RBI: আরবিআই ভল্ট থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও ৮৮ হাজার কোটি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট!

ট্যাঁকশাল থেকে নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার ৮,৮১০.৬৫ মিলিয়ন নোট ছাড়া হয়েছে। আর ওদিকে আরবিআই মাত্র ৭,২৬০ মিলিয়ন পেয়েছে। 

Updated By: Jun 17, 2023, 01:42 PM IST
RBI: আরবিআই ভল্ট থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও ৮৮ হাজার কোটি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট!

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো : রহস্যজনকভাবে উধাও ৮৮ হাজার কোটিরও বেশি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট। ভারতীয় অর্থনীতির জন্য যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। যে ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে আরবিআই-এর ভল্টে নোটের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। অ্যাক্টিভিস্ট মনোরঞ্জন রায়ের তথ্যের অধিকার আইনের (আরটিআই) অধীনে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ২০১৫-এর এপ্রিল থেকে ২০১৬-র ডিসেম্বর পর্যন্ত নাসিকের ছাপাখানায় নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার নোট ৩৭৫.৪৫০ মিলিয়ন নোট ছাপা হয়েছিল। কিন্তু আরবিআই-এর রেকর্ড অনুযায়ী, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ছাপা নোট মাত্র ৩৪৫.০০০ মিলিয়ন এসে পৌঁছেছে। 

এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ভল্টে জমা করা অতিরিক্ত ৩৩৯.৯৫ মিলিয়ন নোট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল। যা কিনা সরকারি ছাপাখানায় মোট ছাপা নোটের পরিমাণের থেকে বেশি ছিল। এবার এখন এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি। যেখানে ট্যাঁকশাল থেকে নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার ৮,৮১০.৬৫ মিলিয়ন নোট ছাড়া হয়েছে। আর ওদিকে আরবিআই মাত্র ৭,২৬০ মিলিয়ন পেয়েছে। হিসেব থেকে উধাও বা হারিয়ে যাওয়া এই বিপুল পরিমাণ নোটের মূল্য ৮৮,০৩২.৫ কোটি টাকা।

কেউ-ই জানেন না নতুন নকশায় ছাপা এই ১,৭৬০.৬৫ মিলিয়ন ৫০০ টাকার নোট কোথায় গেল! এরমধ্যে ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ২০১৬-র মার্চের মধ্যে নাসিকের ট্যাঁকশালে ছাপা ২১০ মিলিয়ন নোটও রয়েছে। যদিও আরবিআই-এর ভল্ট থেকে এরকম রহস্যজনকভাবে নোট উধাওয়ের ঘটনায় মুখ খুলতে রাজি হননি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র। আরটিআই-এর ফলে সামনে আসে সত্যি! আরটিআই-এর মাধ্যমে আরও জানা গিয়েছে যে, ভল্টে যে সময়কার নোটের হিসেব মিলছে না, সেইসময় আরবিআই-এর গভর্নর ছিলেন রঘুরাম রাজন।

প্রসঙ্গত, তিনটি সরকারি ট্যাঁকশালে ছাপা হয় ভারতীয় নোট। বেঙ্গালুরুর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোট মুদ্রান (পি) লিমিটেড,  নাসিকের কারেন্সি নোট প্রেস এবং দেওয়াসের ব্যাঙ্ক নোট প্রেসে ছাপা হয় সব নোট। ছাপার পর সব নোট পাঠানো হয় আরবিআই ভল্টে। সেখান থেকে ভারতীয় অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়ে নোটগুলি।

এখন নাসিকের কারেন্সি নোট প্রেসের রিপোর্টে দেখানো হয়েছে যে নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার নোট সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু জনসাধারণের জন্য কারেন্সি ম্যানেজমেন্টের উপর আরবিআই-এর পেশ করা বার্ষিক রিপোর্টে নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট পাওয়ার কোনও উল্লেখ নেই। এরপর নাসিকের কারেন্সির নোট প্রেস তথ্য দিয়ে আরও জানায় যে ২০১৬-১৭ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ১,৬৬২.০০০ মিলিয়ন নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার নোট সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই হিসেব মিলছে না! হিসেবে ব্যাপক গরমিল!

ওদিকে ২০১৬-১৭ সালে বেঙ্গালুরুর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোট মুদ্রান (পি) লিমিটেড আরবিআইকে ৫,১৯৫.৬৫ মিলিয়ন ৫০০ টাকার নোট সরবরাহ করেছিল। আর দেওয়াসের ব্যাঙ্ক নোট প্রেসও ২০১৬-১৭ সালে আরবিআইকে সরবরাহ করে ১৯৫৩.০০০ মিলিয়ন নোট। কিন্তু আরবিআই-এর রিপোর্টে তিনটি ট্যাঁকশাল থেকে নতুন ডিজাইনের মাত্র ৭,২৬০ মিলিয়ন ৫০০ টাকার নোট পাওয়ার উল্লেখ রয়েছে। ফলে মিলছে না হিসেব। যেখানে তিন ট্যাঁকশালে নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট মোট ছাপা হয়েছে ৮,৮১০.৬৫ মিলিয়ন, সেখানে আরবিআই পেয়েছে শুধুমাত্র ৭২৬০.০০ মিলিয়ন নোট। বড় মাত্রায় অমিল! 

অ্যাক্টিভিস্ট মনোরঞ্জন রায় বলেন, এভাবে নোট উধাও হয়ে যাওয়া কোনও ছেলেখেলার বিষয় নয়। ছাপাখানায় ছাপা মোট নোট ও আরবিআই ভল্টে পাওয়া মোট নোটের পরিমাণের মধ্যে এই বিশাল অঙ্কের গরমিলের ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে যে বড় মাত্রায় ক্ষতি হয়েছে, তার প্রতি উদাসীন শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এঘটনা ভারতীয় অর্থনীতির সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তার স্থিতিশীলতাকে উদ্বেগের মুখে ফেলে দিয়েছে। এই ঘটনায় তিনি সেন্ট্রাল ইকোনমিক ইনটেলিজেন্স ব্যুরো ও ইডিকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন, ৩ সরকারি ট্যাঁকশালে ছাপা নোটের হিসেবে গরমিল তদন্ত করার জন্য। যদিও আরবিআই-এর এক শীর্ষ আধিকারিক এই গরমিলের পিছনে নোট ছাপা ও সরবরাহের বিপুল খরচকে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটাই আশ্চর্যের যে আরবিআই ভল্টে নোট পৌঁছাতে এত সময় লাগে!

আরও পড়ুন, Kerala: ৫০ লাখি গাড়ি কিনে দল থেকে অপসারিত সিপিএম নেতা!

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)  

.