Group Theatre Controversy: বিপন্ন গ্রুপ থিয়েটার? 'কেন্দ্রের গুণকীর্তন' না করলে বন্ধ কেন্দ্রীয় অনুদান!

Theatre: কিছুদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে সুমন মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন কেন্দ্র সরকারের তরফে বাংলার ১৮ টি দলের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি ছোট নাটিকা। যদি সেই নাটক মঞ্চস্থ না হয় তাহলে নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান।  মঙ্গলবার ব্রাত্য বসুও বললেন একই কথা। এই বিষয়ে কী বললেন সোহিনী সেনগুপ্ত, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, বিলু দত্ত, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়ের মতো নাট্যকর্মীরা? 

Edited By: সৌমিতা মুখার্জি | Updated By: Feb 13, 2024, 04:44 PM IST
Group Theatre Controversy: বিপন্ন গ্রুপ থিয়েটার? 'কেন্দ্রের গুণকীর্তন' না করলে বন্ধ কেন্দ্রীয় অনুদান!
প্রতীকী ছবি

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'ওই স্বৈরচারীর পদধ্বনি শোনা যায়?' আশঙ্কায় ছিলেন নাট্যকার সুমন মুখোপাধ্যায়। কিছুটা সেরকমই বিপত্তির মুখে বাংলা থিয়েটারের ১৮ টি দল(Theatre Group)? সম্প্রতি নাট্যকার সুমন মুখোপাধ্যায়(Suman Mukhopadhyay) জানিয়েছিলেন যে কেন্দ্র সরকারের তরফে বাংলার ১৮ টি দলের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি ছোট নাটিকা,যার ছত্রে ছত্রে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বন্দনা। যদি সেই নাটক মঞ্চস্থ না হয় তাহলে নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের(Central Government) অনুদান। মঙ্গলবার সেই কথাই ফের তুললেন নাট্যকার ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু(Bratya Basu)। 

আরও পড়ুন- Aditya Narayan: 'এত অহংকার কীসের?' ফ্যানকে মাইক দিয়ে মার, তুমুল বিতর্কে আদিত্য!

মঙ্গলবার নাটকটি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন ব্রাত্য বসু। পাশাপাশি তিনি লেখেন, 'কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, লোকসভা ভোটের আগে,পশ্চিমবঙ্গের সবকটি থিয়েটার দলকে এদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক ও গুণকীর্তন করা একটি ছোট নাটিকা পাঠিয়ে বলেছেন, এর অভিনয় সর্বত্র করতে হবে। অস্যার্থে, অভিনয়টি না করলে কেন্দ্রের পাঠানো মোটা অনুদান ও ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটার দলগুলি যেহেতু মূলত বামপন্থী সেকুলার, তাই আমরা আশা রাখতেই পারি, এই নির্লজ্জ প্রস্তাব তাঁরা সবাই ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করবেন'। 

নান্দীকারের নাট্যকর্মী ও অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত বলেন, 'অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে, এটা কোথাও লেখা নেই। আমাদের দল অর্থাত্ নান্দীকার এই নাটক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগেও অনেক ইস্যু নিয়ে নাটক করার প্রস্তাব এসেছে, গ্রামে গিয়ে কাজ করতে বলেছে, সেটা কোনও ভুল বলে আমার মনে হয় না। আমার মনে হয় এই বিষয়টিতে রাজনৈতিক রঙ না দেওয়াই ভালো। আমাকে দিদি যতবার ডেকেছেন আমি গিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী ডাকলেও যাব। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার, যেটা করতে বলেন সেটা করব কারণ সরকারের একটা সম্মান আছে।'

আরও পড়ুন- Dev | Mamata Banerjee: 'মানুষকে ভালো রাখতে দিদির উপর বিশ্বাস রাখলাম...' আরামবাগে একই মঞ্চে মমতা-দেব!

দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'ব্রাত্য বসু যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক। আমি এই ঘটনায় বিস্মিত। আমাদের একটি নাটক পাঠানো হয়েছে সেখানে মূলত কেন্দ্র সরকার ও মোদী সরকারের গুণকীর্তন করা। সেখানে লেখা, তুমি এটা করতে বাধ্য। সুতরাং এটা একধরনের ভয় দেখানো। ভয় দেখিয়ে লোকসভা ভোটের আগে একটা প্রচারমূলক নাটক সবাইকে দিয়ে করানো। সেটাকে আন্তর্জাতিক উত্সব, ভারত রঙ্গ মহোত্সবের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া, একটা কুত্সিত রাজনীতি। আমি এটা করবই না। আমি অনুদান পাই কিন্তু এটা আমি করব না কারণ এটা করলে আমার থিয়েটার করা মিথ্যে হয়ে যাবে। সেটার কোনও মূল্য থাকবে না।'

এই বিষয়ে কৌশিক সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, '২০১৭ সাল থেকেই আমার দলের অনুদান বন্ধ। বহুদিন আগে আমায় ব্ল্যাকলিস্ট করে দেওয়া হয়েছে। আমি এটার ব্যক্তিগত প্রচার করিনি কারণ ওদের অনুদান আটকালে আমার থিয়েটার করা আটকায় না। কিন্তু এবারে যাঁরা বিপদে পড়লেন তাঁদের জন্য এটা খুব বড় বিপদ। আগে অনুদান দেওয়া না দেওয়ার ব্যাপার ছিল কিন্তু এখন এটা শর্ত। কেন্দ্রীয় সরকার অনুদান দিচ্ছে মানে ভোটের প্রচার করতে হবে। এই অনুদান কংগ্রেস আমলে তৈরি, কিন্তু ওদের আমলে কোনও নির্দেশ আসত না। এখন নাটক দিয়েই দেওয়া হচ্ছে। একটা নয়, অপশনে একটা ধার্মিক নাটকও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি শেষে একটাই কথা বলতে চাই যে আমরা যেমন সন্দেশখালির প্রতিবাদ করছি সেরকমই আমাদের মাথায় রাখতে হবে, কেন্দ্রে যে সরকার আছে, সেও একই রকম ফ্যাসিস্ট।'

আরও পড়ুন- Nusrat Jahan: 'আমাদের কাজ আগুন নেভানো, ঘি দেওয়া নয়', সন্দেশখালি নিয়ে সরব নুসরত

মুখোমুখির অন্যতম মুখ বিলু দত্ত বলেন, 'সারা দেশের সমস্ত গ্রুপ থিয়েটার দলকে বলা হয়েছে এই নাটক মঞ্চস্থ না করলে অনুদান নাকি বন্ধ করে দেবে। আমি তো বুঝতে পারছি না অনুদান কী তাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে দেন নাকি আমাদের ট্যাক্সের টাকায়। পুরো নাটকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্তুতি। আর কতবার নিজেদের প্রমাণ করতে হবে যে আমরা এতবছর ধরে গ্রুপ থিয়েটার করি। এটা তো পুরোটাই ভোটের প্রচার ছাড়া আর কিছু মনে করতে পারছি না'।

লোককৃষ্টির ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এই ঘটনা অনভিপ্রেত। শিল্পের স্বাধীনতা দরকার। এইভাবে কোনও কাজ করতে বাধ্য করা ঠিক নয়। যদি কেউ এই নাটক না করতে চান তাহলে তাঁকে বাধ্য করা ঠিক নয়। যদিও চিঠিতে অনুদান বন্ধের কথা বলা নেই কিন্তু এদের বিভিন্ন কাজের মধ্যে দিয়ে যা দেখা যায় তাতে এটা হলেও হতে পারে'।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 

.