বান্ধবীর মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন ‘সিঙ্গল ফাদার’ বাজপেয়ী

২০১৪ সালে পরলোক গমন করেছেন রাজকুমারী কৌল। আর গতকাল (১৬ অগাস্ট, ২০১৮) চলে গেলেন বাজপেয়ীজি। দুই অভিভাবক-কে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত ভট্টাচার্য পরিবার।

Updated By: Aug 17, 2018, 03:29 PM IST
বান্ধবীর মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন ‘সিঙ্গল ফাদার’ বাজপেয়ী

নিজস্ব প্রতিবেদন: কে জানত, ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতার উদযাপন শেষ হতে না হতেই গগনচুম্বী তেরঙ্গাকে অর্ধনমিত করে রাখতে হবে? সেটাও সাত দিনের জন্য! ১৬ অগাস্ট বিকেল ৫.০৫ মিনিটের আগে পর্যন্তও তো জানা ছিল না, ভারত তাঁর ‘আনমোল রত্ন’-কে হারাতে চলেছে। বিগত সাত দিন ধরে যে গুঞ্জনটা দেশবাসীকে প্রতিমুহূর্তে আশঙ্কিত করছিল, সেই আশঙ্কা সত্যি করেই বৃহস্পতিবার চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী (৯৩)। 
রেখে গেলেন কন্যা নমিতা ভট্টাচার্য, জামাই রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং নাতনি নিহারিকাকে। 

লুকিয়ে বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন জ্যোতি বসু!

উল্লেখ্য, অটল বিহারী বাজপেয়ী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ‘সন্ন্যাস’ ধর্ম পালন করেছেন। বিয়ে করেননি। তাঁর বিয়ে না করার কারণ হিসেবে এক সাক্ষাত্কারে বাজপেয়ীজি রসিকতা করে বলেছিলেন, তিনি না কি বিয়ে করার সময়ই পাননি। তবে বিয়ে না করলেও পিতার ধর্ম পালন থেকে তিনি কোনও দিনই পিছ পা হননি তিনি। বান্ধবী রাজকুমারী কউলের মেয়ে নমিতাই ছিলেন তাঁর যখের ধন। 

শোনা যায়, এই রাজকুমারী কউল ছিলেন বাজপেয়ীজির ছাত্র জীবনের বান্ধবী। মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র ভিক্টোরিয়া কলেজে (বর্তমানে লক্ষ্মীবাই কলেজ) পড়াকালীনই রাজকুমারী দেবীর সঙ্গে অটলজির প্রথম আলাপ। তখন থেকেই তাঁরা বন্ধু। তৈরি হয় পারিবারিক যোগাযোগও। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁদের সেই সম্পর্কও ছিল অটল। 

রাজকুমারী দেবীর স্বামী নারায়ণ কউলের মৃত্যুর পর অটলজিই কার্যত হয়ে ওঠেন তাঁদের পরিবারের অভিভাবক। সেই সময় থেকেই রাজকুমারী দেবীর দুই মেয়ে নমিতা এবং নন্দিতাকে পিতৃস্নেহে বড় করেন অটলজি। একটা সময় পর নন্দিতা ডাক্তারি পড়াশোনা করে দেশের বাইরে চলে যান। অন্যদিকে বাজপেয়ীজির সঙ্গেই থাকতে শুরু করেন রাজকুমারী দেবী, নমিতা এবং জামাই রঞ্জন। অটলজির জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ৬/এ কৃষ্ণ মেনন মার্গের বাসিন্দা তাঁরাও। শেষ জীবনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সেবায় কোনও ত্রুটি রাখেননি মেয়ে নমিতা ও জামাই রঞ্জন।

‘অটলজি সক্রিয় থাকলে, আডবাণী, যোশীদের এভাবে একঘরে করা যেত না’

প্রসঙ্গত, অটলজি তাঁর শাসনকালের একটা বড় সময় এই রঞ্জন ভট্টাচার্যকেই তাঁর সহকারী হিসেবে রেখেছিলেন। তিনি কাজ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ অফিসার হিসেবেও। নির্বাচনে (১৯৯৬) অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রচারের দায়িত্বও ছিল এই বাঙালি বাবুর কাঁধেই। 

২০১৪ সালে পরলোক গমন করেছেন রাজকুমারী কউল। আর গতকাল (১৬ অগাস্ট, ২০১৮) চলে গেলেন বাজপেয়ীজি। দুই অভিভাবক-কে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত ভট্টাচার্য পরিবার। দাদুর চলে যাওয়ার দুঃখে বাকরুদ্ধ আকমাত্র নাতনি নিহারিকাও। 

 

.