রাতের কাছে

Updated By: Apr 14, 2017, 07:12 PM IST
রাতের কাছে

নন্দিনী সেনগুপ্ত

‘বাবা দেখেছিল অন্বেষকে? মানে... খেয়াল করেছিল?’... মাঝরাতের অন্ধকারের স্তব্ধতা ভেঙ্গে সোহিনী প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয় কন্যা ঐশীর দিকে।

ঐশী ক্লান্ত গলায় বলে, ‘জানিনা। পরে আবার যখন আমরা গেলাম সন্ধেবেলা, তখনই ভেন্‌টিলেশানে... একটা ঘোরে ছিল......। কেন?’

-‘না, একটু হয়ত নিশ্চিন্ত হত। তোর ব্যাপারে সারাক্ষণ একটা চিন্তা...’

-‘কিসের চিন্তা? উফফফ মা-আ-আ! অন্বেষ আমার বন্ধু, ব্যস। আর কিচ্ছু এই মুহূর্তে ভেবোনা।’

-‘না-আ-আ!’ বিরক্তস্বর সোহিনীর, ‘আমি ভাবছিনা। কিন্তু তুই একটু ভাব। ছেলেটা সারাক্ষণ আমাদের সঙ্গে দৌড়চ্ছে। হাসপাতাল, ডাক্তারের চেম্বার, প্যাথলজি-ল্যাব, কোথায় নয়? নিছক বন্ধুত্ব? হয়ত তোকে... তোর যা মেজাজ, আর তুই ওর সঙ্গে যা ঝগড়া করিস, হয়ত তোকে কিছু বলবার সাহসটাই পায়নি এদ্দিন।’

-‘উফফ মা, এখন বাবার এই অবস্থা! আচ্ছা... তোমার এই উদ্ভট ভাবনাগুলো আসে কোত্থেকে?’

-‘নিজে যেদিন মা হবি, বুঝবি। যাকে এসব ভাবনাগুলো বলি, সে তো এখন...’

-‘ভালো হয়ে যাবে বাবা। দেখো, ঠিক।’ ঐশী জড়িয়ে ধরে মাকে।

-‘আমি কচি খুকি নই। ডাক্তার তো সবই আমার সামনে বলল। চান্স কম।’ ...ফুঁপিয়ে ওঠে সোহিনী... ‘হয়ত আমি হারিয়ে ফেলছি। আমার সবচেয়ে মুল্যবান জিনিস, সম্পর্ক... হারিয়ে ফেলছি। সেজন্যই বলছি, হারিয়ে ফেলিসনা। মুল্যবান সম্পর্ক সহজে পায়না মানুষ! চিনতে শেখ। ছেলেটা সারাক্ষণ পাশে থাকছে বিপদের দিনে। এরপরও যদি না বুঝিস... ‘

মা-মেয়ে দুজনে দুজনকে আঁকড়ে থাকে। রাত ফিকে হয়ে আসে সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার খবর বুকে চেপে। 

.