Giant Clock Howrah Station: বয়স ৯৭! কিন্তু জবুথবু বুড়ো নয়, দুটি হাত বাড়িয়ে আজও সাবলীল...

Giant Clock Howrah Station: দেখতে গেলে শুধু হাওড়া স্টেশনের নয়, বাংলার রেল-সংস্কৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে বড় ঘড়ি। সেই ঔপনিবেশিক যুগ থেকে স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে দীর্ঘ যাত্রা তার আজও অমলিন। আর এই অস্তিত্বের শর্তেই যেন সে অবলীলায় পেয়েছে হেরিটেজের সম্মান!

Reported By: অয়ন ঘোষাল | Edited By: সৌমিত্র সেন | Updated By: May 4, 2023, 06:43 PM IST
Giant Clock Howrah Station: বয়স ৯৭! কিন্তু জবুথবু বুড়ো নয়, দুটি হাত বাড়িয়ে আজও সাবলীল...
অয়ন ঘোষাল: হাওড়ার বড় ঘড়ি এই স্টেশনের এক আইকনিক জিনিস। দেখতে গেলে শুধু হাওড়া স্টেশনের নয়, বাংলার রেল-সংস্কৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে তা। সেই ঔপনিবেশিক যুগ থেকে স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে দীর্ঘ যাত্রা তার আজও অমলিন। আর এই অস্তিত্বের শর্তেই যেন সে অবলীলায় পেয়েছে হেরিটেজের সম্মান। সম্প্রতি ৯৭ বছরে পা দিল এটি। মোটেই থুথ্থুড়ে বুড়ো নয়, বরং তারুণ্যের সমস্ত সজীবতাকেই নিজের মধ্যে নিপুণ ধরে রেখে প্রতিনিয়ত সময় জানান দিয়ে চলেছে সে। 
 
 
সেটা ১৯২৬ সাল। ঘড়িটির ঠিকানা হয় হাওড়া স্টেশন। এর দুটি মুখ-- 'ট্যুইন-ফেসড'। খুব শক্তপোক্ত কাঠের এক ফ্রেমে এটি রাখা। এই রকম 'জায়ান্ট ক্লকে'র দুটি সেট রয়েছে। একটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের বাইরে অন্যটি ভিতরে। ভিতরের ঘড়িটিই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে। হয়েছে তাঁর লোকেশনের জন্য। স্টেশনের এমন জায়গায় ঘড়িটি রাখা যে, সেটি অনায়াসে একটি ল্যান্ডমার্কে পরিণত হয়েছে। এখন এই স্মার্টফোনের যুগে হয়তো আর ঘড়িতে সময় দেখে না নতুন প্রজন্ম। কিন্তু হাওড়ার এই ঘড়ির গুরুত্ব তাদের কাছেও একইরকম।
 
 
দু-মুখো এই ঘড়ির একটি মুখ, মানে একটি ডায়াল ১ থেকে ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে মুখ করা। অন্য মুখটি দেখতে গেলে ৯ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে (কিন্তু আসলে ১৫ নয়, ওটা হবে ১২ নম্বর। তা-ও ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের একেবারে মাথায় দাঁড়ালে তবেই সেখান থেকে ঘড়িটি রেলযাত্রীদের দৃষ্টিগোচর হবে, না হলে নয়)। স্টেশনের এই ঘড়িটির ডায়ালের আয়তন ৪ ফুট, এর ঘণ্টার কাঁটাটি ১৮ ইঞ্চি লম্বা, মিনিটেরটি ২৪ ইঞ্চি। ঘড়িটি তৈরি করেছিল লন্ডনের জেন্টস কোম্পানি। ঘড়িটিকে হাওড়া স্টেশনে 'ইনস্টল' করেছিলেন রয় ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং-এর তরফে সেই সময়ের বিখ্যাত ঘড়ি-ব্যবসায়ী দেবপ্রসাদ রায়। এই ঘড়ির জুড়িটি, যেটি স্টেশনের বাইরে রাখা, সেটি একটু বড় আকারের-- ৬ ফুট। এরও দুটি ফেস-- একটি হুগলি নদীর দিকে, অন্যটি হাওড়া বাস স্ট্যান্ডের দিকে। 
 
ধরনের দিক থেকে ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল এই ঘড়িটিকে পালসার ডিভাইস দিয়ে রেলের কন্ট্রোল অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হত। পরে এর কেবলে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ওই ডিভাইসটি ঘড়িতেই বসিয়ে দেওয়া হয়।
 

এই ঘড়িটির দিকেই সাধারণত সকলে তাকিয়ে থাকে। কেননা, আজও তো ওই চত্বরে এই ঘড়িটিই এক ও অদ্বিতীয় মিটিং পয়েন্ট। কিন্তু ঘড়িটি নিজে কীসের দিকে তাকিয়ে থাকে? সে তাকিয়ে থাকে এই আপামর জনসমুদ্রের দিকে, এই চলমান সমাজ-ইতিহাস ও জীবনের ঢেউয়ের দিকে। এই ভাবেই সে তাকিয়ে রয়েছে ৯৭টি বছর, আরও বহুদিন এভাবেই হয়তো সে তাকিয়ে থাকবে। আর তার নীচে এসে মিলে যাবে এ শহরের রেলযাত্রীদের পথের জীবন।

.