ICC T20 World Cup: ১৫ বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার পারফরম্যান্স কেমন? ছবিতে দেখুন

উদ্বোধনী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলেও পরের ১৫ বছর শুধুই খরা। ২০০৭ সালের পর থেকে বাকি সব কাপ যুদ্ধে ধোনি দলের সঙ্গেই ছিলেন। তবে অধিনায়ক থেকে মেন্টর, ধোনি ও ভারতীয় দলের সাফল্য ছিল অধরা। 

| Oct 19, 2022, 18:01 PM IST

সব্যসাচী বাগচী 

২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। জোহানেসবার্গের বাইশ গজে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মাত্র ৫ রানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়। চিরপ্রতদ্বন্দীকে মেগা ফাইনালে রোমহর্ষক ম্যাচে হারিয়ে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হাতে তুলেছিল টিম ইন্ডিয়া। সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়ের মতো সিনিয়রদের অনুপস্থিতির পরেও একঝাঁক প্রতিভাবান ও তরুণদের নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। রাতারাতি নাম হয়ে গিয়েছিল 'ক্যাপ্টেন কুল।'  

উদ্বোধনী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলেও পরের ১৫ বছর শুধুই খরা। ২০০৭ সালের পর থেকে বাকি সব কাপ যুদ্ধে ধোনি দলের সঙ্গেই ছিলেন। তবে অধিনায়ক থেকে মেন্টর, ধোনি ও ভারতীয় দলের সাফল্য ছিল অধরা। ২৩ অক্টোবর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে রোহিত শর্মার ভারত। এর দেখে নেওয়া যাক গত ১৫ বছরের কিছু উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। 

1/7

২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2007

সেবার আসর বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ধুয়ে যায়। তবে পরের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় পায় ভারত। যদিও সেই জয় এসেছিল সুপার ওভার-এ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেই প্রথমবার সুপার ওভারে ম্যাচ জিতেছিল কোনও দল। তবে তৃতীয় ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০ রানে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া। চাপে থাকা ধোনির দলের পরের ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। স্টুয়ার্ট ব্রডকে ছয় ছক্কা মেরেছিলেন যুবরাজ সিং। যুবির সেই নজির এখন কেউ ভাঙতে পারেননি। ১৮ রানে সাহেবদের হারিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয় ধোনির দল। ফর্মে থাকা ভারতের বিরুদ্ধে এঁটে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ১৫৩ রান করেও, বোলারদের সৌজন্যে ৩৭ রানে জিতে সেমি ফাইনালে চলে যায় ভারত। সেমি ফাইনালের রোমাঞ্চক ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১৫ রানে হারিয়ে ফাইনালে চলে যায় 'মেন ইন ব্লু' ব্রিগেড। সেই মেগা ফাইনালে মিসবা উল হক দুরন্ত ব্যাটিং করলেও, ধোনির স্ট্রাটেজির কাছে তাঁর পাকিস্তানকে ৫ রানে হারতে হয়। জোগিন্দর শর্মার বলে শর্ট ফাইন লেগে থাকা শ্রীসন্থের সেই ক্যাচ নিয়ে এখনও সবাই চর্চা করেন।   

2/7

২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2009

স্বভাবতই প্রথমবারের চ্যাম্পিয়ন ধোনির ভারতকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ চড়েছিল। ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশকে ২৫ রানে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এসেছিল ৮ উইকেটে জয়। তবে জোড়া ম্যাচ জিতলেও এরপর খেলা ঘুরতে শুরু করে। তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে হেরে যায় ভারত। ইংল্যান্ডের সঙ্গে লড়াই করে পারেনি তারকাখচিত টিম ইন্ডিয়া। সেই ম্যাচে ৩ রানে হেরে যান গৌতম গম্ভীর-জাহির খানরা। লিগের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১২ রানে হেরে সুপার এইট থেকেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। 

3/7

২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2010

সেবার প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছিল ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এসেছিল ১৪ রানে জয়। তবে তৃতীয় ম্যাচেই হারের মুখে পড়ে ধোনির দল। সেই ম্যাচে ৪৯ রানে জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই হারের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দল। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও ১৪ রানে হেরেছিল ভারত। ৫ রানে হারতে হয়েছিল শ্রীলঙ্কার কাছেও। হারের হ্যাটট্রিক করার জন্য সেবারও সুপার এইট থেকেই খালি হাতে ফিরেছিল টিম ইন্ডিয়া।  

4/7

২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2012

শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত সেই প্রতিযোগিতায় ফের একবার জয় দিয়ে শুরু করেছিল ভারত। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই এসেছিল ২৩ রানে জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতীয় দলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কাছে ৯০ হারে হেরে গেল ইংল্যান্ড। জোড়া জয় দিয়ে অভিযান শুরু হলেও, তৃতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৯ উইকেটে হেরে গিয়েছিল। তবে তাই বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কামব্যাক করতে বেগ পেতে হয়নি। চিরপ্রতিদ্বন্দীকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দেওয়ার পর, লিগের শেষ ম্যাচে প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে এসেছিল মাত্র ১ রানে জয়। সেবার লিগ পর্বের পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটি ম্যাচে জয় এসেছিল। তবুও নেট রানরেট কম থাকার জন্য সুপার এইট থেকেই বিদায় নেন ধোনির ভারত। 

5/7

২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2014

সুপার এইট থেকে হারের হ্যাটট্রিককে অতীত করে সেবার বাংলাদেশে দারুণ শুরু করেছিল ধোনিবাহিনী। প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দেয় টিম ইন্ডিয়া। পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও এসেছিল ৭ উইকেটে জয়। তৃতীয় ম্যাচে আয়োজক বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল ভারত। ফর্মে থাকা ভারতীয় দলের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৭৩ রানে জয়ের সঙ্গে সেমি ফাইনালে চলে গিয়েছিল 'মেন ইন ব্লু' ব্রিগেড। ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ভারতের সামনে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াসদের ৬ উইকেটে হারিয়ে মেগা ফাইনালে জায়গা করে নেয় ধোনির দল। তবে ট্রফি হাত লাগেনি। বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত দিনের খেলা বাতিল হয়ে যায়। রিজার্ভ ডে-তে মাঠে নেমে বাজিমাত করে শ্রীলঙ্কা। বলে লাসিথ মালিঙ্গা ও ব্যাটে কুমার সঙ্গাকারা কাপ জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন। ৬ উইকেটে জিতে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ হারের বদলা নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। 

6/7

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2016

সেই বছর ভারতের মাটিতে বসেছিল। সেটাই ছিল দেশের মাটিতে ধোনির শেষ বিশ্বকাপ। স্বভাবতই প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। সেবার হার দিয়ে অভিযান শুরু হয়েছিল। প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৭ রানে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া। তবে ইডেনে পা রাখতেই ঘুরে দাঁড়ায় ভারতীয় দল। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে বিরাট কোহলির অপরাজিত ৫৫ রানের উপর ভর করে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে এসেছিল জয়। পরের ম্যাচটাও একেবারে জমে যায়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত মাত্র ১ রানে জিতেছিল। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফের বিরাটের ব্যাটে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারে চলে যায় টিম ইন্ডিয়া। তবে শেষরক্ষা হয়নি। সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায়। বিরাট সেই ম্যাচেও ৪৭ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে বোলারদের ব্যর্থতার জন্য ফের একবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলতে পারেনি ভারত। 

7/7

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ICC T20 World Cup 2021

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতীয় দলের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। ২০২১ সালে প্রথম রাউন্ড অর্থাৎ গ্রুপ পর্বের বাধাই টপকাতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরে যাওয়ার পর, দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে হেরে কাপ যুদ্ধ থেকে বিদায় নেয় কোহলিবাহিনী। বাকি তিন ম্যাচে আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড এবং নামিবিয়াকে হারালেও বিরাট কোহলি ও তাঁর টিম ইন্ডিয়াকে মাথা হেঁট করে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয়।