতেও এই প্রথা ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে। আফগানিস্তান ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের (AIHRC) রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের সঙ্গে পুরুষদের সামাজিক যোগাযগের অভাবের কারণেই বাচ্চা-বাজির মত পাশবিক রীতির রমরমা বাড়ছে। এছাড়াও আইন, দুর্নীতি, অশিক্ষা, দারিদ্র, সামাজিক অনিশ্চয়তা ইত্যাদি কারণগুলোও নাকি এই অসামজিক প্রথার বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ, এমনই দাবি আফগানিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের।