নির্ণয় ভট্টাচার্য্য


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভারতের ব্যাপক উত্থানে চিনের এখন 'মাথা ঠান্ডা' রাখা উচিত, লেখা হল চিনের সরকারি সংবাদপত্র 'গ্লোবাল টাইমসে'। ওই পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, "এই মুহূর্তে ভারতের উত্পাদন ক্ষেত্রে যে বিরাট পরিমান বৈদেশিক বিনিয়োগ হচ্ছে তা ভারতীয় অর্থনীতি, কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্যিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ"। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে যে, আজ যা ভারতে হচ্ছে তাই বিগত দুই দশক আগে হয়েছে ড্রাগনের দেশে যখন তারা 'জানলা খুলে দিয়েছিল'। আর তাই নিজেদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা থেকে চিন মনে করছে ভারতও বিদেশি বিনিয়োগের ফলে মজবুত অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠীত হতে পারে। কিন্তু ভারতের এই উত্থান দেখে কমিউনিস্ট দেশটির 'অস্থির' হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই, বরং 'ঠান্ডা মাথায়' সুচিন্তিত অবস্থান নেওয়াই বাঞ্ছনীয়, বক্তব্য চিনা সরকারি সংবাদ পত্রের।


'গ্লোবাল টাইমসে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, "ভারতের দিক থেকে আসা এই প্রতিযোগীতার মুখে চিনকে আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন রূপরেখা অনুসারে কাজ করতে হবে"। উত্পাদন খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের রমরমার কারণে ভারতের এতদিনকার পুঁজি, দক্ষ শ্রমিকের অভাব জনিত সমস্যা ও দুর্বলতা কেটে গিয়ে স্বনির্ভরতা আসবে যা দেশের 'মেক ইন ইন্ডিয়া' পদক্ষেপকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সামগ্রিকভাবে এই বিনিয়োগের প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি চিনা সংস্থাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। পাশাপাশি, ভারতে বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে চিনা সরকারের এই প্রচারযন্ত্র।


প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ভারতে পণ্য ও পরিষেবা কর চলু করার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছিল বেজিং। আর তারপর এই প্রতিবেদন। কিন্তু হঠাত্ আগ বাড়িয়ে ভারতের উত্থানে চিনের 'মাথা ঠান্ডা' রাখার কথা কেন লিখতে গেল সেদেশের সরকারি কাগজ? তাহলে কি ভারতের সম্ভাব্য সাফল্য দেখতে পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে জিনপিং-এর দেশ? আর সেজন্যই কি এই 'স্বগতোক্তি'? এমনই নানান প্রশ্ন এখন আন্তর্জাতীক মহলে। কারণ, বিশ্বশক্তি হিসাবে স্বীকৃতির পাশাপাশি এশিয়ার দেশগুলির মধ্যেও দীর্ঘদিন ধরে 'দাদাগিরি' করতে অভ্যস্থ বেজিং। আর এই 'দাদাগিরি'র আসল কারণটি হল চিনের সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তি। চিরাচরিত এই সমীকরণে ভরসা রেখেই পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ভারতকেও মাঝেমধ্যেই 'খোঁচা' দিতে অভ্যস্থ ড্রাগনে দেশ। কিন্তু এবার অর্থনৈতিকভাবে পোক্ত ভিতের উপর ভারতও যদি প্রতিষ্ঠা পায় তাহলে পরিবর্তন আসবে এতদিনকার ক্ষমতা মানচিত্রে যা সত্যিই ভাবাচ্ছে বেজিং-কে, মত কূটনৈতিক মহলের একাংশের। তাই নিজেরা যে 'অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে' সেটা বোঝাতে সুকৌশলে চিনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আজ ভারতে যা হচ্ছে তা বছর কুড়ি আগেই সেরে ফেলেছে চিন। পাশাপাশি এই প্রক্ষাপটে চিন যে নতুন পথ ধরে আরও উন্নতির শৃঙ্গ জয় করবে সেই 'স্বগোতক্তি' তাই যতটা না স্বগোতক্তি তার চেয়ে অনেকটাই বেশি অন্যান্য দেশের জন্য বেজিং বার্তা। (আরও পড়ুন- অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিনকে ছাপিয়ে ১ নম্বরে উঠে এল ভারত!)