কোর্ট মিটিং ঘিরে জটিলতা, বাবুলকাণ্ডের পর প্রথমবার যাদবপুরে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যপাল

সমাবর্তনে কাদের ডিলিট-ডিএসসি দেওয়া হবে, তা নিয়েই আজ কোর্ট মিটিং ছিল যাদবপুরের। সেই মিটিংয়ে যোগ দিতেই আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন আচার্য ধনখড়। রাজ্যপালের আগমন উপলক্ষে আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সাদা পোশাকে পুলিস ঘুরতে দেখা যায়।

Reported By: শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় | Updated By: Oct 18, 2019, 01:12 PM IST
কোর্ট মিটিং ঘিরে জটিলতা, বাবুলকাণ্ডের পর প্রথমবার যাদবপুরে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যপাল

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাবুলকাণ্ডের পর প্রথমবার যাদবপুরে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিং ঘিরে তুঙ্গে উঠল জটিলতা। সমাবর্তনে কাদের ডিলিট-ডিএসসি দেওয়া হবে? সূত্রের খবর, প্যানেলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রথমে 'সহমত' হননি আচার্য ধনখড়। কর্তৃপক্ষের তৈরি তালিকা নিয়ে নিজের মত জানাননি রাজ্যপাল। রাজভবনে গিয়ে  আচার্য জগদীপ ধনখড় নিজের পছন্দের তালিকা পেশ করতে পারেন বলে শোনা যায়। কিন্তু অধ্যাপকরা দাবি করেন, রাজ্যপাল যাতে বৈঠকেই নিজের মত জানান। পরে কর্তৃপক্ষ মনোনীত ৪টি নামেই সম্মতি জানান আচার্য ধনখড়। 

বাবুল সুপ্রিয় কাণ্ডের পর আজ ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পা রাখলেন আচার্য জগদীপ ধনখড়। সামনেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব। সমাবর্তনে কাদের ডিলিট-ডিএসসি দেওয়া হবে, তা নিয়েই আজ কোর্ট মিটিং ছিল যাদবপুরের। সেই মিটিংয়ে যোগ দিতেই আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন আচার্য ধনখড়। রাজ্যপালের আগমন উপলক্ষে আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সাদা পোশাকে পুলিস ঘুরতে দেখা যায়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারা পুলিশ ডাকছে না। কিন্তু পুলিস নিজে থেকে কিছু করতে চাইলে করতে পারে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পাওয়ার পর এই প্রথম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এলেন রাজ্যপাল। তার ২ নম্বর গেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে রাজ্যপালের কনভয়। অরবিন্দ ভবনে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।

প্রসঙ্গত, রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত এই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই। এবিভিপি আয়োজিত নবীনবরণ উৎসবে যোগ দিতে এসে পড়ুয়াদের হাতে ঘেরাও হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর চুল টেনে, জামা ছিঁড়ে, তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়েও যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ের হাত থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধারে আসেন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হন। শেষমেশ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পড়ুয়াদের হাতেই ঘেরাও হয়ে থাকেন বাবুল সুপ্রিয়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ঘেরাও হয়ে থাকার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায় সব মহলে। উপাচার্যকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দরকারে পুলিসি সাহায্য নেওয়ার কথা বলেন তিনি। কিন্তু রাজ্যপালের পুলিসি সাহায্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন উপাচার্য। ক্যাম্পাসে পুলিস ডাকলে পরিস্থিতি আরও আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে বলে জানান তিনি। উপাচার্য রাজ্যপালকে বলেন, "আপনি পদত্যাগ করতে বলুন। পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিস ঢুকতে দেব না।" এরপরই মুখ্যসচিবকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন, ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তায় এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী

কিন্তু তারপরও ক্যাম্পাসের ভিতর বাবুল সুপ্রিয় ঘেরাও হয়ে থাকায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল ও নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। শেষমেশ তিনি নিজে এসে পড়ুুয়াদের ঘেরাটোপ থেকে বাবুলকে উদ্ধার করেন। এদিকে, সেদিন রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পা রাখতেই তাঁকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। পরে বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরনোর সময়ও দীর্ঘক্ষণ পড়ুুুয়াদের হাতে ঘেরাও হয়ে থাকে রাজ্যপালের গাড়িও। শেষে অন্য গেট দিয়ে রাজ্যপালকে কনভয়কে বের করে দেয় পুলিস।

.