নিজস্ব প্রতিবেদন: চিঠি-পত্র আজকাল আর আসে না। আসবে কী করে? আজকাল মেসেজ, ই-মেল, হোয়াট্‌স্যাপ-এর যুগে ক’জন আর চিঠি লেখে বলুন! চিঠি লেখার অভ্যাসটাই যে হারিয়ে গিয়েছে!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবে মেসেজ, হোয়াট্‌স্যাপ-এর যুগেও চিঠি লেখার একটা আলাদা কৌলিন্য রয়েছে। যতই হোয়াট্‌স্যাপ-এ মুখ গুজে চ্যাট করুন, চিঠি লেখার আর চিঠি হাতে পাওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা! সে অনুভূতি মুখে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। কিন্তু যদি বলি, পরিবারের কোনও পরলোকগত প্রিয়জনকে লেখা চিঠি যথা সময়ে, তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর খবর পান, তাহলে! এই অনুভূতিটাও ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়! ভাবছেন, ‘এ আবার কেমন হেঁয়ালি’! মৃত কোনও স্বজনের উদ্দেশ্যে চিঠিপত্র লেখার রীতি পৃথিবীর কোনও কোনও প্রান্তে হয়তো চালু আছে, তা বলে সে চিঠি যথা সময়ে, গন্তব্যে (স্বর্গে) পৌঁছানো কী করে সম্ভব? এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে স্কটল্যান্ডের বাথগেট শহরে।


একটা জন্মদিনের কার্ড। তার খামের উপর কাঁচা হাতে লেখা, ‘মিস্টার পোস্টম্যান, আজ আমার বাবার জন্মদিন। আপনি কি এই চিঠিটা স্বর্গে তাঁর কাছে পৌছে দেবেন?’— ব্যস! এই টুকু লিখেই সাত বছরের ছোট্ট জেস হাইন্ডম্যান খামটা তুলে দিয়েছিল রয়্যাল মেলের ডাকপিয়নের (পোস্টম্যান) হাতে। কিন্তু একরত্তি শিশুটিকে কী করে বোঝাবেন, যে এই চিঠি তার বাবার কাছে পাঠানো সম্ভব নয়! তাই ছোট্ট জেসের ‘ইচ্ছা পূরণ’-এর গুরু দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় রয়্যাল মেল। জেসকে পালটা একটা চিঠি লিখে রয়্যাল মেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চিঠিটা স্বর্গে পাঠানো সত্যিই খুব কঠিন ছিল। কিন্তু আকাশের অসংখ্য তারা, নক্ষত্রের বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত জেসের এই চিঠি তারা পোঁছে দিয়েছে তার বাবার কাছে... স্বর্গে।



চার বছর আগে ২০১৪ সালে, মাত্র ২৮ বছর বয়সে জেসের বাবা জেমস মারা যান। তার পর থেকে প্রতিবছর মায়ের হাত ধরে বাবার জন্মদিনে তাঁর কবরে ফুল রেখে আসত জেস ও তার দিদি। কিন্তু এই বছর, জেসের মনে হয়েছিল বাবাকে একটা জন্মদিনের কার্ড পাঠানোর কথা। তাই পছন্দ মতো একটা জন্মদিনের কার্ড কিনে খামের ওপর ওই দু’লাইন লিখে সে ওই খামটা দিয়েছিল রয়্যাল মেলের ডাকপিয়নের (পোস্টম্যান) হাতে। এর ঠিক ১০ দিন পরেই রয়্যাল মেলের পক্ষ থেকে অ্যাসিস্যান্ট ডেলিভারি ম্যানেজার স্যাম মিলিগ্যান জেসকে তার চিঠির স্বর্গে পৌঁছে যাওয়ার খবর জানিয়ে এই চিঠি লেখেন।


মা টেরি কপল্যান্ডের সঙ্গে ছোট্ট জেস হাইন্ডম্যান। ছবি: টেরি কপল্যান্ডের ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।

জেসের লেখা চিঠি আর রয়্যাল মেলের চিঠির ছবি দিয়ে গোটা বিষয়টা জানিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন জেসের মা টেরি কপল্যান্ড। রয়্যাল মেলের এই আন্তরিক উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।


বিগত তিন-চার দিনে টেরি কপল্যান্ডের এই ফেসবুক পোস্টটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় অসংখ্য প্রশংসা কুড়োচ্ছে রয়্যাল মেলের এই অভিনব উদ্যোগ।