ওয়েব ডেস্ক: জঙ্গি হানায় রক্তাক্ত বাংলাদেশ। আইসিস নিশানায় ঢাকার গুলশন এলাকার কসমোপলিটন হোলে আর্টিসান বেকারি। ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশাস লড়াইয়ের শেষে খতম ৬ জঙ্গি। জীবিত ধরা সম্ভব হয়েছে এক জনকে। মৃত্যু হয়েছে ২০ জন পণবন্দির। প্রাণ হারিয়েছেন এক ভারতীয় ছাত্রীও। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঢাকার গুলশন। রাজধানীর কূটনৈতিক চত্বর। কমবেশি ৩৬টি দেশের দূতাবাস, হাইকমিশনের ঠিকানা। বেছে বেছে হাই প্রোফাইল এই সিকিওরিটি জোনকেই নিশানা করল জঙ্গিরা। ভারতীয় দূতাবাস থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে রোড ৭৯-এ অভিজাত হোলে আর্টিসান বেকারি। ২৪ ঘণ্টাই বিদেশি অতিথি, কূটনীতিকদের ভিড়ে জমজমাট।  শুক্রবার রাতেও ডিনার করতে ব্যস্ত ছিলেন দেশি বিদেশি অতিথিরা। 


আরও পড়ুন সন্ত্রাসের নতুন কৌশল জনপ্রিয় ফুড ডেস্টিনেশন, কিন্তু কেন?


ঘড়ির কাঁটায় তখন ৯.২০। বদলে গেল ছবিটা। AK 22 রাইফেল, পিস্তল হাতে বেকারিতে ঢুকে পড়ল ৭ সশস্ত্র জঙ্গি। সকলেরই বয়স ২০-র নীচে। কাতার দূতাবাসের দিক থেকে বেকারিতে ঢুকেই কমবেশি বিদেশি নাগরিকদের পণবন্দি করে নেয় জঙ্গিরা। হামলাকারীরা বেকারি কব্জা করার ২ঘণ্টা পর পৌছয় বাংলাদেশ পুলিস। গ্রাউন্ড জিরোতে পৌছয় রাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান। শুরু হয় তত্পরতা। জঙ্গিদের কাছে দাবি-দাওয়া জানতে চেয়ে আবেদন করেন পুলিসের মধ্যস্থতাকারীরা


গ্রাউন্ড জিরোর তত্‍পরতা সরাসরি প্রচার না করার জন্য সংবাদমাধ্যমে অনুরোধ করে RAB। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঘটনাস্থলের ৪ কিলোমিটার আগেই আটকে দেওয়া হয়। বেকারির মধ্যেই তখন পণবন্দি বিদেশি নাগরিক। মাঝেমধ্যেই শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির। হামলার দায় স্বীকার করল isis। আইসিস অনুমোদিত সংবাদমাধ্যম "আমাক' বেকারির ভিতরের অসংখ্য ছবি প্রকাশ করতে শুরু করে। ছবিতে দেখা যায় বেকারির ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বিদেশি নাগরিকেরা। আইসিস দাবি করে, কমপক্ষে ২০জন বিদেশি নাগরিককে খুন করেছে তারা।


বাংলাদেশ পুলিস জানাল, জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই অফিসারের। মারা যান বাংলাদেশ পুলিসের অ্যাসিস্টান্ট কমিশনার রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ। বেকারির বাইরে তত্‍পরতা তুঙ্গে।  হোলে অর্টিসান বেকারির সামনে তৈরি রাখা হয় ট্যাঙ্কও। কিন্ত, ফাইনাল অপারেশন শুরুর জন্য ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায় বাংলাদেশি এলিট কম্যান্ডোরা। প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে নেভি কম্যান্ডোরা। রাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয় পনবন্দিদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় ও ইতালীয় নাগরিকরাও।


আরও পড়ুন ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে বিশ্বের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলিম যুবকদের মগজধোলাই করছে আইসিস


ঘড়ির কাঁটা ৭টা ৪০-র ঘর ছুঁতেই ফাইনাল অ্যাসল্ট শুরু। হোলে আর্টিসানে ঢুকে পড়েন বাংলাদেশ নেভির ১০০-র বেশি কম্যান্ডো, RAB, RAB-রই অ্যান্টি ক্রাইম এলিট ফোর্স। শুরু হল অল আউট অপারেশন। মুর্হুমুহু গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠতে থাকে এলাকা।  প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে ৫জনকে উদ্ধার করেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। ৪০ মিনিটের গুলির লড়াই শেষ। ৬ জঙ্গিকে নিকেশ করে বেকারির দখল নেন কম্যান্ডোরা। উদ্ধার হয় ৬ জঙ্গির দেহ। হাতেনাতে ১ জনকে ধরে ফেলেন কম্যান্ডোরা। ১২ ঘণ্টার লড়াইয়ে দাঁড়ি পড়ে। ২০জনের প্রাণের বিনিময়ে জঙ্গিমুক্ত হয় হোলি আর্টিসান।