কারও প্রতি বৈষম্য হবে না, তবু বিভেদ তৈরির চেষ্টা হচ্ছ, NRC নিয়ে রাজ্যসভায় বললেন রাজনাথ
প্রথম তালিকায় তাঁদের নাম ছিল যাঁদের নাম ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে ভোটার তালিকায় ছিল। এছাড়া ১৯৫১ সালের এনআরসিতে যাঁদের নাম ছিল তাঁরাও ছিলেন সেই তালিকায়। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ১২টি নথিকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর যে কোনও একটি পেশ করলেই তার নাগরিকত্ব বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অসমে NRC বিতর্ক নিয়ে রাজ্যসভায় বিবৃতি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সংসদে রাজনাথের আশ্বাস, NRC-র নামে বৈষম্য হবে না কারও ওপর। সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই নিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে কিছু মানুষ। এদিন তাদের নিরস্ত হতে অনুরোধ করেন রাজনাথ সিং।
এদিনের বিবৃতির শুরুতেই রাজনাথ সিং মনে করিয়ে দেন, এটি এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা নয়। শুধুমাত্র খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সঙ্গে তিনি বলেন, 'এনআরসিকে আপডেট করার জন্য ১৯৮৫ সালের ১৫ অগাস্ট অসম চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল।' এছাড়া অসমে ১৯৫১ সালে নাগরিক পঞ্জিকরণ হয়েছিল। অসমে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ২৪ মার্চ ১৯৭১ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। অসম সমঝোতা কার্যকর করতে ২০০৫ সালে এনআরসি আপডেট করার সিদ্ধান্ত নেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সেই মতো ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর এনআরসি আপডেটের জন্য নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। গোটা কাজটাই হয়েছে অত্যন্ত স্বচ্ছ ভাবে।
Whole procedure of #NRCAssam was undertaken under supervision of Supreme Court. I would like to repeat that its a draft and not final, everyone will get chance to appeal. Its a totally fair process. Unwarranted accusations are unfortunate: HM Rajnath Singh in Rajya Sabha
— ANI (@ANI) August 3, 2018
এনআরসি আপডেট করার জন্য গোটা অসমে ২,৫০০ কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর এনআরসি-র প্রাথমিক খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হয় ৩০ জুলাই ২০১৮-য়।
রাজনাথ বলেন, প্রথম তালিকায় তাঁদের নাম ছিল যাঁদের নাম ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে ভোটার তালিকায় ছিল। এছাড়া ১৯৫১ সালের এনআরসিতে যাঁদের নাম ছিল তাঁরাও ছিলেন সেই তালিকায়। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ১২টি নথিকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর যে কোনও একটি পেশ করলেই তার নাগরিকত্ব বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে।
"বিজেপি দাঙ্গাবাজ দল", কলকাতায় ফিরে তোপ ববি হাকিমের
রাজনাথের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে এনআরসিতে মানুষের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় নজরদারি চালিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গোটা প্রক্রিয়া স্বচ্ছ। এই নিয়ে কারও সঙ্গে বৈষম্য হয়নি, হবেও না। এই ধরণের অভিযোগ করাও অনুচিত।
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে প্রত্যেকে ফের আবেদনের সুযোগ পাবেন। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরও প্রত্যেকে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের কাছে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
এর পরই বিরোধীদের সমালোচনায় সরব হন রাজনাথ তিনি বলেন, এব্যাপারে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এছাড়া কিছু মানুষ দুরভিষন্ধি নিয়ে একে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। যাতে বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা যায়। এছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন কিছু মানুষ।
I am saying this again, that no coercive action will be taken against anyone in any situation. Attempts to create an atmosphere of fear are condemnable:HM Rajnath Singh in Rajya Sabha pic.twitter.com/hVEUwBL8U9
— ANI (@ANI) August 3, 2018
দুনিয়ার সমস্ত দেশেরই সেই দেশে বসবাসকারী বিদেশির সংখ্যা জানার অধিকার রয়েছে। এটা তাদের দায়িত্ব। এই বিষয়টি ভারতের জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে যুক্ত। তাই আমি প্রত্যেকের সাহায্য চাইব। অসমে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সুদৃঢ় রাখতে সেরাজ্যের চাহিদা মতো বাহিনীর যোগান দিয়েছে কেন্দ্র।
সঙ্গে রাজনাথ স্পষ্ট করেছেন, ৪০ লক্ষ পরিবার নয়, ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে এনআরসি থেকে। ফলে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।