জনমোহিনী রাজ্য বাজেটে কল্পতরু অর্থমন্ত্রী

নতুন সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আর তার শুরুটাই হল পূর্বতন সরকারের দিকে আর্থিক পরিস্থিতির দায় চাপিয়ে। একই সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, সড়ক নির্মাণের মতো বিভিন্ন খাতে ব্যয়বরাদ্দও তুলে ধরলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

Updated By: Mar 23, 2012, 08:33 PM IST

নতুন সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আর তার শুরুটাই হল পূর্বতন সরকারের দিকে আর্থিক পরিস্থিতির দায় চাপিয়ে। একই সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, সড়ক নির্মাণের মতো বিভিন্ন খাতে ব্যয়বরাদ্দও তুলে ধরলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
কৃষি দফতরের জন্য তিনি বরাদ্দ করেছেন ৩১৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে কৃষি বিপণন দফতরের জন্যউ ১৫০.৪৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
 
রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে বাজেটে। বর্তমান বছরের ৮১৭.৮৭ কোটি টাকা থেকে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০৪৯ কোটি টাকা।
 
সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের পরিকল্পনা বরাদ্দ প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫৭০ কোটি টাকা।
 
অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণের ক্ষেত্রেও বরাদ্দ বাড়িয়ে ৪৪২.৬০ কোটি টাকা করেছেন অর্থমন্ত্রী।
 
উত্তরবঙ্গ, পার্বত্য অঞ্চল, জঙ্গলমহল এবং সুন্দরবন উন্নয়নেও ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে ২০০ কোটি, পার্বত্য অঞ্চলের দফতরের জন্য ১১৮.০৭ কোটি, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নে ২০৫.৬৩ কোটি এবং সুন্দরবন উন্নয়নে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
 
শিক্ষার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দ। স্কুল শিক্ষা দফতরের ব্যয় বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৭১৩.০৫ কোটি টাকা।
 
কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ করা হয়েছে ৪৪৪.২৪ কোটি টাকা।
 
পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে সড়ক নির্মাণে। এগারোটি পিছিয়ে পড়া জেলায় ১০৪৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার এবং ৮টি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
 
 
শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রেও বরাদ্দ বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ক্ষুদ্র শিল্প এবং বস্ত্র শিল্পে বরাদ্দ হয়েছে ২৮৬.২০ কোটি টাকা। বৃহত্ এবং মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে বাণিজ্য এবং শিল্প দফতরের পরিকল্পনা খাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
 
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ানো হয়েছে আর্থিক বরাদ্দ। কিন্তু, রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের কথা বারবার উল্লেখ করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আয়ের উত্সমুখ কী?
 
রাজ্য বাজেটে দামি গাড়ি, টিভি, মোবাইল সহ কয়েকটি বিলাসদ্রব্যের ওপর যুক্তমূল্য কর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। দেশি মদের ওপর বাড়ানো হয়েছে কর।
 
পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রবেশ করের প্রস্তাব রয়েছে এবারের বাজেটে।
 
জোর দেওয়া হয়েছে কর ব্যবস্থার সরলীকরণের ওপর। এর ফলে  সরকারের আয় বাড়লেও তা রাজস্ব ঘাটতি সামাল দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। 
 
অর্থমন্ত্রীর দাবি, চলতি আর্থিক বছরের শেষে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবর্ষে যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। 
 
তবে, বাড়তি ৬ হাজার কোটি টাকার সংস্থান কীভাবে হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি অর্থমন্ত্রী।
 
তাঁর মতে, আগামী বছরে মোট আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৯ কোটি টাকা।

.