জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশ-সহ এশিয়া জুড়ে আঘাত হানা তাপপ্রবাহ আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। গত এপ্রিলে তীব্র আকার নিয়ে হাজির হওয়া তাপপ্রবাহ এখনও এশিয়ার ছ'টি দেশে বয়ে যাচ্ছে। আগামী বছরগুলিতে তা আরও শক্তিশালী হয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে জানিয়ে দিচ্ছেন আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা। চলতি মাসে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষণা সংস্থা 'ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন ও রেডক্রস ক্লাইমেট সেন্টার' থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। আর রাষ্ট্রসংঘ এই তথ্য তুলে ধরেছে। তারা বলছে, তাপপ্রবাহকে তারা এক দুর্যোগ হিসেবেই দেখছে। এই তাপপ্রবাহের ফলে কৃষি ও স্বাস্থ্য-সহ নানা ক্ষেত্রে বিশ্ব জুড়ে ঘটছে নানা ক্ষয়ক্ষতি। তবে রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে, তাপপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত ও মৃত্যুর শিকার হওয়া জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার কাজ তারা শুরু করেছে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Climate Crisis: কেন জীবন বিপন্ন-করা এই দাবদাহ, কেন এ দুঃসহ তাপপ্রবাহ? রহস্য এবার ভাঙলেন বিজ্ঞানীরা...


এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর গতকাল, শুক্রবার বাংলদেশের চারটি বিভাগ-- ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনায় তাপপ্রবাহের বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। গতকাল দেশের বেশিরভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙায়-- ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঢাকায় ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী তিন–চার দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে তারা।


জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫৬টির অধিবাসীরা তাপপ্রবাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দেশের ১২ কোটি ৫০ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১০ লাখ মানুষের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হিসাব মিলিয়ে ২০ জনের মৃত্যুর তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে 'ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন ও রেডক্রস ক্লাইমেট সেন্টার' থেকে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে।


রাষ্ট্রসংঘের হিসাব বলছে, তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের মাগুরা জেলায়। এপ্রিলের শুরু থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হলেও তা মারাত্মক রূপ নেয় ২১ এপ্রিল থেকে। সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন ছিল ২৪ এপ্রিল। ওই দিন ঢাকা-সহ দেশের বেশির ভাগ এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছি! চুয়াডাঙা, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, বগুড়া, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ইত্যাদিতে সবচেয়ে বেশি গরম ছিল। এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে টানা ২৩ দিন ছিল তাপপ্রবাহ। সেটা ছিল রেকর্ড।


এদিকে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল, দিল্লির মৌসম ভবন থেকে সতর্ক করা হয়েছিল, ভারতের অনেক অংশেই এবারের গ্রীষ্মে অস্বাভাবিক গরম পড়তে চলেছে। অনেক অঞ্চলে তাপপ্রবাহের দিনের সংখ্যাও স্বাভাবিকের থেকে বেশি হবে। দেখা গেল, এপ্রিল মাসে প্রায় সারা দেশ থেকেই তাপপ্রবাহ বা তীব্র তাপপ্রবাহের খবর আসছে! পূর্ব ভারতের অনেক অংশে এই এপ্রিলের গরম এবার আগের বহু রেকর্ড ভেঙেছে। একটানা তাপপ্রবাহের সাক্ষী থেকেছে ফিলিপাইন্স, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমারও!
যে-তথ্য সকলকে চমকে দিচ্ছে, সেটা হল, চলতি বছরের এপ্রিলে, টানা ১৭ দিন ধরে উত্তর ও পূর্ব ভারতের অধিকাংশ জায়গায় উচ্চ তাপমাত্রা!‌ এই অঞ্চলে টানা সতেরো দিন ধরে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে! জানা গিয়েছে, ১৯৬৯ সালের পর, এত দীর্ঘ সময় ধরে একটানা এই ধরনের চরম গরমের পরিস্থিতি তৈরি হতে কখনও দেখেনি ভারত! 


আরও পড়ুন: Medicine Price Reducing: ভোট-পর্বেই প্রাপ্তি! নিত্য প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ সব ওষুধের দাম কমল! দেখে নিন, কী কী...


বিশ্বব্যাপী চরম আবহাওয়া পরিস্থিতিগুলির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন। সংস্থার বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়া জুড়ে তাপপ্রবাহ ঘটার সম্ভাবনা বেড়েছে। তাঁদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এই ধরনের তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা ৪৫ গুণ বেড়েছে। 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)