বর্ধমান-বিস্ফোরণের তদন্ত সিআইডি না এনআইএ-র হাতে থাকবে! চাপান-উতোর শাসক-বিরোধীর

সিআইডি নাকি এনআইএ? বর্ধমান-কাণ্ডের তদন্ত কোন সংস্থার হাতে থাকা উচিত তা নিয়ে চলছে শাসক-বিরোধী চাপান-উতোর। বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।

Updated By: Oct 7, 2014, 08:53 PM IST
বর্ধমান-বিস্ফোরণের তদন্ত সিআইডি না এনআইএ-র হাতে থাকবে! চাপান-উতোর শাসক-বিরোধীর

ওয়েব ডেস্ক: সিআইডি নাকি এনআইএ? বর্ধমান-কাণ্ডের তদন্ত কোন সংস্থার হাতে থাকা উচিত তা নিয়ে চলছে শাসক-বিরোধী চাপান-উতোর। বর্ধমান বিস্ফোরণে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
ষড়যন্ত্রের জাল দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে থাকায়  এনআইএ-কেই উপযুক্ত তদন্তকারী সংস্থা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  বর্ধমান-বিস্ফোরণের তদন্তে সিআইডি-র অধীনে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। জাতীয় তদন্ত সংস্থা, এনআইএ-র তদন্তে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী।

বর্ধমান-কাণ্ডে বাংলাদেশি জঙ্গিদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। বিরোধীরা বলছেন, খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণকে শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের দৃষ্টি দিয়ে দেখলে চলবে না। জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি এর সঙ্গে জড়িত থাকায় দরকার এনআইএ-র তদন্ত।

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সন্ত্রাসবাদ দমনে ২০০৮-এর একত্রিশে ডিসেম্বর তৈরি হয় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজম সেন্টার গঠনের প্রাথমিক ধাপ হিসাবে  তৈরি এনআইএ জাতীয় স্বার্থে দেশের যে কোনও প্রান্তে গিয়ে তদন্ত করতে পারে। সিবিআই-এর মতোই ইন্টারপোল বা অন্য দেশের তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ক্ষমতা রয়েছে এনআইএ-র।

সাধারণভাবে, রাজ্য সরকার চাইলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট ঘটনার তদন্ত শুরু করে এনআইএ। তবে, কেন্দ্র যদি মনে করে কোনও ঘটনায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে রাজ্যকে অগ্রাহ্য করে এনআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিতে পারে। এশিয়ার কোনও বন্ধু দেশের নাম উঠে এলে আইন অনুযায়ী নিজে থেকেই তদন্ত শুরু করতে পারে এনআইএ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ধমান-কাণ্ডের তদন্তে এনআইএ-ই উপযুক্ত তদন্তকারী সংস্থা। কারণ, এ ক্ষেত্রে সিআইডি-র যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এনআইএ-র তা নেই। বিদেশি ফোন কলের বিস্তারিত বিবরণ যোগাড় করার পরিকাঠামো রয়েছে এনআইএ-র। কিন্তু, বিভিন্ন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাহায্য ছাড়া সিআইডি-র পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। এনআইএ-র হাতে ফোনে আড়ি পাতার পরিকাঠামো থাকলেও আইবি-র সাহায্য ছাড়া সিআইডি-র পক্ষে এই কাজে এগোনো সম্ভব নয়।

এনআইএ-র তদন্তে সাহায্যের জন্য যে কোনও রাজ্যের পুলিসের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিআইডি-র ক্ষেত্রে তা নেই। বহু মামলার চাপ এবং তদন্তকারী অফিসারের সংখ্যা কম থাকার সমস্যা রয়েছে সিআইডি-র।
তবে, নিজস্ব লোকবল কম থাকায় যে কোনও ঘটনার তদন্তে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই এনআইএ-কে এগোতে হয়। বর্ধমান-কাণ্ডের খোঁজখবর করতে গিয়ে এনআইএ অসহযোগিতার অভিযোগ করলেও রাজ্য সরকার অবশ্য তা মানতে নারাজ।

বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাস দমনে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতেই এনআইএ তদন্তে রাজি হচ্ছে না রাজ্য সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনসিটিসি গঠনে আপত্তি জানানোর মতোই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দোহাই দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ত্বের সঙ্গে সমঝোতা করা উচিত নয়। তবে, রাজ্যের আপত্তি অগ্রাহ্য করে এখনও পর্যন্ত এনআইএ-কে কোনও ঘটনার তদন্তভার দেয়নি নর্থ ব্লক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, বর্ধমান-কাণ্ডেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

 

.