সেলিম রেজা, ঢাকা: সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। দেবী দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিককে আকৃতি দিতে রাত দিন পরিশ্রম করছেন তারা। দম ফেলারও যেন ফুসরত নেই তাদের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মন্দিরে ঘুরে প্রতিমা তৈরির এসব চিত্র দেখা গেছে। কথা হয় বেশ কয়েকজন প্রতিমা কারিগরের সঙ্গে। তারা জানান, বিগত বছরের তুলনায় প্রতিমার চাহিদা কমে অর্ডার অর্ধেকে নেমে আসা এবং প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়ায় খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।


আরও পড়ুন- Oscars 2025: অস্কারে ভারতীয় নারীদের জয়জয়কার! 'লাপাতা লেডিজ'-এর সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় বাঙালি অভিনেত্রীর ছবি 'সন্তোষ'...



ঢাকার রমনা কালী মন্দিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় বিবেক পাল নামে এক কারিগরকে। তিনি ১৪ বছর ধরে এখানে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। আলাপকালে জি মিডিয়ার বাংলাদেশ সংবাদদাতাকে বিবেক পাল জানান, “প্রতিমা তৈরির মালামালের দাম বাড়ছে আর প্রতিমার দাম কমছে। আগে যেটা ১০ টাকা দিয়ে কিনেছি এখন সেই একই জিনিস ১৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। গত বছর যে প্রতিমার দাম ১ লাখ ছিল এবার সেই প্রতিমা ৭০ থেকে ৮০ হাজারে এসে দাড়িয়েছে। এবার আমাদের প্রতিমার অর্ডার কম। গতবছর আমদের ১২-১৩টা প্রতিমার অর্ডার ছিল। এবার কমে গেছে। মাত্র ১০টা অর্ডার পেয়েছি। বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির কারণে শুরুতে প্রতিমার অর্ডারই ছিল না। শেষের দিকে এসে অল্প টাকায় কিছু অর্ডার পেয়েছি।”


লাভের অংশ থেকে কারিগররা মজুরি পায় বলে জানান বিবেক পাল। তিনি বলেন, “মালিক অর্ডার ধরে আর আমরা কাজ করি। তারপর মাসিক হিসাব করে লাভের একটা অংশ আমাদের দেয়। কিন্তু প্রতিমার বর্তমান যে বাজার সেখানেতো কিছুই থাকবে না মালিকের। মালিকের যদি না থাকে তাহলে আমাদের কি দিবে? মালিক বাঁচলে আমরা বাঁচব।”


জি ২৪ ঘণ্টার কথা হয় আরেক প্রতিমা কারিগর রতন পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বাজারে যে অবস্থা, এই পরিস্থিতিতে কোথাও পূজা হবে, কোথাও হবে না। শুধু মাত্র মণ্ডপগুলো ধরে রাখার জন্য গত বছর আমি যে মূল্যে কাজ করেছি এ বছর তার অর্ধেক মূল্যে কাজ করছি। গত বছর যে প্রতিমার কাজ আমি এক লাখ টাকায় করেছি এবার সেটা ৬০-৬৫ হাজার টাকায় করতে হচ্ছে।”


আরও পড়ুন- Konnagar Murder: কোন্নগরে বদলাপুর! প্রসেনজিতের গুলিতে ৫ বছরের ছেলের সামনেই লুটিয়ে পড়লেন তরুণী স্ত্রী...


রতন পাল বলেন, “প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম প্রতিবছরের মতো এবারও কাজ হবে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। মাঝে বাংলাদেশে ঝামেলার কারণে এক মাসের বেশি সময় আমরা কাজ করতে পারি নাই। গতবারের মতো এবার অর্ডারও নেই। গত বছর ১৬টা প্রতিমার কাজ করেছি। আর এ বছর ৯টা প্রতিমার কাজ করছি।”


প্রতিমা  তৈরিতে খরচের তুলনায় প্রতিমার দাম নেই বলে আক্ষেপ করে রতন বলেন, “গত আড়াই মাস ধরে ছয়জন মানুষ এক সঙ্গে কাজ করছি। এর পর বাঁশ, কাঠ, মাটি, খড়সহ আরও তো কতোকিছু আছে সবই তো নিজের খরচ। ঢাকার আমিনবাজার থেকে মাটি আমাদের ফিট হিসেবে কিনে আনতে হয়। ২০০ ফিট বেলে মাটির দাম পড়ে ছয় হাজার টাকা। এঁটেল মাটি কিনতে লাগে ১৫/১৬ হাজার টাকা। তারপর নিয়ে আসা খরচ আছে আরও। এক মুঠো বিচুলি (খড়) কিনেছি ১১টাকা করে। এক মুঠো বিচুলি দিয়ে একটা হাতের কাজও হয় না। তারপর আবার ভ্যান ভাড়া আছে ৬০০ টাকা। এরপর রং খরচ, প্রতিমার সাজসজ্জা কেনার খরচ, আরও কতো খরচ কিন্তু প্রতিমার দাম নেই।”


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)