দিলীপের 'মমতা প্রধানমন্ত্রী' মন্তব্যে বিহিত চাইতে অমিতকে নালিশ ক্ষুব্ধ কর্মীদের
অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির পালে যে অল্পবিস্তর হাওয়া বইছে, তা রুখতে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতিই।
অঞ্জন রায়
বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাইছেন বলে মন্তব্য করে কর্মীদের রোষের মুখে দিলীপ ঘোষ। শনিবার দুপুরে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে একান্ত সাক্ষাত্কারে দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই খবরটি প্রকাশিত হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের কর্মীরা। তাঁদের প্রশ্ন, কেন এমনটা বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? শুধু প্রশ্ন করেই থেমে থাকেননি বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা অমিত শাহের কাছেও নালিশ করেছেন।
দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বকুনি জুটেছিল দিলীপ ঘোষের। সে বার ফিরহাদ হাকিম মেয়র পদে বসাতে পুর সংশোধনী বিল পাশ করেছিল তৃণমূল। বিধানসভায় সেই বিলে সমর্থন দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা ওয়াকআউট করেছিলেন। এবার আরও বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন দিলীপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ''ওনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। তাঁর সাফল্যের উপরে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্য নির্ভর করছে। উনি সুস্থ থাকলে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ওনার কাছে সে সুযোগ আছে। সিপিএমের কারণে জ্যোতিবাবুকে ফসকে ফেলেছি। এর আগে প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, এবার বাঙালি প্রধানমন্ত্রী দরকার''। বিজেপি থেকেও তো বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? দিলীপের জবাব, এখনই সেই সুযোগ নেই।
দিলীপের এই বক্তব্যের পর দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ- বিজেপি কর্মীদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন জায়গায় কর্মীদের রক্ত বইছে, সে সব ভুলে গেলেন দিলীপ ঘোষ? আর এক পক্ষ বলছে, দিলীপবাবুর এই বক্তব্য নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে বাম-কংগ্রেস শিবির। দিদিভাই-মোদীভাই বলে প্রচার করেন তাঁরা। সেই প্রচারেই হাওয়া দিলেন দিলীপ ঘোষ। ইতিমধ্যেই ফেসবুকের দেওয়ালে ঘোরাফেরা করছে, 'বিজেপি-তৃণমূল সেটিং স্পষ্ট'। আর একইসঙ্গে কর্মীদের আত্মবিশ্বাসও ধাক্কা খেল।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির পালে যে অল্পবিস্তর হাওয়া বইছে, তা রুখতে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতিই। অমিত শাহের কাছে এব্যাপারে বিহিত চেয়ে নালিশ করেছেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু বিহিত কী? লোকসভার আগে দিলীপ ঘোষকে সরানো একপ্রকার অসম্ভব। তা অনেকটাই ঝুঁকির। অতঃকিম, ২০১৯ সালের আগে তৃণমূল তো বটেই, বাম-কংগ্রেস শিবিরের হাতেও অস্ত্র তুলে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন- অনাথ ৪ কুকুর শাবককে স্তন্যপান করাচ্ছে আর এক মা, দেখুন ভিডিয়ো