জোড়া সংকটে অসম, চিকিতসকদের দাবি বন্যার জন্যই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

অসমে ৩১টি জেলা বন্যার জেরে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু এলাকায় বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে  তৈরি ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা ।

Edited By: অধীর রায় | Updated By: Jul 21, 2020, 10:23 PM IST
জোড়া সংকটে অসম, চিকিতসকদের দাবি বন্যার জন্যই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ
ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভয়াবহ বন্যা সঙ্গে করোনা । জোড়া ফলায় বিদ্ধ অসম । বন্যা কবলিত অসমে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা । রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১০৯৩ জন  করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে । করোনায় অসমে  এখনও পর্যন্ত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে অসমে করোনা অ্যাক্টিভ কেস ৭ হাজারের বেশি । শুধুমাত্র গুয়াহাটিতেই  আরও ৪৪৮ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন । আর এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ভয়াবহ বন্যার জন্য । বন্যা গ্রাস করে নিয়েছে গোটা অসমকে । তার উপর করোনার সংক্রমণ দিন দিন যেভাবে  ছড়িয়ে  পড়ছে তাতে রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছে সর্বানন্দ সোনোয়াল প্রশাসন ।

অসমে ৩১টি জেলা বন্যার জেরে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু এলাকায় বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে  তৈরি ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা । বিশেষজ্ঞদের দাবি ,  এই ত্রাণ শিবিরগুলিতে থেকেও নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা  যাচ্ছে ।যদিও রাজ্য প্রশাসনের তরফে ত্রাণ শিবিরগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ত্রাণ শিবিরগুলিতে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা থেকে শুরু করে সংক্রমণ রুখতে অন্য সাবধানতাগুলি অবলম্বন করা কার্যত দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। তা থেকেই নতুন করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিতসকরা । রাজ্যজুড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধের নূন্যতম নিয়মবিধি মানা কোনভাবেই সম্ভব নয় । 

অসমের বন্যার জেরে ১,০৯,৬০০ হেক্টরেরও বেশি জমির ফসল জলে ভেসে গিয়েছে। রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে খাদ্য সংকট । করোনা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রোটিন খাদ্যের প্রয়োজন । যেখানে খাদ্য সংকট সেখানে আলাদা করে প্রোটিন খাদ্য চিহ্নিত করা  বাতুলতা ছাড়া আর কিছুই নয় । আর এটাই কপালে ভাঁজ ফেলেছে সর্বানন্দ সোনওয়াল সরকারের । সোমবার অসম স্টেট ডিজাজটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বন্যায় জলের তলায় এখন  ২,২৫৪টি গ্রাম । ৩১ জেলার পাশাপাশি অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থা কাজিরাঙার।  জলের তলায় কাজিরাঙা অভয়ারণ্য । প্রাণ বাঁচাতে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বাঘ, গণ্ডার, হাতির দল । বন্যার জেরে অসমে মৃত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন ,  “ অসমের বন্যায় প্রায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোটা অসমে যখন করোনা ভাইরাসের  সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে উঠছে, তখন বন্যা পরিস্থিতিও আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। রাজ্যের কাছে দুটোই কঠিন চ্যালেঞ্জের।  রাজ্যবাসীকে সবরকম সুবিধা ও সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে  কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকারও।“

.