বিধাননগরে তৃণমূলের ভোট লুঠের wikipedia

কোথাও বহিরাগত নামিয়ে তাণ্ডব। আবার কোথাও স্রেফ নিঃশব্দ বিপ্লব। এলাকার পালস বুঝে নরম-গরম কৌশলেই শনিবার বিধাননগর, রাজারহাটে বাজিমাত করল তৃণমূল।

Updated By: Oct 4, 2015, 04:14 PM IST
বিধাননগরে তৃণমূলের ভোট লুঠের wikipedia

ওয়েব ডেস্ক: কোথাও বহিরাগত নামিয়ে তাণ্ডব। আবার কোথাও স্রেফ নিঃশব্দ বিপ্লব। এলাকার পালস বুঝে নরম-গরম কৌশলেই শনিবার বিধাননগর, রাজারহাটে বাজিমাত করল তৃণমূল।

বহিরাগতদের তাণ্ডব। অবাধে ছাপ্পা। বেপরোয়া ভাঙচুর। শনিবারের ভোটযুদ্ধে রাজারহাট-বিধাননগর আগাগোড়া  তৃণমূলের দখলে। বিরোধীরা স্রেফ ভোঁ ভা।

অ্যাকশন প্ল্যান--

শাসকের দাপটের মাঝেও বিধাননগরে সক্রিয বিরোধীরা। কিন্তু রাজারহাট জুড়ে শুধুই ঘাসফুলের দাপট।  এলাকার পালস বুঝেই তাই পরিকল্পনা ছকেছিল তৃণমূলে

নির্বাচন হল কিনা গণতন্ত্রের উত্‍সব। আর উত্‍সবে অতিথি-অভ্যাগতরা আসবেন না তা কি হয়! ভোটের দিন তাই গোটা সল্টলেকেই অতিথি সমাগম!

এফডি ব্লক, তেত্রিশ নম্বর ওয়ার্ড, বিধাননগর

রাস্তার এক দিকে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে সারি সারি অটো। তবে, আর পাঁচটা অটোর সঙ্গে তফাত আছে। ভোটের সকালে এফডি ব্লকে তিন চাকার এই বাহনগুলি নামগোত্রহীন!

অতিথিরা এসেছেন অটো চড়ে। কোথা থেকে এসেছেন তা লুকিয়ে রাখতেই কি নাম্বার প্লেট তুলে দেওয়া হয়েছে? আর নাম্বার প্লেট ছাড়া এতগুলো অটো পুলিসের চোখেই বা পড়ছে না কেন? প্রশ্নগুলো মাথায় নিয়েই আবার ভোট কভার করতে নেমে পড়লেন আমাদের প্রতিনিধিরা।

ভোটের সকালে সল্টলেকের রাস্তায় ঘুরতে বেড়িয়েছেন অতিথিরা! লিড রোলে যে যুবকটিকে দেখছেন তাঁর নাম রানা দাস। এসেছেন সেই গারুলিয়া থেকে। একটু এগিয়ে বুথের ভিতর উঁকি দিতেই অন্য অতিথিদেরও দেখা মিলল। কেন তাঁরা এসেছেন, কী করছেন - সে প্রশ্ন অবান্তর। দেখা গেল বুথের ভিতরেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রানা দাস। মেজাজটা তাঁর বেশ কড়া। হুমকি দিয়ে বসলেন আমাদের।

এবি ব্লক, বিধাননগর

দেখা হয়ে গেল এই ওয়ার্ডের হেভিওয়েট প্রার্থী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ভোটের দিন এত অতিথি সমাগমে অতিষ্ঠ গৃহস্থরা তখন তাঁর কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন।

 

অনিন্দ্যবাবু বহিরাগতদের চিনতে পারছেন না! তাঁর পিছনেই কিন্তু দাঁড়িয়ে বেলেঘাটা থেকে সল্টলেক বেড়াতে আসা এক অতিথি!

পুলিসের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনেক অভিযোগ। তবে, এই একবার দেখা গেল লাঠিধারীরা খুব একটা অতিথি পরায়ণ নন।
ভোটে দিনভর বহিরাগতরা সল্টলেক দাপিয়ে বেড়ালেন। আমরা ক্যামেরাবন্দি করলাম তাঁদের। তবে, সেরা অতিথির সম্মান সকলকে টেক্কা দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন গারুলিয়ার রানা দাস।

 

 একচল্লিশ নম্বর ওয়ার্ড, বিধাননগর

আর সবশেষে দেখা মিলল ভিআইপি অতিথিদের! বেলা একটু গড়াতে হাজির হলেন সুজিত বসু-পরেশ পাল-অর্জুন সিং। কেউই সল্টলেকের ভোটার নন।

লোকসভা ভোটের নিরিখে বিধাননগরে বিজেপির কাছে পিছিয়ে তৃণমূল। গোদের ওপর বিষফোঁড়া সিন্ডিকেটরাজ আর গোষ্ঠীকোন্দল। বিধাননগর পুরভোট তাই এবার শাসক শিবিরের অ্যাসিড টেস্ট।

       
ভোটের আগে তাপস চ্যাটার্জিকে দলে টানা বুমেরাং হয়েছে। লালদুর্গে ফাটল ধরানোর বদলে বেড়েছে দলীয় কোন্দল। সিন্ডিকেটরাজের অভিযোগ উঠেছে ৩নং ওয়ার্ডের প্রার্থী ডাম্পি মণ্ডলের বিরুদ্ধে ।  ঘাসফুল শিবিরের আরেক কাঁটা  সিন্ডিকেট মাফিয়া ভজাই সর্দারের ছেলে ২৭ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রসেনজিত্‍ সর্দার। প্রসেনজিতকে প্রার্থী করায়  ক্ষোভ দলের অন্দরেই। অনুপম দত্তের সঙ্গে টক্করে চাপে ৪১ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও।

ঘরে-বাইরে চাপে জেরবার ঘাসফুল শিবির বিধাননগরে কোনও রিস্ক নিতে রাজি নয়।  অভিযোগ, ভোট ম্যানেজের জন্য বহিরাগতদের নিয়ে তৈরি হয়েছে মাস্টার প্ল্যান।

চারটি জায়গা থেকে সল্টলেক-রাজারহাট-নিউটাউনে লোক ঢোকানোর পরিকল্পনা হয়েছে।

উত্তর দমদম, হাবরা-অশোকনগর, ভাঙর ও ব্যারাকপুর। ভোটের দিন সকালে এই চার জায়গা থেকে বহিরাগতদের সল্টলেকে ঢোকানোর পরিকল্পনা পাকা।  কিন্তু কীভাবে?

কীভাবে অপারেশন?
অভিযোগ,  নির্বাচন কমিশনের নজর এড়াতে বাইক বা গাড়ি নয়, বাসে করে শহরে ঢুকবে বহিরাগতরা।  কীভাবে ব্যবহার করা হবে বাস? বিরোধীদের দাবি,

 

ভোটের দিন সকালে বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বাসের রুট বদলের পরিকল্পনা পাকা

ভোট ম্যানেজারদের প্রথম পছন্দ JNNURM-র ডিজিটাল নম্বর প্লেটের বাস

প্রভাব খাটিয়ে দখল নেওয়া হবে বেসরকারি বাসেরও

অধিকাংশ বাসের রুট প্লেট বদলে দেওয়া হবে, যাতে কেউ সন্দেহ না করতে পারে

শুধু এই চার পয়েন্ট নয়। দমদম ও বিধাননগর স্টেশন থেকেও বহিরাগতদের বাসে করে সল্টলেক ঢোকানোর প্ল্যান ফাইনাল। বাস থেকে  নেমে পায়ে হেঁটেই তারা পৌছে যাবে অ্যাকশন স্পটে। তারপর ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী অপারেশন। ফেরার পথেও ভরসা সেই বাস। আর পাঁচজন যাত্রীর সঙ্গে মিশে পুলিস ও কমিশনের নজর এড়িয়ে কাজ হাসিলের নয়া টেকনিক ফাইনাল।

তবে এলাকায় দাপট বজায় রাখতে বাইক বাহিনীও তৈরি। অভিযোগ, সল্টলেক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শাসকদলের বাইক বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে  অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হয় কিনা, তা অনেকটাই নির্বাচন কমিশনের পরিচালনার ওপর নির্ভর করছে।

 

 

.