এশিয়ার সব থেকে অসুস্থ করোনা রোগী বেঁচে ফিরলেন, ছড়িয়েছিল মৃত্যুর গুজব
``আমার সারা গায়ে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছিল। শরীরের দুটি অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। একটা সময় ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নেমে এসেছিল দশ শতাংশে।``
নিজস্ব প্রতিবেদন- ডাক্তাররা বলেছিলেন, তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা দশ শতাংশ। এশিয়ায় তাঁর মতো অসুস্থ করোনা রোগী আর কেউ ছিলেন না বলেও চিকিত্সকরা জানিয়েছিলেন। দুমাসেরও বেশি সময় ধরে এই করোনা আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের ভেন্টিলেটরে অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন। মাঝে রটে গিয়েছিল, তিনি মারা গিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের নাগরিক স্টিভেন ক্যামেরন ভিয়েতনামে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন। তিনি সম্প্রতি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁকে বাঁচিয়ে তোলা বড় সাফল্য বলে দাবি করছেন চিকিত্সকরা।
ক্যামেরন বলেছেন, ''আমার সারা গায়ে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছিল। শরীরের দুটি অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। একটা সময় ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নেমে এসেছিল দশ শতাংশে।'' ডাক্তাররা বলেছিলেন, ''সেরে উঠলেও আমাকে হয়তো কয়েক বছর শয্যাশায়ী হয়েই থাকতে হবে। দুমাসের বেশি সময় আমার জ্ঞানই ছিল না।'' প্রসঙ্গত, ভিয়েতনামে ক্যামেরন 'পেশেন্ট নাইন্টি ওয়ান' নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ভিয়েতনামে এখনও পর্যন্ত একজন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যাননি। ক্যামেরনের চিকিতসার দায়িত্বে থাকা এক চিকিত্সক জানিয়েছেন, 'একমো' নামের এক যন্ত্রের সাহায্যে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। চলছিল চিকিত্সা। এই যন্ত্রের সাহায্যে রোগীর শরীর থেকে রক্ত বের করে তাতে অক্সিজেন মিশিয়ে আবার শরীরে প্রবেশ করানো হয়।
আরও পড়ুন- করোনার মৃত্যু থেকে দূরে থাকার ওষুধ বাতলে দিলেন ব্রিটিশ মন্ত্রী
ক্যামেরন জানিয়েছেন, ক্রেইগ নামে তাঁর এক বন্ধু তাঁর মরদেহ নিয়ে কী করা হবে তার পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকী তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট-এর ভাড়ার চুক্তিও বাতিল করে দেওয়া হয়। চিকিত্সকরা একটা সময় তাঁর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কথাও ভেবেছিলেন। ক্যামেরন জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ভিয়েতনামে চিকিত্সা হয়েছে বলেই তিনি এই যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের মাদারওয়েলে নিজের জায়গায় ফিরেছেন ক্যামেরন। তবে তাঁর শরীর একেবারে ভেঙে গিয়েছে। ভেন্টিলেটরে থাকার সময়ই ৩০ কেজি ওজন কমে গিয়েছিল। ক্যামেরন পেশায় পাইলট। তবে আপাতত কাজে ফেরার আশা দেখছেন না তিনি। ক্যামেরন এখন হাঁটতেও পারছেন না। আগামী বছর শুরুতে কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।