দুই মেয়েকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার মা
খুনি স্বয়ং মা। বীরভূমে মহম্মদবাজার জোড়াখুনে চাঞ্চল্যকর মোড়। দীর্ঘ জেরার পর পুলিস গ্রেফতার করেছে মৃত সুস্মিতা-পুষ্পিতার মাকে। তার সঙ্গে খুনে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিসের। পুলিস আটক করেছে মৃত দুই বোনের মামাকেও।
ওয়েব ডেস্ক: খুনি স্বয়ং মা। বীরভূমে মহম্মদবাজার জোড়াখুনে চাঞ্চল্যকর মোড়। দীর্ঘ জেরার পর পুলিস গ্রেফতার করেছে মৃত সুস্মিতা-পুষ্পিতার মাকে। তার সঙ্গে খুনে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিসের। পুলিস আটক করেছে মৃত দুই বোনের মামাকেও।
কুপুত্র যদ্যপি হয়, কুমাতা কদাপি নয়।... এই আপ্তবাক্য সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে দিলেন মহম্মদবাজারের অপর্ণা সাধু। খুনের প্রথম ২৪ ঘণ্টা সূত্র হাতড়ে বেড়ানোর পর, শেষপর্যন্ত একের পর এক জেরা থেকেই লিড পেয়ে যায় পুলিস।
শুরু থেকে অপর্ণা সাধু দাবি করছিলেন, তিনি বাড়ি ফিরে ঘরে ঢুকতেই দেখতে পান দুই মেয়ের দেহ। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে উল্টো তথ্য। সাধু পরিবারের এক প্রতিবেশীর বয়ান বদলে দেয় গোটা ছবিটাই। প্রতিবেশীর দাবি অনুযায়ী, পৌনে ৭টা নাগাদই বাড়িতে ঢুকে যান অপর্ণা সাধু। খুন হয়েছে এনিয়ে শোরগোল শুরু হয় সাড়ে ৭টা নাগাদ। তাহলে মাঝে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় বাড়ির মধ্যে কী হয়েছিল?
পুলিসের সন্দেহ, দুই মেয়েকে খুনে মায়ের সঙ্গী ছিল আরও একজন। এবার সেই দ্বিতীয় সন্দেহভাজনের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিস। এরই মধ্যে উঠে আসে, অপর্ণা সাধুর একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগও। যে আশ্রমে প্রায় রোজ যেতেন অপর্ণা সাধু, সেখান থেকে আটক করা হয় তার এক বান্ধবী সবিতা মাহারা ও চণ্ডীচরণ লাহাকে।
অপর্ণা সাধুর কলরেকর্ড ঘেঁটে পুলিসের অনুমান, এই চণ্ডীচরণ লাহার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তাঁর। এমনকি ঘটনার দিন সন্ধেবেলা চণ্ডীচরণ লাহাকে ফোনও করেন অপর্ণা সাধু। তার আগে ফোন করেন ভাই রামপ্রসাদ সাহাকে। রহস্য ঘনিয়েছে এদুটি ফোন নিয়েও।
খুনের দিন বিকেলে বাড়িতে কাজ করতে যান কাজের লোক অষ্টমী বাউড়ি। সেইসময় অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি তিনিও। এরপরও প্রশ্ন থাকছে, একই বাড়িতে থেকেও কেন কিছুই টের পেলেন না বাকি সদস্যরা? বাড়ির একেবারেই গা লাগোয়া প্রতিবেশীদের বাড়ি। তাঁরাও কোনও চিত্কার শুনতে পাননি। তবে কি খুনের আগে বেহুঁশ করে নেওয়া হয়েছিল সুস্মিতা-পুষ্পিতাকে? এড়ানো যাচ্ছে না এই সম্ভাবনাও।
ঘটনার ফরেন্সিক তদন্তে এদিন মহম্মদবাজারে যান সিআইডির এক আধিকারিক। রহস্যের জাল অনেকটাই কেটে গেলেও, এখনও উত্তর নেই বেশ কিছু প্রশ্নের। তারই খোঁজে ব্যস্ত পুলিস।