নিজস্ব প্রতিবেদন : বছরের পর বছর আর্থিক সংকটে এমনিই জর্জরিত ছিল লেবানন। গত সপ্তাহের ভয়াবহ বিস্ফোরণ যেন কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিল। দেশের পরিস্থিতি সীমা-পরিসীমার বাইরে- ঘোষণা করে পদত্যাগ করল লেবাননের হাসান দিয়াব সরকার। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মাত্র সাত দিন আগেই বেইরুট ভবনের ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০০ জন। হাসপাতালে ভর্তি শ'য়ে শ'য়ে আহত। ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিস্ফোরণের প্রবল শব্দ এখনও কানে বাজছে বেইরুটবাসীর। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর ভাবনা ও বাস্তবায়নের পথে 'বড় বাধার' কথা উল্লেখ করে পদত্যাগ করল সরকার। সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় টিভিতে লাইভে পদত্যাগ পর্ব সম্প্রচারিত হয়। পদত্যাগের খবর পেয়েই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে প্রবল বিক্ষোভ, হাতাহাতি, ইঁটবৃষ্টি শুরু হয়। কার্যত অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে বিধ্বস্ত লেবাননে।


বাজারে মন্দা, শিল্পোদ্যোগের অভাব, দেশজুড়ে আরাজকতা প্রভৃতির প্রভাবে গত কয়েক বছরে ক্রমেই নিম্নমুখী হয়েছে লেবাননের জিডিপি। তার উপর গত বছর অক্টোবর থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন। 


অক্টোবর থেকে আরও খারাপ হতে থাকে পরিস্থিতি। ডলার বিনিময়ে প্রায় ৭০ শতাংশ পতন হয় লেবানিজ মুদ্রার। শিল্পোদ্যোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষির প্রতিকূল পরিবেশ, দেশজুড়ে আন্দোলনের ফলে চরমে ওঠে দারিদ্র। সমীক্ষা বলছে, এভাবে চলতে থাকলে চলতি অর্থবর্ষ শেষের আগেই দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করবে।


বাকি অর্ধেক? লেবাননের আর্থিক বৈষম্য নজর কেড়েছে বিশ্বের তাবড় অর্থনীতিবিদদের। দেশের অর্ধেক যখন কোনওমতে দু'বেলা খাবার জোটাচ্ছে, সেই সময়ে একাংশের সম্পত্তি ক্রমেই ফুলে-ফেঁপে উঠছে। এর জন্য শাসক দলের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন লেবাননের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। তাছাড়া ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার উর্ধ্বসীমা খুব কম অঙ্কে বেঁধে দেওয়ার মতো নীতির ফলে জনসাধারণের দুরাবস্থা চরমে। 


মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় করোনাভাইরাস। লকডাউন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ ইত্যাদির ফলে ভঙ্গুর হয়ে পড়ে লেবানন। আর সেই ভঙ্গুর অর্থনীতিকে যেন খাদের কিনার থেকে ঠেলে দিল গত সপ্তাহের বিস্ফোরণ।


অক্টোবর মাসেই গণ আন্দোলনের মুখে পতন হয় এর আগের সরকারের। ডিসেম্বরে ক্ষমতায় আসেন দিয়াব। কিন্তু সেই সরকারও টিকল না। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তিন নম্বর সরকার গঠনে দিকে এখন এগোতে হবে বিধ্বস্ত, ক্লান্ত লেবাননবাসীদের।
আরও পড়ুন : রাধাকৃষ্ণের মন্দিরে নিউ জিল্য়ান্ডের প্রধানমন্ত্রী, বসে পাত পেড়ে খেলেন লুচি, ছোলার তরকারি