ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন সালকিয়ার অরূপ ভাণ্ডারী। পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। প্রতিবাদীর এই পরিণতি এখন আর নতুন নয়। রাজ্যবাসীর গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, পাড়ায় পাড়ায় সমাজবিরোধীর শাসনই এখন নিয়ম। আর পুলিসের ভূমিকা নীরব দর্শকের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সাদা কাপড়ে ঢাকা নিথর দেহ। বন্ধুদের থমথমে মুখ।পরিবারে কান্নার রোল। এ ছবি দেখে আর শিউরে উঠি না আমরা। আমরা জানি, অরূপ ভাণ্ডারির হত্যা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এখন এটাই নিয়ম। প্রতিবাদ করলেই জুটবে এমন শাস্তি।


বরুণ বিশ্বাস:
সমাজকে মহিলাদের বাসযোগ্য করার চেষ্টা করেছিলেন মিত্র ইনস্টিটিউশনের এই শিক্ষক। তাঁর আন্দোলনে জীবনের মূল স্রোতে ফিরেছেন বহু ধর্ষিতা। ধর্ষণকারীদের ঠাঁই হয়েছে গারদের ওপারে। ২০১১ সালের জুনে প্রত্যাঘাত করেছিল অন্ধকারের দুনিয়া। গুলি করে খুন করা হয় বরুণ বিশ্বাসকে। এখনও অধরা বিচার।
----------
তপন দত্ত:
জলা ভরাটের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন এই তৃণমূল কর্মী। ২০১১ সালের ছয়ই মে বালি রেলগেটের কাছে উদ্ধার হয় তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ। তথ্য প্রমাণের অভাব ছিল না। তবে অভিযুক্তের তালিকায় প্রভাবশালীর উপস্থিতি নিষ্ক্রিয় করে রাখল প্রশাসনকে। বিচারের দাবিতে পরিবারের আন্দোলন এখনও চলছে।
-----------
রাজীব দাস:
২০১১ সালের ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি। মদ্যপ দুষ্কৃতীদের হাত থেকে দিদি রিঙ্কুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। বারাসতে জেলাশাসকের দফতরের ঢিল ছোড়া দূরত্বে ঘটেছিল পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড। কিন্তু, প্রশাসনের কানে পৌছয়নি রিঙ্কুর আর্ত চিত্‍কার।
-------------
অসীম দাম-
২০‍১২ সালের মার্চে দোলের দিন, বিসরপাড়ায় খুন হন কলকাতা পুলিসের কনস্টেবল অসীম দাম। কিছু মদ্যপের হাত থেকে নিজের ভাইঝিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
-----------
সৌরভ চৌধুরী-
এলাকায় দুষ্কৃতী তাণ্ডবের প্রতিবাদে আওয়াজ তুলেছিলেন বামনগাছির কলেজ ছাত্র সৌরভ চৌধুরী। মদ-জুয়ার ঠেক বন্ধ ও মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য একজোট করেন এলাকাবাসীকে।  এই অপরাধে কুপিয়ে খুন করা হয় সৌরভকে। দুহাজার চোদ্দর পাঁচই মে রেললাইনে উদ্ধার হয় তার খণ্ডবিখণ্ড দেহ।
-----------
পার্থ ঘোষ, গৌরী ঘোষ-
নৈরাজ্যের তাণ্ডব থেকে নিরাপত্তা নেই বুদ্ধিজীবী দম্পতিরও। সরস্বতীপুজো উপলক্ষ্যে তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হলেন পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ। তিন ঘণ্টা ধরে বাড়িতে চলল ইটবৃষ্টি। সংবাদমাধ্যম সরব হওয়ার পর সক্রিয় হল পুলিস।


এভাবেই প্রতিদিন শহরে, গ্রামে, মফঃস্বলে প্রতিবাদের মাসুল গুণছেন অসংখ্য মানুষ। কখনও স্থানীয় ক্লাবের হুল্লোড়, কখনও পুজো কমিটির লাগামছাড়া উল্লাস কখনও সিন্ডিকেটের অন্যায্য দাবি। কারণ যাই হোক, প্রশ্ন তুললেই মার। রুখে দাঁড়ালেই প্রহার। আর নির্বিকার শাসকের ছায়ায় থাকা পুলিস।