নিজস্ব প্রতিবেদন: সৌদি আরবের ‘মুকুট মণি’ আবকিয়াক। আর বিশ্বের অন্যতম   তেল উত্তোলক খুরাইস। আরামকোর এই দুই কেন্দ্রে এখনও দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে সৌদির ইস্টার্ন প্রভিন্স।  মাঝে মধ্যে শোনা যাচ্ছে প্রবল বিস্ফোরণ। সৌদি আরব প্রশাসন গতকাল আগুন নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করলেও, বাস্তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। নাসার উপগ্রহ চিত্রেও ধরা পড়েছে সেই ছবি। প্রশ্ন উঠছে, কতটা ক্ষতি হল ওই দুই কেন্দ্রের? কারণ আরামকোর এই ক্ষতির উপর নির্ভর করবে আগামিদিনে বিশ্বে অশোধিত তেলের দর।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


গতকাল সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ  বিন সলমনের সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনে কথা হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সৌদি আরবকে এই পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে সব রকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি এ-ও জানান, প্রয়োজনে তাঁদের তেল ভাণ্ডার খুলে দেওয়া হবে। বিশ্বে যাতে তেল সঙ্কট না হয়, সে দিকে সর্বদা পর্যবেক্ষণ করছে হোয়াইট হাউজ।



তবে, আবকিয়াক এবং খুরাইসে কতটা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, তা বলা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সৌদি প্রশাসন। খুরাইস কেন্দ্রে প্রতিদিন ১৫০ কোটি  ব্যারেল তেল উত্তোলন হয়। সৌদি আরবের প্রধান তেল শোধনাগার কেন্দ্র আবকিয়াকে ৭০০ কোটি ব্যারেল তেল শোধিত হয়। পারস্য উপসাগর দিয়ে ওই তেল রফতানি হয় গোটা বিশ্বে। বলে রাখি, অগস্টে দিনে ৯৮৫ কোটি ব্যারেল তেল রফতানি করেছে সৌদি আরব, যা বিশ্বের মোট তেল রফতানির ১০ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানেই বোঝা যাচ্ছে, আবকিয়াক এবং খুরাইস এই দুই কেন্দ্র বিশ্বের তেলের বাজারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।



সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা আরমকোয় কেন ড্রোন হামলা? গতকালই ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করে নেয়। সৌদি আরবে তাদের একটি শাখা হামলা চালায় বলে দাবি করা হয়েছে। এই হামলার পিছনে ইরানকে দায়ী করে সৌদি আরব এবং আমেরিকা। ২০১৪ সালে ইয়ামেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে রাজধানী সানা দখল করে ইরান সমর্থিত হুতিরা। ইয়েমেন সরকারের পক্ষ নিয়ে একাধিকবার বিমান হামলা চালায় সৌদি আরব। ইয়েমেনে এখন পর্যন্ত এক লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হুতিদের কাছে সৌদি আরব যে ‘সফ্ট টার্গেট’ চলতি বছরে সে দেশের সীমান্তে তেলের পাইপ লাইনে হামলাই প্রমাণ। এর আগেও সৌদির তেল ভাণ্ডারে হামলা চালিয়েছে হুতিরা।



কিন্তু আরামকোর এই দুই কেন্দ্রের হামলায় বড়সড় মাসুল গুনতে হতে পারে বিশ্বকে এমনটা মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের শক্তি বিষয়ক প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ম্যাকনেলি জানান, অ্যাবকিয়াককে সৌদি আরবের তেলের মুকুট মণি বলা হয়। ইরানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁর মন্তব্য, যদি ক্ষতির পরিমাণ অল্প হয়, তাহলেও বিশ্বকে এর ফল ভুগতে হবে। আগামিদিনে অশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ম্যাকনেলি।