ওষুধের মোড়কে মাদকপাচার, জেলের ডাক্তারকে জেরা করে উঠে এল চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর ২০১৪ সাল থেকে জেলের চিকিত্সকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন অমিতাভবাবু। দক্ষিণ শহরতলির নাকতলায় তাঁর প্রাসাদোপম বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাস তাঁর। ছেলে থাকে বিদেশে। অমিতাভবাবুর স্ত্রী পেশায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আলিপুর জেলে মাদক ও মোবাইল ফোন পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার চিকিত্সক অমিতাভ চৌধুরীকে জেরা করে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জেরায় ওই চিকিত্সক জানিয়েছেন, ওষুধের মোড়কে ভরে জেলে মাদক পাচার করতেন তিনি। মাদক পাচার হত ঠান্ডা পানীয়ে মিশিয়েও।
শুক্রবার রাতে ফাঁদ পেতে অমিতাভ চৌধুরীকে ধরেন কারা দফতরের শীর্ষকর্তারা। দীর্ঘদিন ধরেই আলিপুর জেলের ভিতর চলছিল মাদক ও মোবাইল ফোনের রমরমা। তল্লাশি চালালেই মিলছিল মুঠোমুঠো মোবাইল ফোন। এত ফোন আসছে কোথা থেকে হদিস পাচ্ছিলেন না কারাকর্তারা।
কসবায় মহিলা খুনে ময়দানে ফরেন্সিক দল, উঠে এল একাধিক নতুন তথ্য
কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রহস্যভেদ করতে মাস কয়েক আগে তদন্ত শুরু করেন কারা দফতরের পদস্থ কর্তারা। তখনই সন্দেহের তির ঘোরে জেলের চিকিত্সকের দিকে। আধিকারিকরা জানতে পারেন, নাইট ডিউটিতে আসার সময় সঙ্গে মাদক ও তোলাবাজির টাকা নিয়ে ঢোকেন অমিতাভবাবু। চিকিত্সক হওয়ায় তাঁকে তল্লাশি করতেন না কারারক্ষীরা। সেই সুযোগেই জেলের ভিতরে পাচারচক্রের রাজা হয়ে উঠেছিলেন স্বয়ং চিকিত্সকই।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর ২০১৪ সাল থেকে জেলের চিকিত্সকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন অমিতাভবাবু। দক্ষিণ শহরতলির নাকতলায় তাঁর প্রাসাদোপম বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাস তাঁর। ছেলে থাকে বিদেশে। অমিতাভবাবুর স্ত্রী পেশায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। এলাকায় ব্যাপক প্রতাপ অমিতাভবাবুর। গ্রেফতারির পরও তাঁর ভয়ে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে নারাজ পড়শিরা।
রবিবার অমিতাভ চৌধুরীর নাকতলার বাড়ির সামনে পৌঁছন জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি সুকান্ত মুখোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে দেখেন, ৪ তলা বাড়ির দরজায় ভিতর থেকে লাগানো তালা। সামনে লাগানো রয়েছে একাধিক উজ্জ্বল আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা। ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি কারও।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, নাইট ডিউটি করায় বিশেষ উত্সাহ ছিল অমিতাভবাবুর। সকালে সেলের দরজা খুললেই অমিতাভবাবুর কাছে হাজির হতেন বন্দিরা। সেখানেই মোটা টাকার বিনিময়ে সবার জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিতেন তিনি। তোলার টাকা বন্দির নামে জমা করে দিতেন জেলের ক্যান্টিনে।