জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এ যেন নিজের অস্ত্র নিজেই ফিরিয়ে নেওয়া। বা, নিজের অস্ত্র নিজেই পরিত্যাগ করা। একদা যে-অস্ত্রকে পরিত্রাণের পথ বলে ভাবা হয়েছিল, সেটাকে ফিরিয়ে নেওয়াও। অনেকটা মহাভারত-মহাভারত গন্ধ এবং এ গল্প প্রায় মহাভারতই, বা বলা ভাল মহাপৃথিবীর গল্প। কৃত্রিম মেধা তৈরির ‘গডফাদার’ জিওফ্রে হিন্টন চাকরি ছাড়লেন। তাঁর চাকরি ছাড়াটা বড় কথা নয়, যতটা বড় কথা চাকরি ছাড়ার কারণটা। কারণটা হল, এবার তিনি স্বয়ং মনে করছেন, কৃত্রিম মেধা এই মানবসভ্যতার পক্ষে ভয়ংকর।   

 


 

অথচ, জিওফ্রে সারাজীবন কাজ করেছেন কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই নিয়েই। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে এ বিষয় সংক্রান্ত একাধিক স্বীকৃতি এবং পুরস্কার। হিন্টন এআই বিশেষজ্ঞ, ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যুগান্তকারী কাজের জন্য ‘ট্যুরিং অ্যাওয়ার্ড’ও জিতেছেন। কিন্তু এর মধ্যেই নিজেই নিজের কাজের জন্য তীব্র অনুশোচনা হয়েছে তাঁর। এদিকে বিশ্ব তাঁর পরিচয় জানে, তিনি বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী তথা কৃত্রিম মেধা তৈরির ‘গডফাদার’। এহেন গডফাদার ভয় পাচ্ছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে তৈরি হতে চলা ভবিষ্যতের পরিস্থিতি নিয়ে।

 


 

সোজা কথায়, এখন তিনি কৃত্রিম মেধা বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আসন্ন বিপদ নিয়ে খুবই স্পর্শকাতর। এবং এখন তিনি কৃত্রিম মেধার সমালোচনাই করতে চান। অথচ, চাকরির বাধ্যবাধকতার জন্য এটা তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপকারিতা এবং ঝুঁকি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলার জন্যই শেষ পর্যন্ত গুগল থেকে পদত্যাগ করলেন তিনি।

 

এক দশক আগে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগলে যোগ দিয়েছিলেন হিন্টন। সেই গুগল ছাড়তে গিয়ে এ সম্পর্কে তাঁর মত স্পষ্ট করতে হিন্টন লিখেছেন-- আমি গুগল ছাড়লাম, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তৈরি হতে চলা সংকটজনক পরিস্থিতি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি। আমার এই নেতিবাচক ভাবনার প্রভাব যাতে গুগলে না পড়ে তাই আমি এই সংস্থা থেকে পদত্যাগ করছি।

 

এ কি সেই ফ্র্যাংকেস্টাইনেরই গল্প? এআই কি তবে আমাদের গিলতে আসছে? সময়ই বলবে।