`গায়ের জোরে জমি দখল`, ভাঙড়ে ইন্ধন দিচ্ছে লালগড়-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠন?
শাসকের গোষ্ঠী রাজনীতির সূত্র ধরে আন্দোলন। পরে সেই আন্দোলনের রাশই অন্য হাতে। ভাঙড়ে এখন বাইরের নানা সংগঠন। পুলিসকে গ্রামে ঢুকতে বাধা। গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ। জনতা-পুলিস সংঘর্ষে রণক্ষেত্র এলাকা। সব মিলিয়ে ভাঙড়ে জমি আন্দোলনের সেই চেনা ছবি।
ওয়েব ডেস্ক: শাসকের গোষ্ঠী রাজনীতির সূত্র ধরে আন্দোলন। পরে সেই আন্দোলনের রাশই অন্য হাতে। ভাঙড়ে এখন বাইরের নানা সংগঠন। পুলিসকে গ্রামে ঢুকতে বাধা। গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ। জনতা-পুলিস সংঘর্ষে রণক্ষেত্র এলাকা। সব মিলিয়ে ভাঙড়ে জমি আন্দোলনের সেই চেনা ছবি।
গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ। বাঁশ-লাঠি হাতে পুলিসের বিরুদ্ধে ব্যারিকেড। রাস্তার এক দিক থেকে ইট। অন্যদিক থেকে কাঁদানে গ্যাস। লাউহাটি মোড় থেকে হাড়োয়া মেন রোড বরাবর নানা জায়গায় ফেলা হয় গাছের গুঁড়ি। আশপাশের তিরিশ-পঁয়ত্রিশটি গ্রামের রাস্তাও একই কায়দায় অবরোধ করা হয়। উদ্দেশ্য, পুলিসকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাব স্টেশনের জন্য হাইটেনশন লাইনের তার টানা যাবে না। এই দাবিতে আন্দোলন। পুলিসের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ। রণক্ষেত্র ভাঙড়। কারণটা বুঝতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে কয়েকটা বছর। ২০১৩ সালে ভাঙড়ে সাব স্টেশনের জন্য জমি নেওয়া শুরু হয়। তখন এলাকায় একছত্র দাপট ছিল ভাঙড় দু-নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলামের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আরাবুল সেসময় গায়ের জোরে জমি দখল করে নেন।
এলাকায় কান পাতলে শোনা যায়, বিদ্যুতের সাব-স্টেশনে কাঁচামালের সিন্ডিকেটও বকলমে চালাতেন আরাবুলই। কিন্তু, গত বিধানসভা ভোটে
তৃণমূলের টিকিটে রেজ্জাক মোল্লার জয়, উল্টে দেয় সব হিসাব। রেজ্জাক মন্ত্রী হতেই বদলে যায় ভাঙড়ের রাজনীতির সমীকরণ। আরাবুল বিরোধী নান্নু হোসেন-ওহিদুল ইসলামরা ঝোঁকেন রেজ্জাক ক্যাম্পের দিকে। একসময় আরাবুলের দখলে থাকা এলাকায় প্রভাব বাড়াতে শুরু করেন নান্নু-ওহিদুলরা।
ভাঙড়ে কান পাতলে শোনা যায়, সাব স্টেশন নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তাঁর বিরোধীরা আরাবুলকে কোণঠাসা করার সুযোগ পেয়ে যান। আন্দোলন শুরু করে জীবন-জীবিকা-বাস্তুজমি বাঁচাও কমিটি।
স্থানীয় স্তরে শাসকের গোষ্ঠী রাজনীতি যে আন্দোলনে ইন্ধন জোগায়, তা এখন নিয়েছে অন্য চেহারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে বাইরের বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে যাদবপুরের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। রয়েছে এমন কয়েকটি সংগঠন যারা লালগড় এবং নন্দীগ্রামের আন্দোলনেও সক্রিয় ছিল।
রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পুলিসকে বাধা। আরাবুল বাহিনীর বিরুদ্ধে পুলিসের উর্দি গায়ে মারধরের অভিযোগ। বাসিন্দারা কাঠগড়ায় তুলছেন শাসককে। সব মিলিয়ে ভাঙড়ের বুকে জমি আন্দোলনের পুরনো ছবি।