অসহিষ্ণু সমাজকে জবাব দিয়ে ট্রান্সজেন্ডার পুত্রবধূকে কাছে টানার দৃষ্টান্ত মধ্যপ্রদেশে

কোন কোন গুণ থাকলে ভারতের আদর্শ বৌমা হওয়া যায়? বিবাহ বন্ধনীর বিজ্ঞাপনে চোখ বোলালেই মিলে যাবে উত্তর। ফর্সা, সুন্দরী, গৃহকর্মে নিপুণা, ভদ্র, নম্র, ঘরোয়া। তবে বৌমা যদি হয় একটু 'ইয়ে', মানে যাকে বলে একটু 'ছেলে ছেলে'? বা ঠিক যেন মেয়েই নয়, তবে? শুনেই জিভ কাটবেন উপযুক্ত পাত্রের বাবা, মায়েরা। "মাগো! ওদের তো দেখলেই গা, পিত্তি জ্বলে যায়, সাধ করে বৌমা করতে যাবো করতে দুঃখে? ওরা আবার মেয়ে নাকি??" এমনই উত্তর যেখানে প্রত্যাশিত সেখানে একেবারে বিপরীত পথে হাঁটলেন মধ্য প্রদেশের এক পরিবার। ভারতের প্রথম পরিবার হিসেবে কাছে টেনে নিলেন ট্রান্সজেন্ডার বৌমাকে।

Updated By: Mar 12, 2015, 05:13 PM IST
অসহিষ্ণু সমাজকে জবাব দিয়ে ট্রান্সজেন্ডার পুত্রবধূকে কাছে টানার দৃষ্টান্ত মধ্যপ্রদেশে

ওয়েব ডেস্ক: কোন কোন গুণ থাকলে ভারতের আদর্শ বৌমা হওয়া যায়? বিবাহ বন্ধনীর বিজ্ঞাপনে চোখ বোলালেই মিলে যাবে উত্তর। ফর্সা, সুন্দরী, গৃহকর্মে নিপুণা, ভদ্র, নম্র, ঘরোয়া। তবে বৌমা যদি হয় একটু 'ইয়ে', মানে যাকে বলে একটু 'ছেলে ছেলে'? বা ঠিক যেন মেয়েই নয়, তবে? শুনেই জিভ কাটবেন উপযুক্ত পাত্রের বাবা, মায়েরা। "মাগো! ওদের তো দেখলেই গা, পিত্তি জ্বলে যায়, সাধ করে বৌমা করতে যাবো করতে দুঃখে? ওরা আবার মেয়ে নাকি??" এমনই উত্তর যেখানে প্রত্যাশিত সেখানে একেবারে বিপরীত পথে হাঁটলেন মধ্য প্রদেশের এক পরিবার। ভারতের প্রথম পরিবার হিসেবে কাছে টেনে নিলেন ট্রান্সজেন্ডার বৌমাকে।

বাড়ির সমকামী সাদাবের বিয়ের জন্য পাত্রী ঠিক করেছিল হোসেন পরিবার। ২০০৭ সালের জুন মাসে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু, তার আগেই নিজেদের ভুল বুঝতে পারে পরিবার। নিজেরাই সরে আসেন বিয়ে থেকে। অন্যদিকে, ৩০ বছরের ট্রান্সজেন্ডার সঞ্জনার সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল বছর উনত্রিশের সাদাবের। হোসেন পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হতে চলেছে দুজনের। একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে সঞ্জনা বলেন, সাদাবের পরিবার আমাকে ওদের বাড়িতে ডেকে পাঠান। বলেন, ওরা আমাকে পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন। আমাদের দুই পরিবার মিলে এখন বিয়ের প্রস্তুতি করেছে। সাদাব বলেন, আমার পরিবার সঞ্জনাকে মেনে নেওয়ার ১৫ দিন পর ওর ভাই অমিত, যে ওকে আগে ত্যাজ্য করেছিল সেও এগিয়ে এসে ভুল স্বীকার করে নেয়।

একটি কমিউনিটি বেসড অরগানাইজেশনে কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করেন সঞ্জনা। সাদাব নিজের পরিবহন সংস্থা চালান। দুই পরিবারই ভোপালের বাসিন্দা। সঞ্জনার বাড়ি জাহাঙ্গিরবাদে, সাদাবের বাগ ফরহত আফজা। সাদাবের বোন নাজমা ও ভগ্নিপতি সেলিমের চেষ্টাতেই আজ দুই পরিবারে স্বীকৃত সাদাব ও সঞ্জনা। নাজমা বলেন, ওদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা, আমাদের সেটা সম্মান করা উচিত্‍। সমাজ মেনে নেয় না বলে আমরা নিজেদের সন্তানদের কেন দূরে সরিয়ে রাখবো?

সঞ্জনা বলেন, "ছোটবেলা থেকেই পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের থেকে অপমান সহ্য করেছি আমরা। কিশোর বয়সে আমি হিজড়েদের সঙ্গে নেচেছি, বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। কলেজে যাওয়া দুঃস্বপ্ন ছিল, অন্ধকার হওয়ার পরই শুধু পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারতাম। মনে হত জীবন যেন থমকে গিয়েছে।"

 

.