জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পৃথিবীতে যে ম্যাগনেটিক ফিল্ড রয়েছে, তা এই গ্রহকে নানা ভাবে রক্ষা করে। সূর্য থেকে যে বিপজ্জনক কসমিক বিকিরণ বেরিয়ে আসে বা তার প্লাজমা বিস্ফোরণের ফলে প্রকৃতিতে যে ক্ষতিকর বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে তার ক্ষতি প্রতিরোধ করার প্রধান অস্ত্রই এই ভূচুম্বকত্ব। এ পর্যন্ত জানাই ছিল। কিন্তু যেটা জানা ছিল না, তা হল, কিছু প্রাণী এই ভূচুম্বকত্বকে দারুণ সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে কাজে লাগাতে সক্ষম। তাদের এই কৌশলটার সঙ্গে জিপিএস (Global Positioning System) প্রযুক্তির মিল রয়েছে। এই প্রযুক্তিটি নিজের মতো করে কাজে লাগায় তারা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Massive Mountains: এভারেস্ট কি আর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ নয়? খোঁজ মিলল এর চেয়েও উঁচু পর্বতের...


কোন প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে এই আশ্চর্য ক্ষমতা? 


বিশেষ করে পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে রয়েছে এই আশ্চর্য ক্ষমতা। তারা এই ভূচুম্বকত্বকে ব্যবহার করতে পারে একেবারে নিজেদের ইচ্ছেমতো। অন্য কিছু কিছু প্রাণীর মধ্যেও এই গুণ দেখা যায়। 


সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাউলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর গবেষকেরা পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে এই গুণাগুণের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, পাখিদের মস্তিষ্কে 'ক্লাস্টার এন' (cluster N) নামক একটি অংশ থাকে, যেটি পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের প্রভাবে 'রিয়্যাক্ট' করে। 'ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স' জার্নালে গবেষণাটি বেরিয়েছে। এই গবেষণা বলছে, পরিযায়ী পাখিরা যখন পরিযানে ব্যস্ত থাকে একমাত্র তখনই তাদের মস্তিষ্কের ওই অংশ ভূচুম্বকত্বে সাড়া দেয়, বা বলা ভালো, ভূচুম্বকত্বকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে। সেই হিসেবে পরিযায়ী পাখিদের মস্তিষ্কের এই 'ক্লাস্টার এন' রাতেই সক্রিয় থাকে, যেহেতু সেই সময়েই তারা দূরপাল্লার উড়ানগুলি সম্পন্ন করে। আর দিনের বেলা তারা যখন বিশ্রাম নেয়, তখন সেটি নিষ্ক্রিয় থাকে। তবে পরিযানের সময়ে পাখিরা শুধু যে এই  ভূচুম্বকত্বের বলেই উড়ে চলে তা নয়, তারা সূর্য এবং নক্ষত্রের প্রতিও খেয়াল রাখে। 


আমরা সবাই জানি, পৃথিবীর ভূত্বকের নীচে, ভূ-অভ্যন্তের যে গলিত লোহার স্রোত আছে সেটা থেকেই তৈরি হয় এই ভূচুম্বকত্ব এবং সেটাই পৃথিবীর চারিদিকে ক্রিয়াশীল থাকে। কিন্তু প্রাণী হিসেবে মানুষ সে বিষয়ে উদাসীন থাকে। কেননা, বিষয়টি মানুষের কাছে অদৃশ্য। এটা উপলব্ধি করার মতো কোনও 'বডি মেকানিজম'ও নেই মানুষের। কিন্তু কিছু কিছু প্রাণীর শরীরে এই মেকানিজম 'ইন-বিল্ট'। এর বলেই তারা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে চলে যেতে পারে।


আরও পড়ুন: Middle East: দাবদাহ থেকে মৃত্যু ক্রমশ বাড়বে! তাপপ্রবাহ কি আগামিদিনে আরও নির্মম হবে?


কী ভাবে দল বেঁধে পরিযায়ী পাখিরা হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নির্ভুল ভাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যায়, তা নিয়ে বহু দিন ধরেই নানা গবেষণা হয়ে আসছে। এর আগের গবেষণাগুলি থেকে যা বেরিয়ে এসেছিল তা হল-- পরিযায়ী পাখিদের চোখের রেটিনায় 'ম্যাগনেটিক্যালি সেনসিটিভ' এক ধরনের প্রোটিন থাকে, যার নাম 'ক্রিপ্টোক্রোমস'। যে-প্রোটিনটি 'সিগন্যালিং' বা 'সেন্সিংয়ে'র কাজটি করতে সাহায্য করে পাখিদের। যার বলে তারা দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম। তবে এখন আরও নতুন তথ্য এসে যাওয়ায় পাখিদের পরিযান নিয়ে ধারণা আরও খানিকটা পরিষ্কার হল। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)