সুর কাটল তৃণমূলে, বেসুরে বাজছে মুকুলিত ধ্বনি
তৃণমূলে-মুকুলে সুর কেটেছে বোঝাই যাচ্ছে। এতদিন যা ছিল চাপা এবার তা মুখ ফুটে বেরিয়ে আসছে।
কলকাতা: তৃণমূলে-মুকুলে সুর কেটেছে বোঝাই যাচ্ছে। এতদিন যা ছিল চাপা এবার তা মুখ ফুটে বেরিয়ে আসছে।
মুকুলকে CBI তলব থেকেই এই প্রকাশ্য বেসুরো যাত্রার সূত্রপাত।
সারদা মামলায় সিবিআই তদন্ত যত এগিয়েছে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল শিবিরে। একের পর এক গ্রেফতার হয়েছেন রজত মজুমদার, সৃঞ্জয় বসু, মদন মিত্ররা। ফাঁস যত চেপে বসেছে সিবিআইকে পাল্টা নিশানা করেছে ঘাসফুল শিবির। বিজেপির বিরুদ্ধে সিবিআইকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।দলনেত্রীর সুরই শোনা গেছে অন্যদের গলাতেও। তালিকাতেই ছিলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়।
পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে মমতা রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে IRCTC -সারদা চুক্তি প্রকাশ্যে আসার পর। চুক্তি বিতর্ক উঠতেই পরবর্তী রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের ইন্সট্যান্ট রিঅ্যাকশন ছিল- "ওই চুক্তি আমার আমলে হয়নি'
এই সময় থেকেই দলনেত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে নাম্বার টু-র। দলীয় সংগঠনে মুকুল রায়ের দাপট কমাতে ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে আনতে শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা স্ট্রাটেজি সাজান তৃণমূলের ক্রাইসিস ম্যানজারও। প্রথমবার যা প্রকাশ্যে আসে মুকুল রায়কে সিবিআই তলবের পর। সিবিআই ইস্যুতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দলীয় লাইন থেকে সরে এসে সহযোগিতার কথা বলেন মুকুল রায়।
এর কয়েকদিনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরায় বোমা ফাটান মুকুল ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী দত্ত।
এতদিন যা বলছিলেন হাতে কলমে করে দেখালেন শুক্রবার। দল বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও, সিবিআই দফতরের সামনে হাজির অনুগামীদের বিক্ষোভ না দেখানোর নির্দেশ দিলেন।
সাড়ে ৪ ঘণ্টা সিবিআইয়ের বাউন্সার সামাল দিয়ে বেরিয়েও সিবিআই ইস্যুতে নিজের অবস্থানে অনড় রইলেন মুকুল রায়। শনিবার কালীঘাটে বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিলেন। কিন্তু, সিবিআই ইস্যুতে বদলালেন না অবস্থান।
বেসুরো মুকুলকে নিয়ে তৃণমূলের টপ লিডারশিপের ভুরু কুচকোচ্ছে সন্দেহ নেই। কিন্তু, পোড়খাওড়া মুকুল পর্যন্ত নিজের অবস্থানটা ভাবেভাবেই বোঝাচ্ছিলেন। প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেননি। কিন্তু, এবার মুকুল-তৃণমূলে মতভেদ যেভাবে প্রকাশ্যে এনে দিলেন, তাতে দলের রক্তচাপ যে আরও খানিকটা বাড়ালেন তাতে সন্দেহ নেই।