কুলভূষণ মামলার শুনানি চলছে আন্তর্জাতিক আদালতে, চাঁচাছোলা ভাষায় সওয়াল ভারতের
শুধুমাত্র দূতাবাসের অনুমতিই নয়, পাকিস্তান আদালত যে কুলভূষণকে জঙ্গি বলে শনাক্ত করেছে, তারও উপযুক্ত প্রমাণ পাক সরকারের হাতে নেই বলে এ দিন হরিশ সালভে দাবি করেন
নিজস্ব প্রতিবেদন: কুলভূষণ যাদব মামলার শুনানি শুরু হয়েছে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই চাঁচাছোলা ভাষায় সওয়াল শুরু করেন ভারতের তরফে আইনজীবী হরিশ সালভে। প্রধানত, দুটি বিষয়কে ‘পাখির চোখ’ করে এগোতে চাইছে ভারত। এক, পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে ভারতের কূটনীতিকদের দেখা না করতে দিয়ে ভিয়েনা কনভেনশনের নিয়ম লঙ্ঘন করা। আর দ্বিতীয়, পাক সামরিক আদলতের দেওয়া কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডকে আইনবিরুদ্ধ ঘোষণা করুক আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত।
আরও পড়ুন- পুলওয়ামা হামলায় চাপে ইমরান সরকার! পাক হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠাল ইসলামাবাদ
এ দিন হরিশ সালভে তাঁর সওয়ালে বলেন, ভারতীয় দূতাবাসকে অনুমতি না দিয়ে দীর্ঘদিন বন্দি করে রাখা হয়েছে কুলভূষণ যাদবকে। যা ভিয়েনা কনভেশনের আইন গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে দাবি হরিশ সালভের। এমনকি ভারতের তরফে অভিযোগ করা হয়, কুলভূষণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করছে পাকিস্তান। ২০১৬ সালে ৩০ মার্চ যাদবের ‘কনসুলার অ্যাকসেস’র অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় কিন্তু পাকিস্তানের তরফে তার কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। হরিশ সালভে বলেন, বিভিন্ন সময়ে ১৩ বার ভারতীয় দূতাবাসের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র দূতাবাসের অনুমতিই নয়, পাকিস্তান আদালত যে কুলভূষণকে জঙ্গি বলে শনাক্ত করেছে, তারও উপযুক্ত প্রমাণ পাক সরকারের হাতে নেই বলে এ দিন হরিশ সালভে দাবি করেন। ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীকে দেখতে দেওয়ার অনুমতি দেয় পাকিস্তান। কুলভূষণের পরিবারের প্রতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অভব্য আচরণের’ অভিযোগ ওঠে। এ দিন আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে হরিশ সালভে বলেন, সে সময় পাকিস্তানের আচরণে যথেষ্ট ভীত ছিল ভারত। গত ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাক আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয় ভারতের তরফে।
আরও পড়ুন- ‘হামলার দায় চাপানোর আগে নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবুক ভারত’: পাকিস্তান
উল্লেখ্য, ভারতের চরবৃত্তি এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর সন্দেহে ২০১৭ সালে ১০ এপ্রিল কুলভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শোনায় পাক সামরিক আদালত। ভারতের এই প্রাক্তন বায়ুসেনাকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি পাকিস্তানের। যদিও, ইরান থেকে কূলভূষণকে পাকিস্তান অপহরণ করে বলে অভিযোগ আনে ভারত। কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে দ্বারস্থ হয় নয়া দিল্লি। এরপরই পাক আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে আন্তর্জাতিক আদালত।