বাঁচাতে হবে অসুস্থ বাবাকে! ‘পুরুষ ছদ্মবেশে’ নাপিত হল দুই মেয়ে

সমাজের চোখে ‘ধুলো’ দিতে পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা। চুল কেটে ফেলে। বদলে ফেলে নামও। জ্যোতি হয়ে যায় দীপক। আর নেহা নাম বদলে হয় রাজু

Updated By: Jan 21, 2019, 07:05 PM IST
বাঁচাতে হবে অসুস্থ বাবাকে! ‘পুরুষ ছদ্মবেশে’ নাপিত হল দুই মেয়ে
ছবি- ফেসবুক

নিজস্ব প্রতিবেদন: ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। আদতেই তাই। পেট চালাতে কত কিছুই না করতে হয় মানুষকে। বেঁচে থাকতে কত কিছুই না করছে মানুষ। উত্তরপ্রদেশের এই দুই তরুণীর কথাই ভাবুন। গত চার বছর ধরে ‘পুরুষের ছদ্মবেশে’ বাবার সেলুন চালাচ্ছে, বছর আঠেরোর জ্যোতি ও ষোলো বছরের নেহা। কিন্তু তাদের জীবনধারণের লড়াইয়ে পুরুষের ছদ্মবেশ কেন?

আরও পড়ুন- এবার হিন্দু সাধুদের পেনশন দেবে উত্তর প্রদেশের যোগী সরকার

প্রশ্নটা উঁকিঝুঁকি মারলেও, ওই দুই তরুণী সমাজের গালে বড়সড় থাপ্পড়ই মেরেছে বলে মনে করছে অনেকে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বাবা অসুস্থ।  দীর্ঘদিন বিছানায় শুয়ে। তার জেরে তাদের সেলুন কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় পড়াশুনাও। অভাব-অনটন যেন জাঁকিয়ে বসে জ্যোতিদের সংসারে। রোজগারের কোনও পথ না দেখতে পেয়ে দুই বোন সিদ্ধান্ত নেয় বাবার সেলুন তারাই চালাবে। মেয়ে হয়ে নাপিতের কাজ!

সমাজের চোখে ‘ধুলো’ দিতে পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা। চুল কেটে ফেলে। বদলে ফেলে নামও। জ্যোতি হয়ে যায় দীপক। আর নেহা নাম বদলে হয় রাজু। জ্যোতি বলে, “ওই সেলুনটিই ছিল আমাদের একমাত্র রোজগারের পথ। কিন্তু সেলুনে নাপিতের কাজ করতে হলে আমারা বিদ্রুপের শিকার হতাম।”

তবে, ‘ছেলে’ হয়েও তাদের লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। ঘনিষ্ঠ লোকেরা জানত তাদের আসল পরিচয়। তাই, তারা উঠতে-বসতে কটাক্ষ করত, এমনই অভিযোগ জ্যোতির। চুল-দাড়ি কাটায় তারা একেবারেই অনভিজ্ঞ ছিল। কিন্তু তাদের প্রবল ইচ্ছাশক্তিই সেলুনের ভোল পাল্টে যায়। এখন প্রতি দিন ৪০০ টাকা রোজগার করে তারা। সকালে স্কুল, দুপুরে সেলুন এভাবেই লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছে জ্যোতি-নেহা। জ্যোতি এখন স্নাতকও। তাদের এই লড়াই প্রকাশ্যে আসতেই তা সংবাদের শিরোনামে চলে আসে। চর্চা হয় দুই বোনকে নিয়ে।

আরও পড়ুন- দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা রয়েছে মমতার, জানিয়ে দিলেন কুমারস্বামী

নেহা বলে, “এখন আর কাউকে ভয় করি না। সবাই জানে আমরা মেয়ে। নিজেদের কাজেও আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।” আর তাদের বাবার কথায়, “প্রথমে কষ্ট পেয়েছিলাম মেয়েরা এই কাজ করছে জেনে। কিন্তু এখন সত্যিই তাদের কাছে ঋণী।” উল্টো স্রোতে লড়াই চালিয়ে যোগী সরকারের কাছে প্রশংসিত হয়েছে জ্যোতি-নেহা।

.