বর্ধমান কাণ্ড: পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল রাজিয়া, আলিমা
বর্ধমান বিস্ফোরণ কাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, রাজিয়া ও আলিমার জঙ্গি প্রশিক্ষণ হয়েছিল পাকিস্তানে। শুধু তাই নয়, সুন্দরবন দিয়ে নৌপথে বাংলাদেশ থেকে এদেশে প্রচুর অস্ত্র ঢুকেছে বলেও জানা গেছে। জঙ্গি যোগে উঠে আসছে সীমান্তবর্তী এলাকার একাধিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম। গ্রেনেড কারখানায় বিস্ফোরণ। তার থেকেই মিলল বিশাল এক জঙ্গি নেটওয়ার্কের ইঙ্গিত। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই খুলছে রহস্যের একের পর এর পরত। উঠে আসছে, জঙ্গিযোগের একের পর এক তথ্য। খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণস্থলে উদ্ধার সিমকার্ডের কললিস্ট খতিয়ে মিলেছে চট্টগ্রাম, মুম্বই, চেন্নাই ও কাশ্মীরে যোগাযোগের সূত্র।
বর্ধমান বিস্ফোরণ নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা রিপোর্টে। সে দেশের এক গোয়েন্দা কর্তাকে সূত্র করে ঢাকার একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বর্ধমানের ঘটনায় যুক্ত ভারতের ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, বাংলাদেশের জামাতুল মুজাহিদিন এবং পাকিস্তানে আল কায়দার শাখা আল জিহাদ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে অভিন্ন ইসলামিক রাষ্ট্র তৈরির আদর্শে হাত মিলিয়েছে এই তিনটি জঙ্গি সংগঠন।
এই জিহাদি আদর্শেই দীক্ষিত ছিল খাগড়াগড়ের ভাড়াবাড়িতে ডেরা গাড়া প্রত্যেক জঙ্গি। বাংলাদেশ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, দশ বছর আগে সেদেশে জামাতুল মুজাহিদিনের সদস্যপদ গ্রহণ করে আলিমা ও রাজিয়া। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে। ওয়াজিরিস্তানের শিকক এলাকায় রাজিয়া ও আলিমা শিখেছিল, হাতের নাগালে পাওয়া রাসায়নিক দিয়ে কীভাবে প্রাণঘাতী বিস্ফোরক তৈরি করা যায়। প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ফেরে তারা। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে জঙ্গিদমনে তত্পরতা শুরু হলে, সীমান্ত পেরিয়ে ফের ভারতে ঢুকে পড়ে রাজিয়া, আলিমা ও তাদের সঙ্গীরা। জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শে মগজধোলাইয়ের ঘটনায় উঠে আসে বেশ কিছু ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামও।
গত বছরের গোড়ায় নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহের সীমান্তবর্তী ওই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আসে বাংলাদেশের মৌলবাদী সংগঠন হেফাজত-এ-ইসলামির সংগঠকরা। বাংলাদেশে জামাত-এ-ইসলামি নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পর হেফাজত-এ-ইসলামির আড়ালেই কাজ চালায় জামাত নেতারা। তবে শুধুমাত্র স্থলসীমান্ত নয়, সন্ত্রাস আমদানিতে কার্যত অরক্ষিত জলপথকে ব্যবহারের সুযোগও ছাড়েনি জঙ্গিরা। বাংলাদেশ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কয়েকমাস আগেই চট্টগ্রাম থেকে জলপথে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র সুন্দরবনের খাঁড়িতে এসেছিল। সে অস্ত্র কোথায় গেল বা কী কাজে ব্যবহার হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।