রাজ্যসভায় সংশোধিত তিন তালাক বিল পেশের সম্ভবনা
তিন তালাক বিলের প্রাথমিক খসড়ায় জামিনের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু, সংশোধিত খসড়ায় সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজ্যসভায় পেশ হতে চলেছে সংশোধিত তিন তালাক বিল। তালাক-ই-বিদ্দত বা তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, কেন্দ্রকে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের নির্দেশও দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের সেই নির্দেশ অনুযায়ী তিন তালাক-কে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে খসড়া বিল তৈরি করেছে কেন্দ্র। শুক্রবার সংসদের উচ্চ কক্ষে পেশ হতে চলেছে এই বিল। এর আগে এ সংক্রান্ত খসড়া বিল লোকসভায় প্রথম প্রচেষ্টাতেই পাশ হয়ে যায়। কিন্তু, রাজ্যসভায় বিলটিকে নিয়ে হোঁচট খেতে হয় 'সংখ্যা লঘু' এনডিএ-কে। মোদী সরকারের এই বিলের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। এরপর বিলটি সংশোধন করা হয়।
তিন তালাক বিলে মূলত তিনটি সংশোধন করা হয়েছে। এবার জেনে নিন, কী কী সংশোধন করা হল এই বিলে-
প্রথমত, তিন তালাক বিলের প্রাথমিক খসড়ায় জামিনের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু, সংশোধিত খসড়ায় সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক খসড়ায় তিন তালাকের অভিযোগ দায়ের করার অধিকারী ছিলেন প্রতিবেশী-সহ যে কেউ। কিন্তু, সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, কেবল 'তালাক প্রাপ্ত' মহিলা বা তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাই তিন তালাকের অভিযোগ জানাতে পারবেন। তালাক প্রাপ্ত মহিলা বা তাঁর রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় অথবা বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই শুধুমাত্র এফআইআর দায়ের করতে পারবে পুলিস।
তৃতীয়ত, তালাক প্রাপ্ত মহিলা যদি স্বামীর সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিতে চান, সেই সুযোগও রাখা হয়েছে এই বিলে। ফলে, সেক্ষেত্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মধ্যস্ততা করার সুযোগ থাকছে।
কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দেলের বাধাতেই মূলত রাজ্যসভায় হোঁচট খেতে হয়েছিল এই বিলকে। কিন্তু, সরকার তো বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংশোধন করেছে, তাহলে কি কংগ্রেস এই বিলকে সমর্থন করবে? শুক্রাবার সকালে ইউপিএ চেয়ার পার্সন সনিয়া গান্ধীকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। আমাদের দলীয় অবস্থান খুবই স্পষ্ট"। তবে সনিয়া পাশ কাটানোর চেষ্টা করলেও কংগ্রেস সাংসদ হুসেন দলওয়াই -এর মন্তব্য নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, "সব ধর্মেই মহিলাদের সঙ্গে অনৈতিক ব্যবহার করা হয়। শুধু ইসলাম নয়, হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ ধর্মেও পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা চলে। এমনকী, স্বয় রামচন্দ্র সীতার প্রতি সন্দেহের বশবর্তী হয়ে তাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন। তাই আমাদের সামগ্রিকভাবে বদলালো"।
এদিকে, শুক্রবার সরকারের প্রত্যাশা মতো এই বিল রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেলে এরপর তা লোকসভায় ফের পাশ করাতে হবে। আরও পড়ুন- কংগ্রেস প্রার্থী হারার পরও বিরোধী ঐক্য নিয়ে আশাবাদী সনিয়া