Iran Hijab Row: ইরানের হিজাব কাণ্ডে মৃত্যু ছাড়াল ৫০, `অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ` থেকে বিরত থাকার আবেদন রাষ্ট্রসংঘের
Iran Hijab Row: অসলো-ভিত্তিক ইরান মানবাধিকারের সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের উত্তর গিলান প্রদেশের রেজভাশাহর শহরে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ৬ জন মারা গিয়েছেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইরানে হিজাব-কাণ্ড ক্রমশ বড় হচ্ছে। বাড়ছে প্রতিবাদীদের মৃত্যুর সংখ্যা। ইরানের পথে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বন্ধ করতে গুলি চালিয়েছে পুলিস, করেছে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্য়াসও ছুঁড়েছে। ইরানে হিজাব-কাণ্ডে পুলিসের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে প্রতিবাদমিছিলে পা মিলিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। তাতে এখনও পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি জনের প্রাণ গিয়েছে। অসলো-ভিত্তিক ইরান মানবাধিকারের সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের উত্তর গিলান প্রদেশের রেজভাশাহর শহরে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ৬ জন মারা গিয়েছেন। এদিকে বিক্ষোভ সামাল দিতে ইরানের একাধিক জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ফুঁসছে ইরান। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এতে উদ্বিগ্ন সমস্ত মহলই। উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সচিব আন্তোনিয়ো গুয়েতেরস। তিনি ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সরকার-বিরোধী প্রতিবাদ দমন করতে গিয়ে তারা যেন অপ্রয়োজনীয় ভাবে বেশি শক্তি খরচ না করে!
আরও পড়ুন: War Crimes: ইউক্রেনে রুশবাহিনী বড় ধরনের যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছে, জানিয়ে দিল রাষ্ট্রসংঘ...
ইরানে হিজাব-কাণ্ডের বিক্ষোভকারীদের উপরে চলেছিল গুলি! মৃত্যু হয়েছিল ৫ প্রতিবাদীর। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরেই সোশ্যাল মিডিয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছিল নেটপাড়া। বিক্ষোভের আঁচে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা ইরান। বিক্ষোভাকারীরা ক্রমশ ঝাঁজ বাড়াচ্ছিলেন। বিক্ষোভাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিস কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে মহিলাদের স্বাধীনতা ও জীবনযাপন নিয়ে স্লোগান তুলছেন। প্রতিবাদের অঙ্গ হিসেবে অনেকেই তাঁদের হিজাব খুলে ফেলেছিলেন। এমনকি, অনেক ইরানি মহিলা তাঁদের চুলও কেটে ফেলেছিলেন, আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন হিজাবে। এই সব ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মাহসার মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। কুর্দিস্তান অঞ্চলের সাকেজ শহরে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালিয়েছিল নিরাপত্তাবাহিনী। গুলিতে মারা গিয়েছিলেন ২ জন। দিভানদারেহ শহরে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে আরও ২ জনের প্রাণ গিয়েছিল। আরেকজন মারা গিয়েছিলেন কুর্দিশ অঞ্চলের দেহগোলানে।
ইরানের এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সূত্রপাত মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে। পশ্চিম ইরানের সাকেজ শহরের বাসিন্দা ২২ বছরের এই তরুণী। পরিবারের সঙ্গে তিনি তেহরানে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই যাত্রাপথেই নীতিপুলিসের হাতে পড়েন তিনি। ইরানে মহিলাদের নিয়ে কঠোর পোশাকবিধি রয়েছে। যার মধ্যে যথাযথ ভাবে হিজাব পরা অন্যতম। এর উপর কয়েক সপ্তাহ আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি এ নিয়ে কঠোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। পোশাকবিধি না মানলে কঠোর শাস্তির নিদানও দিয়েছিলেন তিনি। আর তারই জেরে শেষমেশ ঘটল এই বিপদ। দেশের পোশাকবিধি মেনে হিজাব পরেননি মাহসা আমিনি। এই 'অপরাধে' নীতিপুলিস তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিসি হেফাজতেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছিলেন, পুলিসি হেফাজতে তাঁর উপর অত্যাচার করা হয়েছে। আর এর জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। তবে সেই দাবি অস্বীকার করে পুলিসের তরফে জানানো হয়েছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন আমিনি।