সন্তানের গলার নলি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা দম্পতির, পরে দাদাকে ফোন করে বাঁচার আর্তি

তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অতীশ কিছুদিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটের কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।

Updated By: Sep 27, 2018, 12:32 PM IST
সন্তানের গলার নলি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা দম্পতির, পরে দাদাকে ফোন করে বাঁচার আর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদন:  স্বামীর সঙ্গে রাতে খাবার আগে বসে বিস্তর আলোচনা করেছিলেন, কীভাবে সন্তানকে খুন করলে তার কম ব্যাথা লাগবে। বালিশ চাপা দিয়ে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন স্বামী। কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না স্ত্রী। তার দাবি, তাতে তাঁদের সাত বছরের মেয়ের বেশি কষ্ট হবে।  এক নিমেশেই ছোট্ট মেয়েকে খুন করতে তার গলার নলি কেটে ফেলার বুদ্ধি দেন স্ত্রীই। না, এখানেই শেষ নয়, মেয়ের গলার নলি কাটার পর স্বামীকে বলেছিলেন যাতে তারও গলার নলি কেটে দেন তিনি। সবশেষে স্বামী যেন নিজের গলার নলি কাটেন। গোটা পরিকল্পনাটাই খাবার আগে বসে ছকে নিয়েছিলেন দম্পতি। খাবার পর প্ল্যান মাফিক কাজ করেন। কিন্তু সন্তান রক্তাক্ত অবস্থায় ছটছট করতে দেখে আর সহ্য করতে পারেননি মহিলা। তখনই ফোন করেন নিজের দাদাকে।

বুধবার রিজেন্ট পার্কের ২৪/৫ মুর অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে অতীশ  নস্কর, তাঁর স্ত্রী দোলা নস্কর ও তাঁদের  সাত বছরের মেয়েকে সন্তানের গলার নলি কাটা অবস্থায় উদ্ধার হয়। তিন জনই আশঙ্কাজনক অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।  অতীশ ও দোলার গলায়, হাতে গভীর ক্ষত রয়েছে। তাদের মেয়ের গলাতেও গভীর ক্ষত রয়েছে।

আরও পড়ুন: বনধের সকালে ভয়ঙ্করকাণ্ড, ঘরের ভিতর গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার দম্পতি ও শিশু

কিন্তু কেন এমনটা সিদ্ধান্ত নিলেন অতীশ ও দোলা?

তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অতীশ কিছুদিন ধরেই অার্থিক সঙ্কটের কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। একটি লোন নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু পাচ্ছিলেন না। মুর অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে, স্ত্রী, সন্তান আর মাকে নিয়ে থাকতেন অতীশ। তাঁদের সংসারে তেমন কোনও অশান্তির  আঁচ কেউই পাননি বলে জানান আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা।

দোলা পুলিশকে  জানিয়েছেন, ‘বালিশ চাপা দিয়ে মারার কথা বলেছিল অতীশ।  বলেছিলাম বেশি কষ্ট হবে।  তারপর গলা কেটে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করা হয়।  প্রথমে আমার গলা কাটে।  পরে ঘুমন্ত মেয়ের গলা কাটে।  শেষে নিজের গলা কাটে অতীশ।’ দোলার বয়ান শুনে স্তম্ভিত পুলিসও। অর্থনৈতিক সংকট এবং পারিবারিক অশান্তির জেরে শিশু কন্যাকে খুন করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় সন্তানকে ছটফট করতে দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। পাশেই তাঁর দাদার বাড়ি। দাদাকেই ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান দোলা।

পুলিস ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ফলমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ওই ছুরি দিয়েই আত্মঘাতী  হওয়ার চেষ্টা করেছেন অতীশ ও দোলা।

.