`নিলেমের ঘরবাড়ি আসবাবে`ই এ বার অর্থনীতির নোবেল
অকশন থিয়োরি নিয়ে কাজ করে এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক পল আর মিলগ্রম এবং রবার্ট বি উইলসন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: এ বছরের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার পরে বাঙালির নিশ্চয়ই '১৯৪৬-৪৭' কবিতায় জীবনানন্দ দাসের সেই অমর পঙক্তিগুলি মনে পড়ল-- 'অনেকেরই ঊর্ধ্বশ্বাসে যেতে হয়, তবু/ নিলেমের ঘরবাড়ি আসবাব— অথবা যা নিলেমের নয়/ সে-সব জিনিস/ বহুকে বঞ্চিত ক'রে দু-জন কি একজন কিনে নিতে পারে।'
বহুকে বঞ্চিত করেই, অথবা ঠিক বঞ্চিত নয়, বহুকে অতিক্রম করেই বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সম্মান বিরল প্রতিভাবলে দু'একজনই অর্জন করতে পারেন। যেমন এ বার করলেন পল আর মিলগ্রম এবং রবার্ট বি উইলসন। তাঁরাই এ বছর যুগ্ম ভাবে অর্থনীতির নোবেলজয়ী।
আগের বছরে অবশ্য এই দিনটিতে বাঙালি নতুন করে জেগে উঠেছিল। কেননা, নোবেলের শিকে ছিঁড়ে এক বাঙালির কপালে। অমর্ত্য সেনের পরে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন এস্তার দুফলোঁ ও মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে এক বাঙালি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। দারিদ্র্য
দূর করাই ছিল তাঁদের থিয়োরির উপজীব্য।
অকশন থিয়োরি নিয়ে কাজ করে এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক পল আর মিলগ্রম এবং রবার্ট বি উইলসন। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস আজ, সোমবার ঘোষণা করল এই পুরস্কার। একাডেমির তরফে জানানো হয়েছে, আর্থিক সম্পদের বাজারমূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিলাম তত্ত্বের উন্নয়ন ও তার নতুন রীতি উদ্ভাবনের জন্য তাঁরা এই পুরস্কার পেলেন। তাঁদের আবিষ্কার বিশ্বব্যাপী বিক্রেতা, ক্রেতা এবং করদাতাদের উপকৃত করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত দু'জন নারী এই পুরস্কার পেয়েছেন।
অকশন থিয়োরি কী?
খুব সরল করে বলতে গেলে বলতে হয়-- নিলাম সাধারণত বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কীসের ওপর নির্ভর করে, সেটা নিয়েই এই কাজ।
নিলাম নির্ভর করে নিলামের নিয়ম, নিলামের ফরম্যাট বা বিন্যাস এবং নিলামে 'বিড' করার পথ খোলা না বন্ধ এ সবের ওপরে। আরও অনেক বিষয় আছে, যেমন-- একজন অংশগ্রহণকারী কতবার 'কল' দিতে পারেন? বিজেতাকে শেষ পর্যন্ত কতটাকা দিতে হয়, নিজের 'বিড' অনুযায়ী না দ্বিতীয় 'বিডারে'র ঘোষণামূল্য মাফিক? একই বস্তুর নিলামের 'রেট' কি ক্রেতাভেদে আলাদা আলাদা হবে, না একই থাকবে? যে-বস্তুর নিলাম চলছে, তার মূল্য সম্বন্ধে 'বিডার'দের কার কী কী ধারণা,সেই ঘোর অনিশ্চয়তাটাও এখানে বিবেচ্য। সব মিলিয়ে মোটামুটি এই সব বিষয়ই সাধারণত অকশনকে নিয়ন্ত্রণ করে, ব্যাখ্যা করে। এ বিষয়ে গভীর কাজ করেই এ বারের পুরস্কার জয় ওই দুই বিজেতার।
আরও পড়ুন: স্মৃতির ওই ফলক লোপাট! শুরু হল সংরক্ষণের কাজ