মৃত্যুর হাত ধরে নতুন জীবনদানের স্বপ্ন দেখেছে শোভনা সরকারের পরিবার
মাকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করেছেন চিকিত্সকরা। কিন্তু সেই মৃত্যুর ধাক্কায় ভেঙে পড়েননি ছেলে। মৃত্যুর হাত ধরে নতুন জীবনদানের স্বপ্ন দেখেছে শোভনা সরকারের পরিবার। বাধা কম ছিল না। পারিবারিক বিপর্যয়, লালফিতের ফাঁস, পরিকাঠামোর অভাব। কিন্তু সব হার মেনেছে শোভনার পরিবারের জেদ আর সাহসের কাছে।
ওয়েব ডেস্ক: মাকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করেছেন চিকিত্সকরা। কিন্তু সেই মৃত্যুর ধাক্কায় ভেঙে পড়েননি ছেলে। মৃত্যুর হাত ধরে নতুন জীবনদানের স্বপ্ন দেখেছে শোভনা সরকারের পরিবার। বাধা কম ছিল না। পারিবারিক বিপর্যয়, লালফিতের ফাঁস, পরিকাঠামোর অভাব। কিন্তু সব হার মেনেছে শোভনার পরিবারের জেদ আর সাহসের কাছে।
তখনও থামেনি হৃতপিণ্ডের লাবডুব। কাজ করছে শরীরের অন্য অঙ্গও। তবে নিদান দিয়ে দিয়েছেন চিকিত্সকরা। শোভনা সরকার ব্রেন ডেড। পরিবারের সামনে দুটো পথ খোলা ছিল। এক মৃত্যুকে মেনে নেওয়া। নয়তো মরণাপন্ন শোভনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা। মায়ের মৃত্যু মেনে নিয়েছেন ছেলে প্রসেনজিত্ সরকার। কিন্তু সেই মৃত্যুর হাত ধরেই উদ্যোগ নতুন জীবনদানের।
সোমবারের রাত কলকাতার মেডিক্যাল মানচিত্রে একটা মাইলফলক। কিন্তু তাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে তিলোত্তমার একটি পরিবার। তাঁদের মানবিকতা সাহস, মনের জোর এবং উদার মানসিকতা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। বাইরে থেকে আর পাঁচটা পরিবারের সঙ্গে কোনও ফারাক নেই। শোভনা সরকারের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্তা। সোলার পাওয়ার নিয়ে কাজ করেন ছেলে প্রসেনজিত্। চার বছর আগে বাড়িতে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যায় তাঁর। সেই থেকেই অসুস্থ এরপর পার্কিনসনস এবং সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি।
গত বিশে জুন মাথায় তীব্র যন্ত্রণার কারণে তাঁকে ভর্তি করা পিয়ারলেস হাসপাতালে কিন্তু দ্রুত অবস্থার অবনতি হয়। ২৩ তারিখ চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন, শোভনা ব্রেন ডেড।
কয়েক বছর আগে চক্ষু প্রতিস্থাপনের ফলে দৃষ্টি ফিরে পান শোভনার এক আত্মীয়। দেহদানের ভাবনা সেই থেকেই। মায়ের মৃত্যুর পর সেই ইচ্ছেকেই সম্মান জানিয়েছেন ছেলে এবং পুত্রবধু। কোনও আপত্তি না করে এক কথায় সম্মতি দেন শোভনার স্বামী রবীন্দ্রকুমার সরকার। পারিবারিক বিপর্যয়, লাল ফিতের ফাঁস, সব অগ্রাহ্য করেছেন তাঁরা। এমনকি এই শহর মুখ ফিরিয়ে নিলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মাকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগও নিয়েছিলেন প্রসেনজিত্ সরকার।
দু-দুটি পরিবারকে নতুন করে বাঁচার পথে ফিরিয়ে এনেছেন প্রসেনজিত্-সঞ্চিতা। স্বপ্ন দেখিয়েছেন এই শহরের আরও অনেক মুমুর্ষকে। বিরল অঙ্গদানের নেপথ্যে থাকা এই বিরল পরিবারকে ২৪ ঘণ্টার কুর্ণিশ।