খেতে বসে কথাটা কানে এসেছিল, ছাদনাতলায় গিয়ে নিমন্ত্রিত চেঁচিয়ে বললেন, ‘এই বিয়ে হতে পারে না’...

দৃঢ় কন্ঠে তিনি বলে উঠেছিলেন, ‘‘না, এই বিয়ে হতে পারে না...কিছুতেই না...আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছো তোমরা...।’’

Updated By: Aug 14, 2018, 12:04 PM IST
খেতে বসে কথাটা কানে এসেছিল, ছাদনাতলায় গিয়ে নিমন্ত্রিত চেঁচিয়ে বললেন, ‘এই বিয়ে হতে পারে না’...

নিজস্ব প্রতিবেদন:  সানাইয়ের সুরে কান ঝালাপালা অবস্থা। ছাদনাতলায় তখন বর-কনের শুভদৃষ্টিও সম্পন্ন। সাত পাঁকে ঘোরানোর পর সিঁদুর দানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুরোত মশাই।  পিছন থেকে বর-কনের উদ্দেশে ভেসে আসছে বন্ধুবান্ধব-পরিজনদের কৌতুক মিশ্রিত নানান উক্তি। কিন্তু তারই মধ্যে এক ব্যক্তির উচ্চস্বর। দৃঢ় কন্ঠে তিনি বলে উঠেছিলেন, ‘‘না, এই বিয়ে হতে পারে না...কিছুতেই না...আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছো তোমরা...।’’ ওই ব্যক্তি বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন। বাকি অন্যান্য নিমন্ত্রিত তো বটেই, বর-কনের খুব কাছের আত্মীয়রাও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন। এ-ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করছেন অনেকে। এরমধ্যে আরও একবার সেই কন্ঠ। কিন্তু এবার তার দিকে ধেয়ে আসলেন বেশ কয়েকজন।

আরও পড়ুন: মোবাইল রিচার্জ করতে দোকানে এসেছিলেন, দোকানি বলেছিলেন 'সরে দাঁড়ান', ঘাড় ঘোরানোর আগেই ভয়ঙ্কর ঘটনা!

বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই ব্যক্তি যে কী আসলে বলতে চেয়েছিলেন তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কনে ও বরের বাবা-মা-অভিভাবকদের। অতঃপর তাঁরাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সবার আগে। ওই ব্যক্তিকে প্রথমে টেনে নিয়ে যাওয়া হল বিয়ের আসরের বাইরে। তারপর তাঁকে কিছু বলতে দেওয়ার আগেই চলল এলোপাথাড়ি মার। ঘটনা জানাজানি হতেই পাত্র পাত্রী কে নিয়ে চম্পট পরিবার। আসলে হয়েছেটা কী, ওই ব্যক্তি নিমন্ত্রণ খেতে এসে জানতে পারেন কনে নাবালিকা! তাই নাবালিকা বিয়ের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির পূর্ব মাগুরমারি এলাকায় যা ঘটল, তা সমাজের লজ্জা!

আক্রান্ত বিকাশ ধূপগুড়ি মাগুরমারি এলাকার বাসিন্দা।  সোমবার রাতে তিনি এলাকারই বাসিন্দা কৃষ্ণ রায়ের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনেছিলেন মেয়ের বাড়ি শালবাড়িতে। বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে পাত্র-পাত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে খেতে বসেছিলেন তিনি। সেখানেই কানাঘুষো শুনে খোঁজ করে জানতে পারেন পাত্রী আসলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযোগ, তাকে রীতিমতো তুলে নিয়ে গিয়ে ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছিলেন কৃষ্ণ রায়।

আরও পড়ুন:  বাড়িতে ফিরে লুকিয়ে টিফিন খাচ্ছিল দুই বোন, লাঞ্চ বক্সের দিকে তাকাতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল মায়ের

ঘটনার কথা জানতে পেরেই খাওয়া ফেলে বিকাশ ছুটে গিয়েছিলেন ছাদনাতলায়। সেখানে তখন সিঁদুর দানের ঠিক আগের মুহূর্তে জোরে চেঁচিয়ে বিয়ে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। অভিযোগ, এরপরই পাত্র ও পাত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের তাঁর উপর চড়াও হন। ঝাঁটা, লাঠি নিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর পাত্রপাত্রীকে নিয়ে চম্পট দেন তাঁরা। ঘটনার কথা জানিয়ে ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিকাশ রায়। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।

 

.