`দেশকে সর্বনাশের মুখে ঠেলে দিতে সব শরণার্থীদের ঠাঁই দিতে পারি না`
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নয়া অভিবাসন বিল পাশ করাতে ভোটাভুটি হবে বলে জানা যাচ্ছে। ২৫০ কোটি ডলারের ব্যায়ভার সম্পন্ন এই অভিবাসন বিলটি জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাশ করাতে পারেননি রিপাবলিকনরা
নিজস্ব প্রতিবেদন: সীমান্ত পেরিয়ে আসা শরণার্থীরা আদতে আক্রমণকারী এবং প্রতারক। এই ভাষাতেই শরণার্থীদের উদ্দেশে আঘাত হানলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে এখানেই শেষ নয়, কোনও আইনি পদক্ষেপ ছাড়াই শরণার্থীদের ‘দূর’ করে দেওয়া উচিত বলেও জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই টুইটে পুনরায় আগুনে ঘি পড়েছে। তবে, কোন পথে সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে যথেষ্ট ধন্দে রয়েছেন মার্কিন সেনেটররা।
আরও পড়ুন- শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে অসুবিধা হবে না, জানাল ট্রাম্প প্রশাসন
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নয়া অভিবাসন বিল পাশ করাতে ভোটাভুটি হবে বলে জানা যাচ্ছে। ২৫০ কোটি ডলারের ব্যায়ভার সম্পন্ন এই অভিবাসন বিলটি জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাশ করাতে পারেননি রিপাবলিকনরা। মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তৈরি, সীমিত সংখ্যক শরণার্থীদের বৈধতা প্রদান এবং তরুণ শরণার্থীদের (ড্রিমার) নাগরিকত্বের বিষয়গুলি এই বিলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে ট্রাম্প, অভিবাসন নীতি নিয়ে যেভাবে বিচারব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন, তা নজিরবিহীন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
হোয়াইট হাউস থেকে ভার্জিনিয়া গল্ফ কোর্সে যাওয়ার পথে এ বিষয়ে মোট দুটি টুইট করেন ডন। তিনি লেখেন, “আমাদের দেশকে আক্রমণ করার জন্য সবাইকে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারি না। অবৈধভাবে প্রবেশকারী শরণার্থীদের কোনও আইনি পদক্ষেপ ছাড়াই ফেরানো উচিত। অভিবাসন নীতি এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টিকে প্রহসনের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে চলতি ব্যবস্থা। প্রবেশ করছে প্রচুর অনাথ শিশুও।” অপর টুইটে ট্রাম্প লিখছেন, “আমাদের অভিবাসন নীতি দেখে গোটা বিশ্ব হাসছে। যে সব শরণার্থী বৈধভাবে প্রবেশ করেছেন বা বছরভর প্রতীক্ষা করছেন, তাঁদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। যে সব শরণার্থী দেশের কাজে লাগবেন, তাদেরকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত। সংশ্লিষ্ট শরণার্থীর সামগ্রিক দিক বিচার করে তবেই প্রবেশাধিকার দেওয়া দরকার।”
আরও পড়ুন- সারা রাত রাস্তায় ডানা মেলে চড়ে বেড়ালেন সৌদি মহিলারা
উল্লেখ্য, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে অস্থায়ী কেন্দ্রে শরণার্থী শিশুদের আটকে রাখার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। শরণার্থী শিশুদের শিবিরে 'আমি তোয়াক্কা করি না' লেখা জ্যাকেট পড়ে গিয়ে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ঘরণী। তবে মার্কিন ফার্স্ট লেডি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। ফলে এ বিষয়ে ঘরে-বাইরে কোণঠাসা ট্রাম্পকে পিছু হটতে হয়েছে। এমতাবস্থায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যত দ্রুত সম্ভব পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে ওইসব শিশুদের। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, সপ্তাহভর রিপাবলিকানরা নতুন বিল নিয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি, ট্রাম্পের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির ত্রুটিগুলি নির্ধারণ করে পরিবারের সঙ্গে শিশুদের এক ছাদের তলায় রাখার চেষ্টাও চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ‘আদর্শ মুসলিম রাষ্ট্র’ তৈরি করতে পাক নির্বাচনে লড়ছে ২৬৫ জঙ্গি
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে ‘ফ্লোরস সেটেলমেন্ট’ সংক্রান্ত মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০ দিনের মধ্যে আটক শিশুদের মুক্ত করতে বাধ্য সে দেশের প্রশাসন। তবে নতুন নিয়মে শিশুরা যাতে ওই ২০ দিনই পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করতে চাইছেন রিপাবলিকানরা।