নিজস্ব প্রতিবেদন: মেয়েরা নাকি বিজ্ঞান পড়ে না! আর ছেলেরা 'আর্টস' নিয়ে পড়লে তাদের শুনতে হয়-- মেয়েদের সাবজেক্ট পড়ছে! এ সব 'সংস্কারে'র ওপর সপাট একটা ধাক্কা দিলেন যেন দুই নারী-- এমানুয়েল শার্পেনটিয়ার এবং জেনিফার এ. ডাউডনা। এ বছর এই দু'জনেই রসায়নে নোবেল জিতলেন। প্রসঙ্গত, শার্পেনটিয়ার ফরাসি এবং ডাউডনা মার্কিন৷ এ বারে পদার্থবিদ্যায় যে তিনজন নোবেল পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও একজন মহিলা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই প্রথম বিজ্ঞানের কোনও নোবেল দুই নারীকে দেওয়া হল। ড. শার্পেনটিয়ার বলেওছেন যে, তাঁদের এই নোবেল জয় নতুন প্রজন্মের মেয়েদের কাছে একটা জোরালো বার্তা পাঠাল।


কবি লিখেছিলেন দুই নারী, হাতে তরবারি! এ বার রসায়নের নোবেলে যা দাঁড়াল, তাতে একটু বদলে নিয়ে লিখতে হয়-- দুই নারী, হাতে কাঁচি। তবে ধাতুনির্মিত কাঁচি নয়। এ কাঁচি হল 'জেনেটিক সিজার'। 
আসলে জিনোম এডিটিং-এর পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্যই এই দুই বিজ্ঞানী এ বার রসায়নে নোবেল পেলেন৷ তাঁরা  আবিষ্কার করেছেন 'জেনেটিক সিজার'৷ নোবেল কমিটির মতে, এই আবিষ্কার জীববিজ্ঞানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে৷ কোষের মধ্যে জিন পরিবর্তনের যে কঠিন কাজটি এই দুই গবেষক করেছেন, তা একসময় অসম্ভব বলে মনে করা হত৷ একটু বিষয়ভিত্তিক ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, তাঁরা 'সিআরআইএসপিআর-সিএএস৯' নামক এক জেনেটিক কাঁচি ব্যবহার করে উদ্ভিদ বা প্রাণীদেহে জিনোম এডিটিংয়ের সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন৷


যদিও ২০১২ সালেই তাঁরা এটি আবিষ্কার করেন৷ তাঁদের কাজের উপর ভিত্তি করে পরের বছরগুলিতে এ সংক্রান্ত আরও অনেক কিছু আবিষ্কার হয়৷ গবেষকেরাও সেই সব আবিষ্কারের হাত ধরে নতুন নতুন দিকের সন্ধান পেয়েছেন৷ এর ফলে মানবসমাজ নানা ভাবে উপকৃত হয়েছে৷


কী এই জিনোম এডিটিং?


শার্পেনটিয়ার এবং ডাউডনার আবিষ্কৃত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা পশু, গাছপালা এবং মাইক্রোঅর্গানিজমের ডিএনএ-তে বদল ঘটাতে পারছেন৷ এই প্রযুক্তি জীববিজ্ঞানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাবে বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা৷ এমনকি এর ইতিবাচক প্রভাব আগামী দিনে ক্যানসার চিকিৎসাতেও পড়বে৷ যে সব রোগ উত্তরাধিকার সূত্রে আসে, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সেই সব রোগের নিরাময়ও সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷


আমাদের দেশের ঐশী, অনামিকা, তনিমারা কী ভাবছেন? বিজ্ঞান নিয়ে শুধু পড়াই নয়, সর্বোচ্চ পর্যায়েও তা হলে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। জিনোম এডিটিংয়ের ফলিত দিক তো আছেই; পাশাপাশি এই দুই নারীর এই অসামান্য অর্জন নিঃসন্দেহে আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতির ইতিহাস-ভূগোলেও ব্যাপক কাঁচি চালাবে! 


আরও পড়ুন: কৃষ্ণগহ্বরই এনে দিল এ গ্রহের উজ্জ্বলতম পুরস্কার