ওয়েব ডেস্ক: সংখ্যালঘু উন্নয়নে সচেষ্ট রাজ্য। ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রতিবছর দেওয়া হচ্ছে ঢালাও বৃত্তি। কিন্তু, সেই টাকা সঠিক লোকের কাছে পৌছচ্ছে কি? বৃত্তির টাকা আদৌ কি পাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা? অভিযোগ উঠছিল নানা প্রান্ত থেকে। খতিয়ে দেখতে আমরা বেছে নিলাম উত্তর দিনাজপুরে। এই জেলার করণদিঘি ব্লকের লাহুতাড়া ১ অঞ্চলের সাবধান হাইস্কুল। পরিসংখ্যান বলছে, এই স্কুলের ৭০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী সংখ্যালঘু। এখানেই সামনে উঠে এল পুকুর চুরি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চলুন পরিচয় করি সাবধান হাইস্কুলের এক হস্টেলার ছাত্রীর সঙ্গে। সরকারি ওয়েবসাইট বলছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে প্রি ম্যাট্রিক স্কলারশিপের আওতায় ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন রেফুল খাতুন। আমরা পৌছে গেলাম মোহনপুরে রেফুলের বাড়িতে। ওমা অবাক কাণ্ড। হস্টেল তো দূরস্থান। কোনওদিন স্কুলেই যাননি রেফুল। বছর চুয়ান্নর রেফুল ঠিকঠাক কানেও শোনেন না। পাশ থেকে রেফুলের বোন জানালেন, সরকারের কাছ থেকে কোনও স্কলারশিপই পাননি দিদি।  


আরও পড়ুন কেন খুন হলেন আকাঙ্ক্ষা? কীভাবে তাঁকে খুন করলেন সঙ্গী উদয়ন?


এবার আমাদের গন্তব্য ওই এলাকারই মাছমারি মোড়। সরকারি ওয়েবসাইট বলছে, আব্দুল মান্নানের ছেলে আলাউদ্দিন সাবধান হাইস্কুলের হস্টেলার। ২০১৬-র ১৯ শে মার্চ সরকারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা বৃত্তি পেয়েছেন। অথচ, টাকা পাওয়ার কথা ঘুনাক্ষরেও জানতেন না আলাউদ্দিন। আমরা জানানোর পর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। বললেন, কোনওদিন পড়াশোনার ধারে পাশেও ঘেঁসেননি তিনি। 


দেখলেন তো। এঁদের মতোই আরও একজন হলেন ইয়ার মহম্মদ। সরকারি হিসেব বলছে, ২০১৬ ফেব্রুয়ারিতে সাবধান স্কুলের হস্টেলার হিসাবে ১০ হাজার টাকা বৃত্তি পেয়েছেন ইয়ার মহম্মদ। কিন্তু, হাজার খোঁজাখুজি করতেও ইয়ারকে ধরতে পারিনি আমরা। দেখা হয়ে গেল, তার মেয়ে আমিনার সঙ্গে। আমিনা সাবধান হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। স্পষ্ট জানাল, হস্টেল তো দূরঅস্ত, বাবা কোনওদিনই স্কুলে যাননি। একই কথা বললেন ইয়ার মহম্মদের স্ত্রীও।


আরও পড়ুন এবার হোয়াটস অ্যাপে টাইপ না করেই চ্যাট করুন!


দিনে দুপুরে এমন পুকুর চুরি চলছে কী করে? ৩০ থেকে ৫৪ বছর বয়সী যুবক-প্রৌঢ় কীভাবে ঢুকে পড়ছেন সাবধান হাইস্কুলের হস্টেলের বৃত্তি তালিকায়? প্রধানশিক্ষক কি কিছুই জানেন না? তাঁর বাছাই করা তালিকা মাফিকই তো সরকার বৃত্তি দিচ্ছে। তাহলে? কী বলছেন প্রধানশিক্ষক আরশেদ আলি? ক্যামরার সামনে তিনি মানছেন তাঁর স্কুলে হস্টেলই নেই। তবে? প্রধানশিক্ষক বলছেন, তাঁর স্কুলে হস্টেলই নেই। তারপরও কী করে হোস্টেলার হিসাবে সাবধান হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি মঞ্জুর হচ্ছে? কী বলছেন ব্লকের মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার?


প্রধানশিক্ষক মানছেন হস্টেল নেই। মাইনরিটি ডেভলপমেন্ট অফিসার বলছেন, প্রধানশিক্ষকের বাছাই করা তালিকা অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে বৃত্তি। তাহলে গলদটা কোথায়? গ্রামের মানুষ অভিযোগের আঙুলটা তুলছেন প্রধানশিক্ষক আর স্কুলেরই আরেক প্যারাচিটার ফাইজুল রহমানের দিকে। যিনি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক আহ্বায়কও বটে। সত্যিটা কী? কার নির্দেশে চলছে এমন পুকুর চুরি?