Exclusive: বঙ্গের নেতাদের উপরে ভরসা নেই? রাজ্যে আসছে অমিত-বাহিনী
রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ভোটের কাজ পরিচালনা করবে দিল্লির এই দল। কৌশল রচনা থেকে বিরোধীদের প্রচার- প্রতিটি বিষয়েই অমিত শাহকে অবগত করবেন তাঁরা।
অঞ্জন রায়
পশ্চিম বাংলায় ২২টি আসন জেতার টার্গেট করেছে বিজেপি। লোকসভা ভোটে মোদীর প্রত্যাবর্তন সুনিশ্চিত করতে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রধানমন্ত্রীর সেনাপতি। আর সেজন্যই বঙ্গ নেতাদের উপরে ভরসা না রেখে নামাতে চলেছেন নিজের 'সৈন্যদল'। প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে থাকবে অমিত শাহের ঠিক করে দেওয়া ৩০ জনের দল। বৃহস্পতিবার বিজেপির পদাধিকারী বৈঠকে তা স্পষ্ট করলেন রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বৈঠকে কৈলাসের ইঙ্গিত, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ভোটের কাজ পরিচালনা করবে দিল্লির এই দল। কৌশল রচনা থেকে বিরোধীদের প্রচার- প্রতিটি বিষয়েই অমিত শাহকে অবগত করবেন তাঁরা। অনেকেই মনে করছেন, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে ঠুনকো করে নিজের হাতেই ভোট পরিচালনার রাশ রাখতে চান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। প্রশ্ন উঠছে, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের উপরে কি ভরসা করতে পারছেন না বিজেপির চাণক্য? উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই বাংলার নেতাদের কাজকর্মে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। হাতের কাছে একাধিক ইস্যু পেয়েও বিজেপি বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বলে মনে করেন দলের সাধারণ সম্পাদক।
অমিতের বিশেষ দল কী কাজ করবে? কারা থাকবে এই দলে? সূত্রের খবর, এই দলের ম্যানেজমেন্টের কৃতী থেকে স্থানীয় নেতারা থাকবেন। কে কী কাজ করছেন থেকে বিরোধীরা প্রচারে কী কৌশল নিয়েছেন, তার রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠাবে এই দল। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পিছনেও রয়েছে ম্যানেজমেন্টের কৃতীদের ভূমিকা। আদিবাসী এলাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিলেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে বিজেপির রণকৌশল। বলে রাখি, সম্প্রতি রাজ্যের সহ-সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয়েছে এবিভিপি নেতা কিশোর বর্মনকে। সরাসরি দিল্লি থেকে রাজ্যের সংগঠনের পদে এসেছেন তিনি। এক্ষেত্রেও ছিল অমিত শাহের 'অবদান'।
প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য নেতাদের থেকে রিপোর্ট না চেয়ে কেন আলাদা দলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখবেন অমিত শাহ? দিলীপ-মুকুলদের উপরে কি তাঁর ভরসা নেই? তিনি কী মনে করছেন, রাজ্য নেতাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ রিপোর্ট মিলবে না? সবটাই পরিষ্কার হবে পুজো মেটার পর। কারণ পুজোর পরই চলে আসবে অমিতের সেনা। অনেকেই বলছেন, বিশ্বস্ত সেনা ছাড়া যুদ্ধ জেতা অসম্ভব। ঠিক যেমন, নরেন্দ্রভাইকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সেনাপতি অমিত শাহ। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির অভাবনীয় ফলের পর অমিত শাহকে 'ম্যান অব দ্য ম্যাচ' আখ্যা দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। কারণ, উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘ দিন পড়ে থেকে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করেছিলেন শাহ। তার ফল মিলেছিল হাতেনাতে। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজপার্টিকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করতেই এবার বাংলায় আসছে অমিত-বাহিনী, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
আরও পড়ুন- মানব উন্নয়নে সূচকে একধাপ এগোল ভারত, শিক্ষা-চাকরিতে পুরুষ-মহিলা অসাম্য