লাইন পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনার বলি, দুর্ঘটনায় ২ গ্যাংম্যানের মৃত্যু
ওয়েব ডেস্ক: ওদের হাতেই আপনার-আমার নিরাপত্তা। রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ওঁরা। ওঁরা গ্যাংম্যান। কিন্তু আমাদের নিরাপদ যাত্রা উপহার দিতে গিয়ে হামেশাই রেলের চাকার নীচে জীবন যায় ওঁদের।
রেলের ট্র্যাক ঠিক আছে কিনা, কোনও ফাটল আছে কিনা, ট্র্যাকের ওপর থেকে পাথর সরানো, দুটো লাইনের মধ্যে দূরত্ব ঠিক আছে কিনা, নাটবল্টু সঠিকভাবে লাগানো আছে কিনা। এইসব দেখাই গ্যাংম্যানদের কাজ। অথচ যাত্রী নিরাপত্তার চাবি যাদের হাতে, সেই গ্যাংম্যানদেরই বারবার প্রাণ যায় ট্রেনের চাকায় তলায়।
বৃহস্পতিবারও লিলুয়া স্টেশনের কাছে লাইন পরীক্ষার সময় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ যায় ২ গ্যাংম্যানের। উত্তম মাজি আর রাজু বাউল। ধাক্কা মারে হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকাল। এই ঘটনাতেই ফের প্রশ্নের মুখে গ্যাংম্যানদের নিরাপত্তা। কেন বারবার দুর্ঘটনা? কেন বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি? লাইনে কাজ করার সময় বেশকিছু সতর্কতা গ্যাংম্যানরা নিয়ে থাকেন।
১) গ্যাংম্যানদের কাজ করার সময় ২জন কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনের গতিবিধির নজরদারির ওপর।
২) দীর্ঘক্ষণ কাজ হলে রেললাইন ব্লক করা হয়। লাল ফ্ল্যাগ টাঙানো হয়।
৩) গার্ডদের নোটিস দেওয়া হয়।
৪) ট্রেন আসছে কিনা দেখার দায়িত্বে যে ২ কর্মী থাকেন, হঠাত্ ট্রেন এসে পড়লে হুইশেল বাজিয়ে সতর্ক করেন তাঁরা।
৫) গ্যাংম্যানদের ফিটনেস পরীক্ষাও করা হয় নিয়মিত।
কর্মী বাড়িয়ে আর সচেতনতা বাড়িয়ে দুর্ঘটনা আদৌ কমবে কি? এর মধ্যে আরও বিপজ্জনক তথ্য দিয়েছেন হাওড়া শাখার DRM। বেআইনিভাবে লাইন পারাপারের এই চেনা ছবি কোনও ভাবেই বদলানো যায়নি। হাওড়া শাখার DRM বলছেন প্রতি মাসে শুধু হাওড়াতেই বেআইনিভাবে লাইন পারাপার হতে গিয়ে ৭০ থেকে ৮০ জনের প্রাণ যায়। লাইন পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনার বলি কিম্বা কাজ করতে গিয়ে গ্যাংম্যানদের মৃত্যু। ২টি ঘটনাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সচেতনতা, প্রচার, শিক্ষা বা সতর্কতা কোন উপায়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব? এখনও উত্তরের খোঁজে রেল।